‘ভিক্টর নো ফ্যাক্টর’, পাত্তাই দিচ্ছে না তৃণমূল
1 min read‘ভিক্টর নো ফ্যাক্টর’, পাত্তাই দিচ্ছে না তৃণমূল
জাতীয় কংগ্রেসের(INC) নয়া সভাপতি নির্বাচনের দিনেই বাংলার বুকে ঘটে গিয়েছে একটি ঘটনা। উত্তর দিনাজপুর(North Dinajpur) জেলার দাপুটে বাম নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক আলি ইমরান রমজ(Ali Imran Ramij) যিনি ভিক্টর(Victor) নামেই বেশি পরিচিত তিনি কলকাতায় এসে প্রদেশ কংগ্রেসের কার্যালয় বিধানভবনে দলবদল করেছেন।ফরওয়ার্ড ব্লক(Forward Block) ছেড়ে তিনি যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। আর এই যোগদানের হেতু অনেকেই মনে করছেন, উত্তর দিনাজপুরে কংগ্রেস এবার শক্তিশালী হবে। আবার কেউ কেউ মনে করছেন এই যোগদানের হেতু উত্তরবঙ্গে বাম-কংগ্রেস সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হবে। কিন্তু সব থেকে বড় কথা যে তৃণমূলের(TMC) বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলে ভিক্টর জার্সি বদল করলেন সেই তৃণমূল এই ঘটনাকে পাত্তাই দিতে চাইছে না। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দাবি, ‘জেলায় কংগ্রেস শূন্য। ভিক্টরেরও কোনও অস্তিত্ব নেই।
ভিক্টর নো ফ্যাক্টর।’সত্যিই কী ‘ভিক্টর নো ফ্যাক্টর’? উত্তর দিনাজপুর জেলা দীর্ঘদিন ধরেই বাংলার রাজনীতিতে প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির জেলা হিসাবে পরিচিত। কিন্তু প্রিয়বাবুর অবর্তমানে সেখানে কংগ্রেস ক্রমশ জমি হারিয়ে চলেছে। এর একটা বড় কারণ উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের অন্ধ মমতা বিরোধিতা এবং সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ক কংগ্রেসের পাশ থেকে তৃণমূলের পাশে চলে যাওয়ায়। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪টি কেন্দ্র গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে। কিন্তু ৫টি আসন গিয়েছিল বাম-কংগ্রেসের ঝুলিতে। সেই ছবিটাই আমূল বদলে যায় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। জেলার ৯টি আসনের মধ্যে ৭টি আসনই চলে যায় তৃণমূলের দখলে। মাত্র ২টি আসন যায় বিজেপির দখলে। পরে আবার সেই দুই বিজেপি বিধায়ক যোগ দেন তৃণমূলে। ভিক্টর নিজেও গো হারান হারেন ওই ভোটে। বিজেপি প্রার্থী তাঁর থেকে বেশি ভোট পেয়েছিল একুশের নির্বাচনে। সেই ভিক্টর কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় আদৌ কতখানি লাভ হবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে কংগ্রেস শিবিরেই।ভিক্টর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত পরিবারের ছেলে। ভিক্টরের বাবা প্রয়াত রমজান আলি ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক।
ভিক্টরের কাকা হাফিজ আলম সৈরানি ছিলেন বাম বিধায়ক ও মন্ত্রী। সেই পরিবারের ছেলে হয়ে ২০০৯ সালে ভিক্টর প্রথমবার বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হন উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। সেই নির্বাচন ছিল উপনির্বাচন। তাতে জিতেও যান ভিক্টর। এর ঠিক ২ বছর বাদে জেলার নবগঠিত বিধানসভা কেন্দ্র চাকুলিয়া থেকে প্রার্থী হন তিনি ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে। ২০১১ ও ২০১৬ দুটি ভোটেই জয়ী হন তিনি। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রীতিমত বিপর্যয়ের মুখে পড়েন ভিক্টর। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভিক্টর পেয়েছিলেন প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট। কিন্তু একুশেই সেটা নেমে আসে ১৬ শতাংশে।লড়াকু বাম নেতা বলে পরিচিত হলেও ভিক্টরের সঙ্গে এরপর থেকেই বিবাদ বাঁধে ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য নেতৃত্বের। দল পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আজাদ হিন্দ মঞ্চ গড়ার পরে, ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এর পর থেকেই ভিক্টরকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব নিজেদের দলে টানার জন্য যোগাযোগ করেছিল বলে সূত্রের খবর। কিন্তু ভিক্টর শেষে যোগ দিলেন কংগ্রেসে। যদিও তাতে কংগ্রেসের আদৌ কোনও লাভ হবে কিনা তা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন রয়েছে। কেননা জেলায় এখন কংগ্রেসের অস্তিত্ব সাইনবোর্ড সর্বস্ব হয়ে পড়ে আছে। সেই সঙ্গে রয়েছে গোষ্ঠীকোন্দল। এই সবের সঙ্গে ভিক্টর নিজেও কতখানি মানিয়ে নিতে পারবেন সেই বিষয়েও খটকা আছে।