October 28, 2024

আজ ১৩ ই নভেম্বর কিংবদন্তি জননেতা তথা রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির জন্মদিন।কংগ্রেসের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হলেও পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হলো না শ্রদ্ধা

1 min read

আজ ১৩ ই নভেম্বর কিংবদন্তি জননেতা তথা রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির জন্মদিন।কংগ্রেসের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হলেও পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হলো না শ্রদ্ধা

তনময় চক্রবর্তী রিপোর্ট বর্তমানের কথা আজ ১৩ ই নভেম্বর কিংবদন্তি জননেতা তথা রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির জন্মদিন। ১৯৪৫ সালের ১৩ ই নভেম্বর দিনেই সাবেকি বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার উপজেলা চিচির বন্দরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ছাত্রবস্তা থেকেই সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন রাজনীতির ময়দানে সুবক্তা বলে পরিচিত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। ১৯৭০ সালে যুব কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি।

পরের বছর ১৯৭১ সালে প্রথম সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ওই বছরই লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ কলকাতা থেকে জয়ী হন প্রিয়রঞ্জন। এরপর ১৯৮৪ সালে প্রথম হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে এ জয়ী হয়ে প্রথমবার মন্ত্রী হন।

বাণিজ্য বিষয়ক মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে সেই সময় দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। তবে ১৯৮৪ ও ১৯৯১ সালের ভোটের পর পর পরাজিত হন তিনি। তবে পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে ফের বাজিমাত করে হাওড়া লোকসভা থেকে জয়ের স্বাদ পেয়েছিলেন এই রাজনীতিবিদ।

হাওড়া লোকসভা থেকে এরপর প্রিয় বাবু ফিরে আসেন তৎকালীন কংগ্রেসের দুর্গ বলে পরিচিত উত্তর দিনাজপুরে। এখানে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে ১৯৯৮ সালে প্রথমবার দাঁড়িয়ে সিপিআইএম প্রার্থী সুব্রত মুখার্জির কাছে সামান্য কিছু ভোটে পরাজিত হলেও ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সুব্রত মুখার্জী কে বিপুল ভোটে পরাজিত করে সংসদের আঙিনায় প্রবেশ করেছিলেন প্রিয়রঞ্জন।

বাজপাই সরকারকে লোকসভার ভিতরে পর্যদুস্ত করতে কংগ্রেস হাইকমান্ড গুরুদায়িত্ব সঁপে দিয়েছিল প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির কাধে। লোকসভায় কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক ছিলেন তিনি। এরপর ২০০৪ সালে সিপিআইএম প্রার্থী মিনতি ঘোষ কে হারিয়ে দ্বিতীয়বার রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হন তিনি। লোকসভা ভোটে বিপুল সাফল্য পায় কংগ্রেস।

 

বামেদের সমর্থনে কেন্দ্র সরকার গড়ে কংগ্রেস।  প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট এ বাংলা থেকে জায়গা পান প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রকের দায়িত্ব পান তিনি। এর কিছুদিন পরেও তার কাধে আরো দায়িত্ব দেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। জলসম্পদ এরপরে কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক এবং তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রীর দায়িত্ব সামলান তিনি। বিচক্ষণ ও সুবক্তা হওয়ার কারণে অন্যান্য জাতীয় স্তরে নেতাদের দক্ষতা থেকে কয়েকজন এগিয়ে ছিলেন এই রাজনীতিবিদ।

রাজনীতির ময়দানে হিন্দি ,ইংরেজি সহ বিভিন্ন ভাষায় যথেষ্ট দক্ষ ও সাবলীল ছিলেন দীর্ঘদিনের এই অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। সে কারণে তাকে সমীহ করে চলতেন বিরোধীরাও। এমনকি দলের সংকটের সময় চাণক্যের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার ও যথেষ্ট কৌশল জানার ছিল তার। শুধু রাজনীতির ময়দান এ নয়।

 

পাশাপাশি ফুটবল বিশ্বে ও যথেষ্ট খ্যাতি ছিল তার। ফুটবল অন্ত প্রাণ হিসেবে সুপরিচিত এই বঙ্গসন্তান দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন প্রিয় বাবু। সাংসদ থাকাকালীন রায়গঞ্জ তথা   উত্তর দিনাজপুর জেলাকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রিয় বাবু। দীর্ঘদিন কোমায় আচ্ছন্ন থেকে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন তিনি।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত জীবন যুদ্ধের লড়াইয়ের হেরে যান পঞ্চম বারের সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। ২০১৭ সালের ২০ নভেম্বর ৭২ বছর বয়সে প্রয়াত হন তিনি। তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা সম্মান জানাতে রায়গঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড়ের ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে উন্মোচিত করা হয় তার পূর্ণ বয়ান মূর্তি। এছাড়া কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রাক্তন পৌরপতি কার্তিক চন্দ্র পালের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শহরের শ্রী কলোনিতে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির একটি আবক্ষ মূর্তি বসানো হয়।

 

এবছরও যথাযথ মর্যাদা সহকারে জেলা জুড়ে শ্রদ্ধা জানানো হল  সকলের প্রিয় প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি কে।আজ সকালে  কালিয়াগঞ্জ শহরের শ্রীকলোনির ভবানী মন্দিরের সামনে কালিয়াগঞ্জের ভূমিপুত্র, রায়গঞ্জের সাংসদ তথা প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাস মুন্সীর ৭৬তম জন্মদিন পালন করলো কালিয়াগঞ্জ শহর কংগ্রেস ও ব্লক কংগ্রেসের সদস্যরা।শ্রীকলনীর ভবানিমন্দিরে অবস্থিত প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সীর মর্মর মূর্তিতে মাল্যদান করেন কালিয়াগঞ্জের ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সুজিৎ দত্ত,শহর কংগ্রেস সভাপতি তুলসী জয়সোয়াল, কংগ্রেস নেতা পঙ্কজ পাল,প্রাক্তন কমিশনার মঞ্জুরী দত্ত দাম,যুব নেতা সৌম্য দত্ত,গিরিধারী প্রামানিক ,গোপাল পাল সহ অনেকেই।এদিকে ভোট বৈতরণী পার হতে কালিয়াগঞ্জে সহ সমগ্র জেলাজুড়ে এখনো প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি সম্বল কংগ্রেসের। মালদহের গনি খানের মতো উত্তর দিনাজপুরের মানুষের মধ্যে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি কে ঘিরে আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। বর্তমানে দুই নেতা প্রয়াত। তবুও তাদেরকে সামনে রেখে ভোট প্রচারে নামে কংগ্রেসের ভোট ম্যানেজাররা। প্রান্তিক শহর কালিয়াগঞ্জ এর শ্রী কলোনির বাড়ি থেকে একদিন জাতীয় স্তরের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি নিজের মাটির কথা ভোলেন নি । এলাকার সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে অবাধ মেলামেশা, তাদের সমস্যার কথা দল-মত বিচার না করে পাশে দাঁড়ানোর মানুষটি ছিলেন সকলের প্রিয় প্রিয় দা। এবছর ৭৮ তম জন্মদিন পালন হোল ।  বর্তমানের কথার পক্ষ থেকেও প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি প্রতি রইল শ্রদ্ধা।তবে দুঃখের বিষয় সকলের প্রিয় নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির হাত ধরে অনেকের কালিয়াগঞ্জ এ রাজনীতির আঙিনায় হাতেখড়ি হলেও আজ কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা র থেকে এই মহান নেতাকে শ্রদ্ধা জানানো হলো না ।যা সত্যি খুব ই দুঃখ জনক ঘটনা ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *