স্মার্টফোন এর যুগে সাবেকি ক্যালেন্ডার এখন অবলুপ্তির পথে কালিয়াগঞ্জ এ
1 min readতনময় চক্রবর্তী। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ চলছে। আর কয়েক দিন পরেই বছর শেষ হতে চলছে। ঠিক তার পরেই বর্ষবরণের পালা। তবুও নতুন বছরের আগে উত্তর দিনাজপুর জেলায় ক্যালেন্ডারের চাহিদা তেমন নেই বললেই চলে। ক্যালেন্ডার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আগের তুলনায় এখন ব্যবসা কমে দাঁড়িয়েছে
প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ। আগে বছরের শেষ ও নতুন বছরের শুরুতে ক্যালেন্ডার নিয়ে যে মাতামাতি দেখা যেত, এখন আর তা দেখাই যায় না। মূলত ডিজিটালের যুগে সব ধরনের মানুষের কাছে উন্নত স্মার্টফোনে দিনক্ষণ, বিশেষ অনুষ্ঠান, পালা-পার্বণ দেখার ব্যবস্থা থাকায় এই হাল হয়েছে। তাই দেওয়াল ক্যালেন্ডারের বিক্রি আগের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে। এখন ঘরের সৌন্দর্যানের জন্য টেবিল ক্যালেন্ডার কিছু মানুষ নিলেও সেই প্রবণতাও ধীরে ধীরে কমে আসছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।ক্যালেন্ডার ব্যবসায়ীরা জানান, বছর সাতেক আগেও অবস্থা এতটা খারাপ ছিল না। তখনকার অর্ধেক বিক্রিও এখন নেই।
কালিয়াগঞ্জ শহরের এক পুরোনো দোকানদার জানান, কয়েক বছর আগেও ১ লক্ষ ২০ হাজার মতো দেওয়াল ক্যালেন্ডার বিক্রি হয়েছে। এখন তা নেমে এসেছে 20 হাজারের ঘরে। শহরের সব ক্যালেন্ডার ব্যবসায়ীদের একই অবস্থা। ব্যবসায়ীদের কথায়, মোবাইল ফোনে সব পাওয়া যাচ্ছে। তাই আগের মতো ক্যালেন্ডারের আগ্রহ নেই। স্কুল, বইয়ের দোকান, নানা অফিস, বিমা অফিস, নানা সমিতির ক্লায়েন্টের অর্ডারের উপর ভর করে এই ব্যবসা ঠিকে রয়েছে।দেওয়াল ক্যালেন্ডারের দাম সাত টাকা থেকে শুরু। তারপর ডিজাইন ও মান অনুসারে দাম বাড়তে থাকে। কলকাতা থেকেই ক্যালেন্ডার নিয়ে আসেন সিংহভাগ ব্যবসায়ী। শহরের এক ক্যালেন্ডার ব্যবসায়ী বলেন,আমি শহরের বুকে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই ক্যালেন্ডারের ব্যবসা করি। ২০১০ সাল পর্যন্ত এর ব্যবসা রমরমা ছিল। তার আগে তো আরও চাহিদা ছিল। নতুন বছর আসার অনেক আগেই মানুষ আগ্রহ নিয়ে এই ক্যালেন্ডারের খোঁজ করতেন। অর্ডার দিতেন। কিন্তু ক্যালেন্ডার নিয়ে সেই আগ্রহ এখন আর নেই। এখন ডিজিটাল যুগে নিজের স্মার্টফোন সব তারিখ, বিশেষ দিন, উৎসব, অনুষ্ঠান, পার্বণ সব মানুষ পেয়ে যাচ্ছে। আগে নতুন বছরের আগে এক লক্ষেরও বেশি ক্যালেন্ডার বিক্রি হলেও এখন তা 20 হাজারে নেমে গিয়েছে। আগে যারা ২৫ হাজার ক্যালেন্ডারের অর্ডার দিয়েছেন তারা এখন পাঁচ হাজারের মতো অর্ডার দিচ্ছেন। তাঁদের জন্যই আমরা এই ব্যবসায় টিঁকে রয়েছি।তবে ক্যালেন্ডারের চাহিদা এখন আর একদম নেই একথা মানতে । কালিয়াগঞ্জ এর মহেন্দ্রগঞ্জ এর এক ক্যালেন্ডার ব্যবসায়ী বলেন, নতুন বছরের একটা ক্যালেন্ডার সকলেই বাড়িতে রাখতে চান। সেই প্রবণতা এখনও পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। তাই এখনও এর চাহিদা রয়েছে। তবে ব্যবসার পরিমাণ আগের থেকে কমেছে। আমরা ক্যালেন্ডার কলকাতা থেকে নিয়ে আসি। তারপর উপরে বা নীচে ক্রেতাদের চাহিদা মতো নাম আমরা ছপিয়ে দিই।কালিয়াগঞ্জ এর বাসিন্দা শিল্পী রায় বলেন, এখন আর ক্যালেন্ডার কে দেখে? মোবাইলে তো যখন চাই তখনই ক্যালেন্ডার। আগে অবশ্য প্রতি বছরই বাড়িতে নতুন নতুন ক্যালেন্ডার আসত। কোনও ক্যালেন্ডার বসার ঘরে আবার কোনও ক্যালেন্ডার শোওয়ার ঘরে টাঙানো থাকত। বছর শেষ হয়ে গেলে সেই ক্যালেন্ডারগুলো দিয়ে আমরা বইখাতায় মলাট দিতাম।