লকডাউনের জেরে প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত গঙ্গারামপুরের জাতীয় স্তরের সাইক্লিস্ট দীপা সরকার
1 min readলকডাউনের জেরে প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত গঙ্গারামপুরের জাতীয় স্তরের সাইক্লিস্ট দীপা সরকার
তপন চক্রবর্তী–কালিয়াগঞ্জ(উত্তর দিনাজপুর)–আরাই মাস ধরে করোনা ভাইরাসের লকডাউনের জেরে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের কালদিঘির জাতীয় স্তরের সাইক্লিস্ট দীপা সরকার কোন প্রশিক্ষণ নিতে না পারায় মুষড়ে পড়েছে।সাইক্লিস্ট দীপা সরকারের কোচ সুজন কর্মকার বলেন আমার এই অনুশীলন কেন্দ্রে অনেক ভালো ভালো মেয়ে সাইক্লিস্ট হবার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে।কিন্তূ তাদের মধ্যে দীপা সম্পুর্ন অন্য ধরনের।
ও মন প্রাণ দিয়ে সাইকেলকে ভালোবেসেছে। দীপা বেশ কয়েক বছর ধরেই তার কাছে অনুশীলন করে থাকে। কোচ তথা দক্ষিণ দিনাজপুর সাইক্লিস্ট এসোসিয়েশনের সম্পাদক সুজন কর্মকার এক প্রশ্নের উত্তরে জানান দীপা একদিন না একদিন এই রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করবেই।তিনি বলেন দীপা সাইকেল ছাড়া কিছুই বোঝেনা।
ওর স্বপ্ন ধ্যান জ্ঞান সব কিছুই সাইকেল কেন্দ্রিক।কোচ সুজন কর্মকার বলেন ইতিমধ্যেই জাতীয় স্তরে দীপা চার বার খেলায় অংশগ্রহণ করে।যেমন ২০১৩-১৪সালে হরিয়ানা,২০১৪-১৫ সালে-কর্ণাটক,২০১৫-১৬ সালে-কেরালা,২০১৬-১৭ সালে–আলীগড় এবং ২০১৭-১৮ সালে ঝাড়খণ্ডে জাতীয় খেলায় অংশগ্রহণ করে।যদিও সেখানে কোন প্লেস পায়নি।
কিন্তূ প্লেস না পেলে কি হবে দীপার আত্মবিশ্বাস তাকে বড় সাফল্যের শীর্ষে একদিন নিয়ে যেতে সাহায্য করবেই।দীপা সহজে ছাড়বার পাত্র নয়। রাজ্য স্তরে২০১৪-১৫ এবং ১৬ সালে পর পর তিনবার রাজ্য স্তরে চ্যাম্পিয়ন হবার গৌরব অর্জন করে বলে কোচ সুজন কর্মকার জানান।সুজনবাবু বলেন এছাড়াও দীপা যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বেঙ্গল অলিম্পিক গামেসে ২০১৬-১৭ সালে রানার্সের মর্যাদা পায়। সুজন কর্মকার বলেন দীপা ২০১৮–১৯ সালে যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গনের খেলায় দ্বিতীয় এবং ২০২০ সালে নদিয়ার মদনপুরে অনুষ্ঠিত খেলায় তৃতীয় স্থান দখল করে। দক্ষিণ দিনাজপুর সাবডিভিশন স্পোর্টস এসোসিয়েশনের সম্পাদক তথা দক্ষিণ দিনাজপুর সাইক্লিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি বিভূতি চকর্বর্তী বলেন দীপা সরকারের অদম্য ইচ্ছা ও আত্মশক্তি বলে ও একদিন জাতীয় স্তরই নয় দীপা একদিন এশিয়ান গেমসে জয়ী হবেই বলে তার দৃঢ় বিশ্বাস।দীপা অনেক উপরে যাবে তার দৃঢ় বিশ্বাস।বর্তমানে লকডাউনের জন্য প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন কোনটাই করতে না পারায় দীপা মাঝে মধ্যেই মুষড়ে পড়ছে।গত আড়াই মাস কোন রকম অনুশীলন করতে না পারায় চরম সমস্যার মধ্যে আছে বলে দীপা শুক্রবার জানান। দীপা বলেন তার ইচ্ছা সে এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করবে।এশিয়ান গেমসে অংশ গ্রহন করতে গেলে চাই প্রচুর অনুশীলনের।কিন্তূ অনুশীলনে নানান রকম বাধা তার সামনে আসছে।লকডাউনের কারনে যেমন গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে কোন অনুশীলন বা প্রশিক্ষণ নিতে পারছে না সে।।দীপা জানায় শুধুমাত্র বাড়িতে থেকেই শরীর চর্চা করে যেতে হচ্ছে।এই মুহূর্তে আমার প্রয়োজন ছিল কঠোর অনুশীলন।কিন্তূ কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা।এই সব কারনে ভবিষ্যতে এশিয়ান গেমসের খেলায় সুযোগ পাওয়া নিয়ে খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি।দীপা ২০১৮সালে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে।দীপার বাবার একটি চায়ের দোকানের উপর সংসার চলেনা।তাই দীপাকে সংসারে সাহায্য করবার জন্য পাড়ার ছেলে মেয়েদের নিয়ে টিউশনি করে কিছু আয় করে বলে জানা যায়।দীপা সরকার বলেন করোনা ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি পেতে গেলে লকডাউনের কোন বিকল্প নেই সেটাও যেমন বুঝতে পারছি। এই মুহূর্তে লকডাউন খুব জরুরী।সব কিছু বুঝতে পেরেও এও বুঝতে পারছি আমার প্রশিক্ষণ কোন মতেই এগোচ্ছেন।ভগবানের কাছে শুধুই প্রার্থনা করে যাচ্ছি তুমি করোনা থেকে সবাইকে মুক্ত কর।সবাইকে আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে এনে হাসি ফোটানোর ব্যবস্থা করো।আর আমাকে সুযোগ করে দাও মনভরে অনুশীলন যাতে করতে পারি।