October 28, 2024

চিনের বদলে দীপাবলির বাজার এবার দেশীয় বাতির দখলে

1 min read

চিনের বদলে দীপাবলির বাজার এবার দেশীয় বাতির দখলে

ধোঁয়া, আগুন, দূষণ! তাই আতসবাজিকে না। বাহারি আলোকে হ্যাঁ বলছেন আমজনতা। সেইসঙ্গে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কাকে হারিয়ে আশার আলো (Lights) দেখাতে দীপাবলিকেই অস্ত্র করতে চান পরিবেশপ্রেমীরাও। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে প্রচার। যেখানে এই দীপাবলিতে যে কোনও ধরনের বাজির উত্‍সব থেকে বিরত থাকতে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন রাখা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, এ বারের উত্‍সবও হোক শুধুই আলোর। শব্দের নয়। তাই বাজি বাজার থেকে মুখ ফিরিয়েছেন সচেতন মানুষ। ভিড় জমছে নিরাপদ আলোর পসরায়। কলকাতায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ফের বাড়ছে। আশঙ্কা, মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে। তাই এবছরও দীপাবলি হোক নতুন আশার আলোর, শব্দের দৌরাত্ম্যের নয়, এমনটাই মনে করছেন বেশিরভাগ ক্রেতা। যেকারণে, বৃষ্টিভেজা সোমবারের সন্ধেতে চাঁদনী চকের আলোর বাজারে ভিড় ছিল দেখার মতো। বিভিন্ন আলোয় ঝিলমিল করছে চাঁদনী চক, এজরা রোডের বাজার। তবে এবছর দীপাবলির আলোতে থাবা বসাতে পারেনি চিন। বিক্রেতারা জানালেন, চিন থেকে পণ্যবোঝাই কন্টেনার ঢোকেনি এখনও। যেকারণে বাজারজুড়ে দিল্লি ও বেঙ্গালুরুর লাইটের সম্ভার। চিনা আলো সস্তা হলেও লাভ কম। ‘দেশি’ আলোর দাম একটু বেশি হলেও লাভ বেশি। ক্রেতারাও নিজের দেশের জিনিস শুনে দাম নিয়েও বেশি মনমরা হচ্ছেন না।

গতবছরও সাবেক পিদিম-মোমবাতির আদল ধরে রেখেও লুকোনো টুনিতে আলো জ্বেলেছিল চিন। পাশাপাশি ছিল চৈনিক এলইডি বাতির রমরমা। প্রতিযোগিতায় পাল্লা দিতে না পেরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল সাবেক টুনিবাল্বগুলির। এবছর সেই চিনা আগ্রাসন উধাও। বাজার মাতাচ্ছে দেশীয় বাতি। সোমবার সন্ধেয় খদ্দের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন চাঁদনি চকের আবদুল মান্নান। জানালেন, ৩০-৪০ টাকায় যে চিনা আলো মিলছিল, দেশীয় বাজারে তৈরি সেই আলোরই দাম পড়ছে ১০০ টাকার কাছাকাছি।

 

 আবদুল বললেন, ‘চিনা মাল না ঢোকায় গাঁটের কড়ি বেশি খসছে ক্রেতাদের।’ মুচকি হেসে বললেন, ‘অনেকেই চিনা মাল খুঁজছেন। তাঁদের দিল্লির মালই চিনের বলে গছিয়ে দিচ্ছি।’ রাজ্যে কী ভাবে ঢুকছিল চিনা আলো? ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আট-দশ জন বড় ব্যবসায়ী মিলে উত্‍সবের কয়েক মাস আগেই চিনের বিভিন্ন কারখানায় বরাত দিতেন। তারপর সে দেশ থেকে জাহাজে চাপিয়ে তা পাঠানো হত রাজ্যে।

চিনে আলো তৈরির কাঁচামালের দাম অনেক কম। তাই দামও কম। ঝাঁপিয়ে পড়তেন ক্রেতারা। কেন্দ্রের কড়াকড়িতে এবছর চিনা পণ্যের আমদানির সুযোগ খুবই কম। ইতিমধ্যেই কলকাতার এজরা স্ট্রিট এবং চাঁদনি, দু’জায়গাতেই চেন, মালা, ফুলগাছ থেকে প্যানেলে নানান ধরণের জ্বলতে থাকা আলোয় সেজে উঠেছে। আলোর প্যানেলে কী ডিজাইন হবে মোবাইল থেকেও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। মাঝবয়সি বাতি বিক্রেতা মহম্মদ ফিরোজ জানালেন, তাঁর কাছে এলইডি আলোর সম্ভার ৮০ টাকা থেকে শুরু। আরজিবি বল লাইট তার কাছে মিলবে ১০০ টাকায়। এবছরের এক্সক্লুসিভ আলো ‘হানি বি’। জ্বালালে মনে হবে মৌমাছি উড়ে বেড়াচ্ছে। চেনের দাম দুশো টাকা। ৩৫ ফুটের পাম্প লাইটের বাজারদর ১০০ টাকা। ২০০ ফুটের পাইপ লাইট ৬০০ টাকা। সামনেই কালীপুজো। তা সত্ত্বেও বৃষ্টি। তাই কিছুটা মুখভার দোকানিদেরও। তবে চাঙ্গা চাঁদনি, এজরা স্ট্রিটের বাতির বাজার। নিজের বাড়িকে সাজিয়ে নিতে হাতে খানিক সময় নিয়ে ঢুঁ মারছেন অফিস ফেরতা লোকজন। দরদাম করে কিনে নিচ্ছেন পছন্দসই আলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *