সরকারের সদিচ্ছা থাকলে বঙ্গ ললনার গায়ে বেনারসি নয় আনারসের পাতার সুতোয় তৈরি আনারসি শাড়ি দেখা যেতেই পারে
1 min readসরকারের সদিচ্ছা থাকলে বঙ্গ ললনার গায়ে বেনারসি নয় আনারসের পাতার সুতোয় তৈরি আনারসি শাড়ি দেখা যেতেই পারে
তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,৭ জুলাই:চমকে উঠছেনতো,নানা চমকানোর কোন কারনই নেই।এখন সব কিছুই হাতের মুঠোয়,সব কিছুই সম্ভব যদি রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারের সদিচ্ছা থাকে তাহলে উত্তর দিনাজপুর জেলার সুমিষ্ট আনারসের ফলের পাতা থেকে সুতো তৈরি করে সেই সুতোয় বেনারসি শাড়ির পরিবর্তে আমাদের বঙ্গ ললনাদের গায়ে আনারসি শাড়ি একদিন না একদিন উঠতেই পারে।তবে তার জন্য রাজ্যে অথবা কেন্দ্রীয় সরকারের শিল্প স্থাপনের আন্তরিক সদিচ্ছা থাকা অত্যন্ত জরুরী। উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জেলার বিধান নগরের পর উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর চোপড়া ব্লকে ব্যাপক আনারসের চাষ হয়ে থাকে।উত্তরবঙ্গের বিধান নগর এবং ইসলামপুর চোপড়া থেকে পাঞ্জাব,চন্ডিগড়, দিল্লীতে টন কে টন আনারস নিয়ে গিয়ে সেখানে যেমন আনারসের রস থেকে জেলি তৈরি করছে ঠিক এক ঢিলে দুই পাখি মারার মত আনারসের পাতা ফেলে না দিয়ে সেই পাতা থেকে সুতো তৈরি করে কি ভাবে বেনারসির পরিবর্তে আনারসি শাড়ি তৈরি করা যায় সেই প্রচেষ্টা সেখানকার রাজ্য সরকার চালিয়ে যাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কৃষি বিভাগ কোন বেসরকারি উদ্যোগে মাধ্যমে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায় একটি পরীক্ষামূলক ভাবে আনারসের সুতো তৈরির কারখানা স্থাপন করতে পারে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় বেশ কিছুদিন পূর্বে দার্জিলিং জেলার বিধাননগর কোরবান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে আনারসের পাতা থেকে সুতো তৈরির প্রশিক্ষণ বেশ কিছুদিন দেওয়া হয়।বিধাননগর একাকার গ্রামের মহিলারা আনারসের পাতা থেকে সুতো তৈরির প্রশিক্ষণও নিয়েছেন অত্যন্ত আগ্রহের সাথে।বিধাননগর এলাকার গ্রাম্য মহিলাদের ধারনা ছিল এই সুতো তৈরির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি স্থায়ী ভাবে চলবে।গ্রামের স্বয় ন্বর গোষ্ঠীর মহিলারা এই কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণ নেবার পর এই এলাকায় সরকার থেকে হ্যান্ডলুম বিভাগের সহায়তায় একটি আনারাসী শাড়ি উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু সরকারের সেই সদিচ্ছা থাকলে বিধান নগরে অথবা চোপড়ায় এই সম্ভাবনাময় একটি শিল্প গড়ে উঠতে পারতো।কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের এত সুন্দর একটি প্রকল্পকে কোন গুরুত্ব আগেও দেয়নি এখনো গুরুত্ব গুরুত্ব দিতে নারাজ।অথচ এই শিল্পটি এখানে প্রতিষ্ঠিত হলে পিছিয়ে পর প্রচুর গ্রামের মহিলাদের সাথে শিক্ষিত যুবকরাও কর্মসংস্থানের দিশা পেতে পারতো বলে অনেকেই মনে করছে।আনারস চাষী সংগঠনের জনৈক নেতা অরুণ মণ্ডল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন আনারস কেন্দ্রীক এই ধরনের শিল যদি উত্তরবঙ্গে স্থাপন করা যেত তাহলে একদিকে আনারস চাষীদের যেমন লাভ হত তেমনি একটা নুতন ধরনের কুটির শিল্প স্থাপন হতে পারত বলে তিনি মনে করেন। জানা যায় ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডাস্ট্রি ক্র্যাফট ফাউন্ডেশন বিধান নগর ও চোপড়া থেকে আনারস নিয়ে গিয়ে সেখানে আনারসের পাতা থেকে সুতো তৈরি করে সেই সুতো থেকে অনারসী শাড়ি তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছে। জানা যায় একটি আনারস থেকে আনুমানিক চল্লিশটি পাতা পাওয়া যায়।একশটি পাতা থেকে ১৫ গ্রাম পর্যন্ত সুতো পাওয়া যায়।আনদুঃখের বিষয় আমাদের উত্তরবঙ্গ থেকে আনারস কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে নিয়ে গিয়ে বেসরকারী প্রতিষ্ঠানটি আনা রসি শাড়ি তৈরি করতে পারলেও আমাদের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি কুটির শিল্প গড়তে যেসব কাঁচামালের প্রয়োজন থাকা দরকার তার সব কিছু থাকলেও আমাদের সরকার আনারসের পাতার সুতো দিয়ে তৈরি আনারসি শাড়ি আমাদের বঙ্গ ললনা দের গায়ে তুলতে কেন ব্যর্থ এই প্রশ্ন উত্তরবঙ্গের আপামর মানুষের। উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জের সাংসদ কার্তিক চন্দ্র পালকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন রাজ্য সরকারের কুটির শিল্প দপ্তরের উদ্যোগে আনারসের পাতা থেকে সুতো তৈরি করার এই প্রকল্পটি বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং এবং উত্তর দিনাজপুর জেলায় করা অত্যন্ত জরুরী।উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রয়োজন কৃষিভিত্তিক শিল্প।শুধু আনারস থেকেই শিল্প হবে তা নয়,পাট ও ধান থেকেও শিল্প গড়ার চেষ্টা করা হবে বলে সাংসদ কার্তিক চন্দ্র পাল মনে করেন।