বিচিত্র সাইকেল প্রেমী সিবেল মিনজ
1 min readবিচিত্র সাইকেল প্রেমী সিবেল মিনজ
সুবল গোপ,চোপড়া :-বর্তমান যুগে ঘরের বাইরে বেরোলে বিচিত্র কিছু না কিছু চোখে পড়ে।অদ্ভুত কিছু দেখলে মানুষ অবাক হয় বৈকি!আবার বিচিত্র কোন কিছু চোখে পড়লে মানুষ আনন্দবোধও করে।যেমন বিচিত্র পোশাক পরিচ্ছদ,বিচিত্র পশুপ্রেম।সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের সীমান্ত এলাকার চা বাগানে বাস করেন এমনই এক বিচিত্র সাইকেলপ্রেমী। বছর ৩৫এর সিবেল মিনজ নামে এক আদিবাসী যুবক।পেশায় চা শ্রমিক। থাকেন দেবীঝোড়া চা বাগানের আদিবাসী মহল্লায়।
এলাকায় সবাই তাকে সাইকেলপ্রেমী হিসাবেই চেনে। কারণ তার যে সাইকেল তার দাম বড় জোর আটশো থেকে এক হাজার। কিন্তু ওই পুরোনো সাইকেলটিকে সে এমনভাবে সাজিয়েছে যে কোন মানুষ দেখলেই তাকে বলতেই হবে বিচিত্র সাইকেল। কেননা তার সাইকেলের সামনে তিনি লাগিয়েছেন মোটর সাইকেলের হেড। আছে মোটরসাইকেলের হেড লাইটও। আছে সাইড ইন্ডিকেটর,সামনে ও পিছনে লাগানো আছে নম্বর প্লেট লেখা অল ইন্ডিয়া ১৯৪৭ । আছে জলের বোতল রাখার ব্যবস্থা।
রয়েছে মোটর সাইকেলের সিট। এই সাইকেলে চেপে সিবেল পাড়ি দেন ৩০-৪০ কিলোমিটার পথ। পথে যেখানেই দাঁড়ান,তার বিচিত্র সাইকেল দেখতে পথ চলতি মানুষের ভিড় জমে যায়।অনেকে তাকে চা বিস্কুটও খাওয়ায়। আবার অনেকে মজা করে বলেন ভাইসাব তোমরা মোটর সাইকেল বেঁচেগা কিয়া? কিন্তু সিবেল সব কিছুর জবাব দিলেও তার প্রিয় সাইকেল বিক্রির কথা কেউ বললে তা সহ্য করতে পারেন না। সে জোর হাত করে বলেন চাচা মুঝে সব কুছ পুছো,লেকিন মেরা এ সাইকেল খরিদনে কি বাত মত বলো। আবার অনেকে রহস্য করে বলেন,তুমি আমার বাইক নিয়ে নাও,বদলে তোমার সাইকেল দিয়ে যাও। একথা শোনার পর সাইকেল প্রেমী সিবেল আর এক মুহুর্তও সেখান থাকতে চান না। এই বিচিত্র সাইকেলে একটা না একটা নতুনত্ব লাগাতেই থাকেন। তার খরচ জোগাড় করতে চা বাগানের শিশুদের টিউশন পড়ান। এতে যা রোজগার হয় তা দিয়ে সাইকেলে একটা না একটা নতুন জিনিস লাগাতেই থাকেন। চোপড়ার মাঝিয়ালী অঞ্চলের এই বিচিত্র সাইকেল প্রেমীর নাম এখন গোটা চোপড়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সকলের চোখে দেবীঝোড়ার চা শ্রমিক মহল্লার সিবেল এখন বিচিত্র সাইকেল প্রেমী।