বিসর্জনের বিষাদমাখা সুরেও খুশির বার্তা লুকিয়ে থাকে ঢাকি পরিবারের শিশুদের
1 min read
তন্ময় চক্রবত্তী ঃ- বিসর্জনের বিষাদমাখা সুরেও খুশির বার্তা লুকিয়ে থাকে! বিজয়ার দিনে যখন ভাসানের বাজনা বাজে, ঢাকে যখন বোল ওঠে, ‘ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ/ঠাকুর যাবে বিসর্জন’—তখন উত্তর দিনাজপুর
জেলার কালিয়াগঞ্জ , রায়গঞ্জ , ইটাহার এর কোনও
প্রত্যন্ত
গ্রামের
হতদরিদ্র
কোনও ঢাকি পরিবারের
শিশুরা
নতুন
জামাকাপড়ের
স্বপ্নসত্যির
আশায়
মশগুল
হয়ে
থাকে।
জেলার কালিয়াগঞ্জ , রায়গঞ্জ , ইটাহার এর কোনও
প্রত্যন্ত
গ্রামের
হতদরিদ্র
কোনও ঢাকি পরিবারের
শিশুরা
নতুন
জামাকাপড়ের
স্বপ্নসত্যির
আশায়
মশগুল
হয়ে
থাকে।
তারা জানে, আর এক–দু’দিনের মধ্যেই কলকাতা থেকে বাবা–কাকা–দাদারা ফিরে আসবে। সঙ্গে
আনবে
নতুন
জামাকাপড়। পুজোর চার–পাঁচদিনে কালিয়াগঞ্জ এর যে বাচ্চা মেয়েটি মলিন মুখে মণ্ডপ থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থেকেছে আর পাশের পাড়ার সমবয়সিকে দেখেছে ক্যাপবন্দুক ফাটাতে, তার মনেও এই বিজয়া খুশি বয়ে আনবে। তার
বাবা–দাদারা
যে
দুর্গাপুজোয়
শহরে
ঢাক
বাজাতে
গিয়েছেন। পুজো শেষ হলে হাতে দু’টো পয়সা আসবে।
আনবে
নতুন
জামাকাপড়। পুজোর চার–পাঁচদিনে কালিয়াগঞ্জ এর যে বাচ্চা মেয়েটি মলিন মুখে মণ্ডপ থেকে দূরে দাঁড়িয়ে থেকেছে আর পাশের পাড়ার সমবয়সিকে দেখেছে ক্যাপবন্দুক ফাটাতে, তার মনেও এই বিজয়া খুশি বয়ে আনবে। তার
বাবা–দাদারা
যে
দুর্গাপুজোয়
শহরে
ঢাক
বাজাতে
গিয়েছেন। পুজো শেষ হলে হাতে দু’টো পয়সা আসবে।
তা
দিয়েই
শিয়ালদহ
বা
শ্যামবাজারের
ফুটপাত
থেকে
সস্তার
জামাকাপড়
কেনা
হবে। ঘরে ফিরলে ঢাকিদের ঘরে হবে অকাল–উৎসব! ফি–বছর
এভাবেই
ঢাকিপাড়ায়
উৎসব
আসে। কিন্তু ঢাক ছাড়া পুজো আর নুন ছাড়া রান্না যে একই ব্যাপার! তাই ঢাকের কদর কমেনি সেভাবে। তবে
তাতেও
বদলায়নি
ঢাকিদের
অর্থনৈতিক
অবস্থা,
জীবনযাপনের
দৈন্যের
রোজনামচা। প্রতি বছর উত্তর
দিনাজপুর জেলার বহু ডাকি শিয়ালদহ
স্টেশনের
সামনে
এসে
তাঁরা
জমা
হন
তৃতীয়া–চতুর্থীর
দিন
থেকে। পুজো কমিটির অভিজ্ঞ কর্তারা যাচাই করে নেন ঢাকিদের ‘পারফরম্যান্স’।
দিয়েই
শিয়ালদহ
বা
শ্যামবাজারের
ফুটপাত
থেকে
সস্তার
জামাকাপড়
কেনা
হবে। ঘরে ফিরলে ঢাকিদের ঘরে হবে অকাল–উৎসব! ফি–বছর
এভাবেই
ঢাকিপাড়ায়
উৎসব
আসে। কিন্তু ঢাক ছাড়া পুজো আর নুন ছাড়া রান্না যে একই ব্যাপার! তাই ঢাকের কদর কমেনি সেভাবে। তবে
তাতেও
বদলায়নি
ঢাকিদের
অর্থনৈতিক
অবস্থা,
জীবনযাপনের
দৈন্যের
রোজনামচা। প্রতি বছর উত্তর
দিনাজপুর জেলার বহু ডাকি শিয়ালদহ
স্টেশনের
সামনে
এসে
তাঁরা
জমা
হন
তৃতীয়া–চতুর্থীর
দিন
থেকে। পুজো কমিটির অভিজ্ঞ কর্তারা যাচাই করে নেন ঢাকিদের ‘পারফরম্যান্স’।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
বায়না পেতে মরিয়া ঢাকিরা পুজোকর্তার আস্থা জোগাড় করতে আপ্রাণ বাজিয়ে চলেন। কর্তার
মন
গললে
শুরু
হয়
দরদাম। কোটি টাকা বাজেটের পুজোর কর্মকর্তা এক–দু’হাজার টাকার জন্য দরদাম শুরু করেন। উভয়পক্ষ
সম্মত
হলে
ঢাকিদের
চলে
যেতে
হয়
সংশ্লিষ্ট
পুজোমণ্ডপে। প্রতিমা নিরঞ্জনের পর পারিশ্রমিক নিয়ে একাদশী বা দ্বাদশীর দিনে বাড়ির পথে পা বাড়ান তাঁরা। দু’টো
টাকা
পকেটে
আর
নতুন
জামাকাপড়ের
প্যাকেট
হাতে
নিয়ে
ঘরে
ঢুকলে
খিলখিলিয়ে
হেসে
ওঠে
ঢাকির
ছোট্ট
মেয়ে। আকূল হন নববধূ। এটাই
হল
শত
শত
ঢাকির
ফি–বছরের
উৎসব–পাঁচালি। এবারও এর কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। শুক্রবার
থেকেই
শিয়ালদহ
স্টেশনের
সামনে
ভিড়
জমিয়েছেন
তাঁরা। কালিয়াগঞ্জ
এর বৈশ্য পাড়ায় থেকে
এসেছেন
শ্রীধর
বায়েন,
সন্তোষ
বাগদি। তাঁদের সঙ্গে কাঁসি বাজানোর জন্য এসেছে বছর বারোর শিশু নিতু বায়েন। শ্রীধরবাবুর
ছেলে নিতু । বাড়িতে রয়েছে তার মা এবং দু’বছরের ছোট বোন। শহর
থেকে ফেরার পথে তার জন্য নতুন জামা কিনতে হবে বলে জানাল নিতু । সে বসে থাকবে বাবা–দাদার পথ চেয়ে। রায়গঞ্জের ঢাকি
অমিয় দাস,
শ্যামল দাসের
সঙ্গে
কাঁসি
বাজাতে
শহরে
এসেছে
এক
কিশোর। অমিয় বাবু
বলেন,
প্রত্যেকবারই
বায়না
হয়ে
যায়। এবার তো এখনও হচ্ছে না। অনেক
আশায়
থাকি
এই
ক’টা
দিনের
জন্য। বর্ষীয়ান বিফলবাবু বললেন, এখন ঢাকের কদর কমছে। তাসাপার্টির
বাজনা
নিয়ে
যায়
অনেকে। কমবয়সিরা সাত–আটজনের দল করে তাসাপার্টি বাঁধে। তবুও
পুজোয়
ঢাক
তো
লাগেই। ঢাক বাজিয়ে সারা বছরের পেটের ভাত জোগাড় হয় না কারও। কারও
হয়তো
এক–দু’কাঠা
জমি
আছে। বেশিরভাগই ভূমিহীন খেতমজুর। অপরের
জমিতে
জনমজুরি
খেটে
আর
কখনও
কখনও
জব
কার্ডের
দৌলতে
সরকারের
‘১০০
দিনের
কাজে’
যোগ
দিয়ে
অনটনের
সংসার
চলে
কোনওরকমে। এই দারিদ্র্যের মধ্যেও শারদোৎসবের এক অন্য আবেদন তাঁদের কাছেও থেকে যায়। কারণ
ঢাক
বাজিয়ে
এককালীন
কিছু
বেশি
উপার্জন
হয়
এই
সময়টায়। সেই উপলক্ষে নতুন করে ঢাক ছাওয়া হয়। লাগানো
হয়
চামড়া
বা
ফাইবারের
শিট। পালকের ঝুঁটি দিয়ে ঢাক সাজিয়ে নেন তাঁরা। ঢাকের
তালে
পুজো
মাতিয়েই
সুখ
পান
ডাকিরা ।
মন
গললে
শুরু
হয়
দরদাম। কোটি টাকা বাজেটের পুজোর কর্মকর্তা এক–দু’হাজার টাকার জন্য দরদাম শুরু করেন। উভয়পক্ষ
সম্মত
হলে
ঢাকিদের
চলে
যেতে
হয়
সংশ্লিষ্ট
পুজোমণ্ডপে। প্রতিমা নিরঞ্জনের পর পারিশ্রমিক নিয়ে একাদশী বা দ্বাদশীর দিনে বাড়ির পথে পা বাড়ান তাঁরা। দু’টো
টাকা
পকেটে
আর
নতুন
জামাকাপড়ের
প্যাকেট
হাতে
নিয়ে
ঘরে
ঢুকলে
খিলখিলিয়ে
হেসে
ওঠে
ঢাকির
ছোট্ট
মেয়ে। আকূল হন নববধূ। এটাই
হল
শত
শত
ঢাকির
ফি–বছরের
উৎসব–পাঁচালি। এবারও এর কোনও ব্যতিক্রম হয়নি। শুক্রবার
থেকেই
শিয়ালদহ
স্টেশনের
সামনে
ভিড়
জমিয়েছেন
তাঁরা। কালিয়াগঞ্জ
এর বৈশ্য পাড়ায় থেকে
এসেছেন
শ্রীধর
বায়েন,
সন্তোষ
বাগদি। তাঁদের সঙ্গে কাঁসি বাজানোর জন্য এসেছে বছর বারোর শিশু নিতু বায়েন। শ্রীধরবাবুর
ছেলে নিতু । বাড়িতে রয়েছে তার মা এবং দু’বছরের ছোট বোন। শহর
থেকে ফেরার পথে তার জন্য নতুন জামা কিনতে হবে বলে জানাল নিতু । সে বসে থাকবে বাবা–দাদার পথ চেয়ে। রায়গঞ্জের ঢাকি
অমিয় দাস,
শ্যামল দাসের
সঙ্গে
কাঁসি
বাজাতে
শহরে
এসেছে
এক
কিশোর। অমিয় বাবু
বলেন,
প্রত্যেকবারই
বায়না
হয়ে
যায়। এবার তো এখনও হচ্ছে না। অনেক
আশায়
থাকি
এই
ক’টা
দিনের
জন্য। বর্ষীয়ান বিফলবাবু বললেন, এখন ঢাকের কদর কমছে। তাসাপার্টির
বাজনা
নিয়ে
যায়
অনেকে। কমবয়সিরা সাত–আটজনের দল করে তাসাপার্টি বাঁধে। তবুও
পুজোয়
ঢাক
তো
লাগেই। ঢাক বাজিয়ে সারা বছরের পেটের ভাত জোগাড় হয় না কারও। কারও
হয়তো
এক–দু’কাঠা
জমি
আছে। বেশিরভাগই ভূমিহীন খেতমজুর। অপরের
জমিতে
জনমজুরি
খেটে
আর
কখনও
কখনও
জব
কার্ডের
দৌলতে
সরকারের
‘১০০
দিনের
কাজে’
যোগ
দিয়ে
অনটনের
সংসার
চলে
কোনওরকমে। এই দারিদ্র্যের মধ্যেও শারদোৎসবের এক অন্য আবেদন তাঁদের কাছেও থেকে যায়। কারণ
ঢাক
বাজিয়ে
এককালীন
কিছু
বেশি
উপার্জন
হয়
এই
সময়টায়। সেই উপলক্ষে নতুন করে ঢাক ছাওয়া হয়। লাগানো
হয়
চামড়া
বা
ফাইবারের
শিট। পালকের ঝুঁটি দিয়ে ঢাক সাজিয়ে নেন তাঁরা। ঢাকের
তালে
পুজো
মাতিয়েই
সুখ
পান
ডাকিরা ।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});