বেআইনি ভাবে লকডাউন আইন ভঙ্গকারী পুলিশের হাতে ধরা পরেও জামিন নিতে গিয়ে মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির স্বীকার হচ্ছেন।
1 min readবেআইনি ভাবে লকডাউন আইন ভঙ্গকারী পুলিশের হাতে ধরা পরেও জামিন নিতে গিয়ে মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির স্বীকার হচ্ছেন।
জয়ন্ত বোস, তন্ময় চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ। চারিদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কড়াল গ্রাসের আতঙ্কে সর্বস্তরের মানুষ দিশেহারা ঠিক এইসময় সকলকে সুস্থ রাখতে এবং সংক্রমনের হাত থেকে বাঁচাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সচেতনতামূলক বার্তার সাথে লকডাউন প্রথা চালু করেছেন। এমনকি বেআইনি ভাবে লকডাউন আইন ভঙ্গকারী জনগনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহন করতে বাধ্য হয়েছেন। তবুও জনগন কেন জানি সাবধানতা অবলম্বনের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখতে পারছেন না।
বিশেষ করে বিশেষ প্রয়োজনে বাড়ির বাহিরে কেউ বের হলে তাকে সোশ্যাল দূরত্ব বজায় রাখার সাথে নাকেমুখে মাস্ক ব্যবহারের সরকারি নির্দেশ মেনে চলতে হবে এই বিষয়টি জানা সত্ত্বেও বেআইনি ভাবে তা লঙ্ঘন করছেন। বাইক বা স্কুটি তে একজনের বেশি চড়তে পারবেন না সেই বিষয়েও প্রশাসন জনগনকে মাইকিং করে ওয়াকিবহাল করছে। কে কার কথা শুনে। আর এই বেআইনি ভাবে লকডাউন আইন ভঙ্গকারী জনগনের বিরুদ্ধে সরকারি নির্দেশে কড়া পদক্ষেপ গ্রহন করতে বাধ্য হচ্ছেন পুলিশ প্রশাসন এবং তাদেরকে ধরপাকড় করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থায় মামলা রুজু করছেন। স্বাভাবিক ভাবেই লকডাউনে গৃহবন্দী হয়ে জনগন কর্মবিমুখ হয়ে পরেছেন। রোজগার বন্ধ, সংসার চালানো দায় হয়ে
পরেছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলোর। কিন্তু উপায় না থাকায় এর মধ্যেই চলছে বেআইনি ভাবে লকডাউন আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশি তৎপরতা তার একটাই কারণ সংক্রমন যাতে ছড়িয়ে না পরে। এদিকে দেশব্যাপী লকডাউনের আওতায় সকল আদালতে চলছে লকডাউন। যার ফলে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য আদালত বন্ধ।আদালতে লোকসমাগম ঠেকাতে এই পদক্ষেপ। বিচারপতি , আইনজীবী এবং মামলা সংক্রান্ত বিচারাধীন পরিবারের মানুষদের মধ্যে সোশ্যাল দূরত্ব বজায় রাখা এবং সংক্রমন ছড়িয়ে পরতে না পারে তারজন্য আদালত বন্ধ রেখে স্পেশাল ভাবে অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বার কাউন্সিল সকল আইনজীবীদের অনুরোধ করেছেন আদালতমুখী যেন না হন এবং এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, রাজ্য সরকার প্রমুখ পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। এদিকে বেআইনি ভাবে লকডাউন আইন ভঙ্গকারী জনগনের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের দৈনন্দিন পদক্ষেপ যেমনভাবে প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছে ঠিক এর পাশাপাশি পুলিশ ভ্যানের মধ্যে চার পাঁচজন সিভিক ভলান্টিয়ার সহ একজন পুলিশ আধিকারিক দুই তিনজন লকডাউন আইন ভঙ্গকারীদের ধরে পুলিশ ভ্যানে করে একসাথে থানায় নিয়ে আসার মধ্যেও এক অদৃশ্য ভাইরাসের সংক্রমনের আশঙ্কা প্রকাশ থেকেই যাচ্ছে তবে এই মুহূর্তে পুলিশ প্রশাসনের কাছে অন্য কোনো পথ নেই। উল্লেখ্য কালিয়াগঞ্জ থানা প্রবেশ মুখে যেভাবে স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ভিতরে সোশ্যাল দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা এককথায় অভূতপূর্ব। তথাপি এই পদক্ষেপের মধ্যেই ছোট্ট ছিদ্র। ২৪ ঘন্টা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন পুলিশ প্রশাসন এবং এই করতে গিয়েই এই প্রথম গতকাল কলকাতার এক পুলিশ আধিকারিকের করোনা ভাইরাসের পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। কে বলতে পারে বেআইনি ভাবে লকডাউন আইন ভঙ্গকারীদের সাথে একই পুলিশ ভ্যানে থাকা কোনো পুলিশ প্রশাসনের কর্মীদের মধ্যে সংক্রমন ছড়িয়ে পরবে না এক আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। এদিকে বেআইনি ভাবে লকডাউন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ জামিন যোগ্য আইনি ধারায় যে মামলা রুজু করছেন সেখানে বেআইনি ভাবে আইন ভঙ্গকারীরা রায়গঞ্জ আদালত থেকে জামিন পেয়ে বাড়িতে ফিরে এসে কখনোই ভেবে না বসেন যে জামিন পেলাম তবে পুনরায় বেআইনি ভাবে লকডাউন আইন ভঙ্গ করবেন। আইনি পদক্ষেপে আপনাকে বিশেষ শর্তে আদালত আপনাকে জামিন দিয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে যেহেতু আদালত চত্ত্বরে সকল আইনজীবীদের উপস্থিতির উপর সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে তাহলে এই লকডাউন ভঙ্গকারীদের আদালতে জামিন পেতে কি ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে যেখানে আইনজীবীরা অনুপস্থিত। আদালতে যে কোনো মামলায় একজন জড়িত ব্যাক্তি আইনজীবী ছাড়া আদালতে প্রসিড করতে পারেন না সেক্ষেত্রে বর্তমানে একজন আইনজীবী ছাড়া বেআইনি ভাবে লকডাউন ভঙ্গকারী কিভাবে উক্ত রুজু মামলায় জামিন পাচ্ছেন। হ্যাঁ, পাচ্ছেন। ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি (DLSA ) একজন আইনজীবী দীলিপ পাল কে রায়গঞ্জ আদালতে নিযুক্ত করেছেন যিনি সরকারি খরচে বিভিন্ন মামলায় যুক্ত আসামীদের এবং লকডাউন আইন ভঙ্গকারীদের হয়ে বিচারকের কাছে সওয়াল করে তার জামিনের আবেদন করছেন এবং বিচারক একটি সামান্য অংকের বেল বনডে জামিন যোগ্য ধারায় লকডাউন ভঙ্গকারীদের জামিন মঞ্জুর করে দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে মামলায় রুজু ব্যক্তিদের অতিরিক্ত ভাবে অন্য কোনো আইনজীবী দের জন্য কোনো অর্থই ব্যায় করতে হচ্ছে না। এবিষয়ে যিনি ঐ ভঙ্গকারীদের হয়ে জিম্বাদারী হচ্ছেন তিনি বেল বনড অংকের উপর একটি যৎ সামান্য পার্সেন্টেজে জামিন করাচ্ছেন। কিন্তু খবরে প্রকাশ বিশেষ করে কালিয়াগঞ্জ থানা থেকে এমন ধরনের মামলায় বেআইনি ভাবে লকডাউন ভঙ্গকারী দের আদালত থেকে জামিন নিতে গিয়ে নাকি ৩০০০- ৪০০০ টাকা আর্থিক খেসারত দিতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই শোরগোল পরেছে যেখানে এই লটডাউনে অর্থ সামাজিক পরিস্থিতি তলানিতে ঠেকেছে, মানুষের রোজগার নেই বললেই চলে সেখানে জামিন নিতে গিয়ে মোটা অংকের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এ খবর কে রাখে। হ্যাঁ রাখে সংবাদ মাধ্যম। কালিয়াগঞ্জে ইতিমধ্যে কতিপয় বুদ্ধিজীবী মহল, বিশেষ প্রয়োজনে থানার সামনে সাধারণ পথ চলতি জনগন , আইনজীবীদের একাংশ দের কাছ থেকে পাওয়া মৌখিক অভিযোগে জানা গেল যেখানে আদালত চত্ত্বরে এই মুহূর্তে লকডাউনে আইনজীবী দের প্রবেশ করার উপর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে সেখানে কালিয়াগঞ্জ থানায় সন্ধ্যা লাগলেই থানা চত্ত্বরে এবং থানার গেটের বাহিরে কতিপয় দালাল, কিছু কোর্ট ও থানা পাখিরা, দুই একজন আইনজ্ঞ ব্যাক্তিদের দৈনন্দিন সকাল সন্ধ্যা ঘোরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে কিসের স্বার্থে। এমনিতেই লকডাউন পরিস্থিতিতে থানায় কেস সংখ্যা নগন্য সেখানে এই ধরনের মুখোশধারী দের দৈনন্দিন জমায়েত নিয়ে উক্ত বিশিষ্ট জনেদের এই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে আজকের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হলো আদৌ কি এই পরিস্থিতিতে মুখোশধারী দের থানা চত্ত্বরে বা থানার বাহিরে জমায়েতের কোনো যথার্থতা আছে কিনা। এমনকি প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দৈনন্দিন পুলিশের হাতে ধরা পরা লকডাউন আইন ভঙ্গকারী দের আদালত থেকে জামিন করিয়ে দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার তাগিদেই এই জমায়েত কিনা। এখনো পর্যন্ত কি শিক্ষিত, কি অশিক্ষিত, কি শহর, কি গ্রামের জনগন করোনার ছোবলের বিষ কত ভয়ঙ্কর বুঝতে পারছেন না বা অনুমান করলেও খেলা ছলে সেটি নিচ্ছেন। আর এই মানসিকতায় খেলতে গিয়েই নিজের, পরিবারের, সমাজের, প্রশাসনের , সরকারের, দেশের বিপদ ডেকে আনছেন। এই বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনের কালঘাম ছুটে যাওয়ার অবস্থা। দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন সকল স্তরের পুলিশ কর্মীরা। একদিকে সমাজের মূমূর্ষ রুগীদের জন্য নিজেরা রক্তদান করছেন এর মধ্যেই আবার জনগনকে সচেতন করতে মাইকিং করা, হাসপাতালে অসুস্থ রুগীদের পৌঁছে দেওয়া, হাট বাজারে সোশ্যাল দূরত্ব ঠিক মতো কার্যকর হচ্ছে কিনা অর্থাৎ জুতো সেলাই থেকে চন্ডী পাঠ সব কিছুই করতে হচ্ছে তাদের পরিবার পরিজন ছেড়েই। তাই এই প্রতিবেদনে আপনাদের কাছে অনুরোধ লকডাউনে বাড়িতেই থাকুন, বিশেষ প্রয়োজনে বাড়ির বাহিরে বের হলে সোশ্যাল দূরত্ব বজায় রেখে নাক মুখে মাস্ক লাগিয়ে বের হন, ঘনঘন সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন। এছাড়া কোনো গতি নেই বাঁচবার। আর ইচ্ছাকৃত বেআইনি ভাবে লকডাউন ভাঙ্গলে পুলিশ প্রশাসন তাদের উপযুক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ও করবেন কিন্তু থানা চত্ত্বরে বা থানার বাহিরে থাকা উক্ত শ্রেণীর দালালদের পাল্লায় পরবেন না নচেৎ আদালত থেকে জামিন নিতে গিয়ে আপনাকে গুনতে হতে পারে মোটা অংকের অর্থ। এই বিষয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বরাও জনসাধারণ কে সজাগ হতে বলেছেন। আপনারা সজাগ হোন, অপরকে সজাগ করুন এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করুন।