November 21, 2024

অদম্য ইচ্ছা ও মনের জোরে মকলেশা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন

1 min read

অদম্য ইচ্ছা ও মনের জোরে মকলেশা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন

মকলেশা জন্মের পর থেকেআলো দেখেনি কোনোদিনই । তবু সেই প্রতিবন্ধক তার পড়াশোনার প্রতি তার ভালোবাসা আটকাতে পারেনি । একে কন্যাসন্তান তায় আবার দৃষ্টিহীন। সেই অপরাধে মকলেশার মাকে চরম গালাগালি করত তাঁর স্বামী। তাই মেয়ের ২ বছর বয়সে তাকে নিয়ে মায়ের কাছে চলে আসেন মকলেশার মা মোসলেমা খাতুন। অভাব-অনটন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী।

মকলেশার মা কৃষিশ্রমিকের কাজ করে কোনোমতে বড়ো করছেন মেয়েকে। তবুও দারিদ্র কিংবা দৃষ্টিহীনতা কোনোটাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি মকলেশার জীবনে। আর পাঁচজন সাধারণ পড়ুয়ার সঙ্গেই পড়াশোনা করে বড়ো হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে মকলেশা বেগম।বর্তমানে সে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তার জীবনের লক্ষ্যই শিক্ষিকা হওয়া। তবে এই গোটা লড়াইয়ে মকলেশা পাশে পেয়েছে তার প্রতিবেশী, আত্মীয়, স্কুলের বন্ধু ও শিক্ষকদের অনেককেই। তারা সকলেই একবাক্যে জানায়, মকলেশা একজন রোল মডেল। হেমতাবাদ ব্লকের সমশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সমশপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় তার বাড়ি। মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাইটার নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে ৪০ শতাংশেরও বেশি নম্বর পেয়ে পাস করে সে। একজন দৃষ্টিহীনের পক্ষে সাধারণ স্কুলে পড়াশোনা করে এই নম্বর পেয়ে পাস করাটা যে আনুপাতিক হারে যথেষ্ট ভালো তা বলাই বাহুল্য। মকলেশা জানিয়েছে, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষ্যে সে একটি রেকর্ডার পায়। যা তার পড়াশোনার কাজে তাকে অত্যন্ত সাহায্য করে।তার স্কুলের বন্ধুরা জানায়, মকলেশা বেশ আন্তরিক। কারোর কাছ থেকেই সে সাহায্যর প্রত্যাশা করে না। তবু তার বন্ধুরা স্বেচ্ছায় তার পাশে এসে দাঁড়ায়। বন্ধুরা স্কুলের ক্লাসে নোট লেখার সময় কার্বন দিয়ে অন্য কাগজে মকলেশার জন্য নোট লিখে দেয়। আর সেই সব নোট পড়ে শুনিয়ে তাকে মুখস্থ করিয়ে দেয় মরিয়ম খাতুন বলেন, ও প্রতিবন্ধী বলে অনেকেই ওকে ঘৃণা কিংবা করুণার চোখে দেখে। কিন্তু আমরা চাই যে নিজের যোগ্যতায় মাথা উঁচু করে বাঁচুক। চাকরি পেয়ে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতোই জীবনযাপন করুক ও।স্কুলের বান্ধবীরা বা বউদি সকলেই চায় সে তার জীবনের লড়াইয়ে এগিয়ে যাক। সমশপুর হাইস্কুলের শিক্ষকরাও মকলেশাকে নিয়ে যথেষ্ট গর্বিত। তাঁরা মনে করেন, মকলেশাকে রোল মডেল করে এগিয়ে যাক সমস্ত দিব্যাঙ্গরা। মকলেশার মায়েও একটিই ইচ্ছা, মকলেশা নিজের পায়ে দাঁড়াক। আর তাই মকলেশা শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হয়ে এগিয়ে চলেছে লড়াইয়ে ময়দানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *