December 5, 2024

অনন্য ব্যোমকেশ

1 min read

অনন্য ব্যোমকেশ

তপন চক্রবর্তী–কালিয়াগঞ্জ-  তিনি বিরানব্বই বছরের কিশোর । বয়স কাবু করতে পারেনি তাঁর অদম্য মনোবলকে। দেশে স্বদেশী আন্দোলন চলাকালীন নিজের মাকে দেখেছিলেন পাড়ার মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে চড়কায় সুতো কাটতে।

তখন থেকেই মনে জেগেছিল দেশের জন্য কিছু করার বাসনা । ছেলেবেলায় বিভিন্ন বিপ্লবীদের চিঠি সরবরাহের কাজ করেছেন । বর্ধমান জেলার বড়হাণ গ্রামের ব্যোমকেশ সিংহ শান্তিনিকেতনের বিনয় ভবনের পাঠ শেষ করে কর্মসূত্রে চলে আসেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার নয়াবাজার ( গঙ্গারামপুর ) গ্রামে। পেশায় শিক্ষক হলেও সারাজীবন ব্যয় করেছেন সমাজের বিভিন্ন সেবামূলক কাজে । পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চম মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ গ্রহণের পর সিদ্ধার্থ শংকর রায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন । ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে তৎপর ইন্দিরা গান্ধীর আহ্বানে তিনি ছুটে বেড়িয়েছেন বিভিন্ন প্রান্তে । অদ্ভুত এই মানুষটি সাহিত্যসাধনাও করে চলেছেন সমান তালে । তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে আছে – ” বড় দরজা বন্ধ ” ( উপন্যাস) , “শতাব্দীর শঙ্খ” ( কবিতা সমগ্র) , ” ভাঙাগড়া” ( উপন্যাস), ” দশ দিগন্ত ” (ছোট গল্প সমগ্র)।বিরানব্বই বছরের এই অদম্য মনোবলের মানুষটি প্রত্যেক বছর তাঁর নিজের জন্মদিনে সহস্রাধিক মানুষকে নিমন্ত্রণ করেন । নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সব্বাইকে খাওয়ান। তাঁর যুক্তি তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে হয়তো অনেককে নিমন্ত্রণ করা হবে। কিন্তু তাদের তো তখন তিনি দেখতে পাবেন না । তাই প্রত্যেক বছর নিজের জন্মদিনে এতো মানুষজনকে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেবা করিয়ে তৃপ্তি পেলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *