উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিজেপি তে ভাঙন
1 min read
রায়গঞ্জ ঃ- উত্তর দিনাজপুর জেলায় বিজেপি তে
ভাঙন। বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সহ সভাপতি পবিত্র চন্দের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক বিজেপি ও তৃণমূল কর্মী যোগ দিল জাতীয় কংগ্রেসে।
ভাঙন। বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সহ সভাপতি পবিত্র চন্দের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক বিজেপি ও তৃণমূল কর্মী যোগ দিল জাতীয় কংগ্রেসে।
শনিবার রায়গঞ্জ ইন্সটিটিউট মঞ্চে শহর ও ব্লক কংগ্রেস কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত কর্মীসভায় দলত্যাগী নেতৃত্ব ও কর্মীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন রায়গঞ্জ প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাসমুন্সি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলায় বড়সড় সাফল্য পেল জেলা কংগ্রেস নেতত্ব।
জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পদেই দীর্ঘদিন ধরেই আসীন ছিলেন পবিত্র চন্দ। কিন্তু হঠাৎ দলত্যাগ করে পবিত্রবাবু বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় জেলায় কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। উল্লেখ্য, প্রায় ৭ মাস আগে জেলার উন্নয়নের ১২ দফা শর্ত দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হাত ধরে পবিত্রবাবুর নেতত্বে প্রায় কয়েক শতাধিক কংগ্রেস কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছিল।
কিন্তু রায়গঞ্জ তথা উত্তর দিনাজপুর জেলার উন্নয়নের ক্ষেত্রে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বিজেপি নেতৃত্ব পালন না করায় বিজেপির রাজ্য সভাপতির কাছে পবিত্রবাবু তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দীপাদেবীর হাত ধরে আবার কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় জেলায় নীচুতলার কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে প্রবল উত্সাহ তৈরি হয়েছে। পবিত্রবাবুর মতো একজন দক্ষ নেতত্বকে কংগ্রেস আবার ফিরে পাওয়ায় খুশি জেলা কংগ্রেসের সভাপতি তথা বিধায়ম মোহিত সেনগুপ্ত।
এদিনের কর্মীসভায় দীপাদেবী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক প্রমথনাথ রায়, জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার, মহিলা কংগ্রেসের জেলা সভানেত্রী শিবানী মজুমদার, চাকুলিয়া ব্লক কংগ্রেসের সভাপতি মহঃ মোস্তাফা, ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি নব্যেন্দু ঘোষ, যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তুষার গুহ সহ অন্যান্যরা। পবিত্রবাবু বলেন, জেলার উন্নয়নের স্বার্থে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে ভুল করেছিলাম। দেশের ও দশের উন্নয়ন একমাত্র কংগ্রেসই করতে পারে। তাই কংগ্রেসের একনিষ্ঠ কর্মী হিসাবে কাজ করতে চাই। প্রাক্তন সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দীপা দাসমুন্সি এবং জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের নেতত্বে এই জেলার উন্নয়ন আগামীতে হবে। আমরা সেই উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে শামিল হব প্রত্যেকে। দীপাদেবী বলেন, পবিত্রবাবুর মতো অনেকেই ভুল করে বিজেপি সহ অন্যান্য দলে যোগদান করেছিল এক সময়। পরে নিজেরাই নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে কংগ্রেসে ফিরতে শুরু করেছে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জেলার প্রতিটি ব্লকেই বিভিন্ন দল থেকে কংগ্রেসে যোগদান করবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, রাজ্য সরকার হঠাৎ করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছে। বিরোধীদের মতামতকে কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কারণ তারা কোনদিনই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে দেয়নি। জোট প্রসঙ্গে দীপাদেবী বলেন, জোট হলে নীচুস্তরে জোট হবে। এ বিষয়ে দলের হাই কমাণ্ড বা প্রদেশ নেতৃত্ব কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। নীচুতলার কর্মীরা যদি জোট চাই তাহলে বামফ্রন্টের সঙ্গে অবশ্যই জোট হবে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পবিত্রবাবু সহ বিভিন্ন দল থেকে শতাধিক কর্মী কংগ্রেসে ফিরে আসায় সাংগঠনিকভাবে আমরা অনেকটাই শক্তিশালী হলাম। কারণ জাতীয় কংগ্রেস একমাত্র দল যারা দেশের ও দশের উন্নয়ন করতে পারে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পবিত্রবাবু বিজেপির রাজ্য সভাপতির কাছে তার পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকেই জেলার রাজনৈতিক মহলে পবিত্রবাবু কংগ্রেসে ফিরিয়ে আসার বিষয়ে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়। কংগ্রেসে যোগদানের জন্য কংগ্রেস হাইকমাণ্ড, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও জেলা কংগ্রেস সভাপতির কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। তণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা শাহনাজ হোসেন, তৃণমূল নেতা অসীম দাস সহ অন্যান্যরা এদিন জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন। যদিও জেলা তৃণমূল নেতত্ব তাদের এই দলবদলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।