October 28, 2024

স্বনির্ভরতার দিশায় মাঝিয়ান ফার্মে চলছে খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁস ও সোনালি মুরগি উৎপাদনের নুতন দিগন্ত –

1 min read

স্বনির্ভরতার দিশায় মাঝিয়ান ফার্মে চলছে খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁস ও সোনালি মুরগি উৎপাদনের নুতন দিগন্ত –

তপন চক্রবর্তী-কালিয়াগঞ্জ,২৩ সেপ্টেম্বর:বিগত দুই বছরের বেশি সময় করোনার অতিমারীর ফলে শহর ও গ্রামের দুস্থ্য মানুষেরা অনেককেই কাজ হারাতে হয়েছে।নুতন করে কাজ ফিরে পাবার নেই কোন সম্ভাবনা।ফলে তাদের জীবনে কোভিড অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে।এই ক্ষত সহজে মুছে যাবার নয়।তাই তাদের জীবন এখন বড় দুর্বিষহ।তাই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র গ্রামগঞ্জের মানুষদের নুতন করে বেঁচে থাকার দিশা ও স্বপ্ন দেখাতে এবং স্বনির্ভর করার মন্ত্রে এক বড় পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে এসেছে অত্যন্ত আঁটফিকতার সাথে।এই পরিকল্পনার মাধ্যমে কি ভাবে গ্রামেগঞ্জের কর্মহীন ব্যক্তিরা নুতন উদ্যমে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে পারে তার জন্য মাঝিয়ান বিজ্ঞান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ দিনাজপুর মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বরিষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ও কেন্দ্র প্রধান শিবানন্দ সিংহ জানান খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁস ও সোনালী মুরগি পালনের প্রশিক্ষণ দেবার জন্য সেখানে সরকারি ভাবে বিশাল পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।এই প্রকল্পের মাধ্যমে বেকার যুবক যুবতীদের সাথে সাথে গ্রামের পিছিয়ে থাকা দুস্থ্য মানুষেরা স্বাবলম্বী হতে পারে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।এই কেন্দ্রে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে আসা দুস্থ্য ব্যক্তিদের যেমন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।তেমনি প্রশিক্ষণের পর তাদের খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁস ও সোনালী মুরগি এই কেন্দ্র থেকে বিনা পয়সায়

দেওয়া হছে নিজেকে স্বনির্ভর করে তুলবার জন্য।মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান ফার্মের প্রধান শিবানন্দ সিংহ এক সাক্ষাৎকারে জানান তাদের কৃষি বিজ্ঞান ফার্মের মাধ্যমে বেশ কিছু দিন থেকেই খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁস ও সোনালী মুরগির উৎপাদন নিয়ে কাজ করা হচ্ছে গ্রামীন দুস্থ্য ব্যক্তিদের স্বনির্ভর করার প্রয়োজনের দিকে তাকিয়ে।তিনি বলেন মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র এখন পর্যন্ত ৬০০০টি খাঁকি ক্যাম্বেল ও ৫০০০টি সোনালি মুরগি পরীক্ষামূলক ভাবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গ্রামীন যুবক যুবতী ও স্বনির্ভর মহিলাদের দেওয়া হয়েছে বিনা মূল্য।খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁস ও সোনালি মুরগির ডিম মেশিনের মাধ্যমে বাচ্চা ফুটিয়ে তোলার প্রক্রিয়া চলছে পুরোমাত্রায়।মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রাণী বিজ্ঞানী স্বরূপ সিংহ বলেন

 

তাদের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রেযে বাচ্চা গুলি তৈরি করা হচ্ছে সেই বাচ্চা গুলিকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত প্রগতিশীল প্রাণী পালকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে যাতে গ্রামীন দুস্থ্য প্রাণী পালকগন খাঁকি ক্যাম্বেল হাস ও সোনালী মুরগির প্রতিপালন করে ব্যবসার মাধ্যমে অতিরিক্ত আয় করে পরিবার পরিজনদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলতে পারে।যে সমস্ত দুস্থ্য মানুষেরা করোনার সময় থেকে অত্যন্ত অসহায় অবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন গুজরান করছে তাদের নুতন করে স্বনির্ভর করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের দক্ষ সহায়ক শেখ ইসাহক এবং মামুন রশিদ বলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র যে ভাবে জেলার বিভিন্ন ব্লকের যুবক যুবতী সহ স্বনির্ভর মহিলাদের উন্নয়নের সাথে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য কাজ করে চলেছে তা এক কথায় অভিনব বলা যায়। এই কেন্দ্রে সারা বছর ধরে সাধারণ কৃষক,মৎসজীবি প্রাণী পালকদের নানা ভাবে উপকৃত করা হয়ে থাকে প্রশিক্ষণ দেবার মধ্য দিয়ে।প্রাণী বিজ্ঞানী স্বরূপ সিংহ বলেনমাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে আধুনিক উন্নতমানের যন্ত্রের সাহায্যে হাঁস ও মুরগির বাচ্চা ফুটিয়ে তোলার কাজ পূর্নউদ্যমে শুরু করা হয়েছে।

 

তিনি বলেন তারা প্রথমে উন্নতমানের অত্যধুনিক যন্ত্রে ডিমগুলোকে রেখে তাপ দেওয়ার ব্যবস্থা করে।এরপর ৪৫ ডিগ্রি এঙ্গেলে একটি যন্ত্রের সাহায্যে ডিম গুলিকে ঘোরানো হয়ে থাকে। ঐ যন্ত্রে ১৮ দিন টানা একভাবে থাকার পর ডিম গুলিকে ইনকিউবেটর যন্ত্রে স্থানান্তরিত করা হয়।এর পর ২১ দিনের মাথায় সোনা মুরগির ডিম এবং ২৭ দিনের মাথায় খাঁকি ক্যাম্বেলের ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।এক প্রশ্নের উত্তরে মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান ফার্মের প্রাণী বিজ্ঞানী স্বরূপ সিংহ পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বলেন একজন গ্রামীন হাঁস মুরগি পালকেরা কি ভাৱে উন্নত প্রথায় খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁস ও সোনালী মুরগি চাষ করে অতিরিক্ত মুনাফা পেতে পারে তার প্রশিক্ষন দিয়ে থাকে।তিনি বলেন একটি দেশি হাঁস যেখানে পালন করে প্রাণী পালকেরা সারা বছরে ৭০-৮০টা ডিম পায় সেখানে খাঁকি ক্যাম্বেল হাসের কাছ থেকে সারা বছরে ২৮০-৩০০টি ডিম প্রানী পালকেরা পেতে পারে।অন্যদিকে যেখানে দেশি মুরগি সারা বছরে ৮০-৯০টি ডিম দেয় সেখানে সোনালী মুরগি সারা বছরে কম করেও ২৫০টির অধিক ডিম দিতে সক্ষম হয়। উৎপাদন বেশি হবার কারনেই দেশির চেয়ে উন্নত প্রজাতির হাস মুরগি পালন করে

গ্রামের সাধারণ প্রাণী পালকেরা অতি সহজেই অতিরিক্ত আয় করে স্বনির্ভর হতে পারে নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়।মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞানী কেন্দ্রের প্রধান শিবানন্দ সিংহ বলেন গ্রামীন দুস্থ্য পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষদের স্বনির্ভর করবার লক্ষে আমরা ব্যাপক আকারের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।আমরা গ্রামের দুস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ব্যাক্তিদের ও ফার্মারস ক্লাবের সদস্যদের হাতে বিনা পয়সায় খাঁকি ক্যাম্বক হাঁসের বাচ্চা ও সোনালী মুরগি তুলে দেবার ব্যবস্থা করছি বলে জানান।তা ছাড়াও গ্রামের বেকার যুবক যুবতীরা যারা কাজ না পেয়ে ঘরে বসে আছে তাদের প্রতি আমাদের আহ্বান এই ভাবে ঘরে বসে না থেকে নিজের জীবন জীবিকার শ্বার্থে যুবক যুবতীদের সরকার থেকে দেওয়া সুযোগ সুবিধাগুলি নিজেদের স্বার্থে গ্রহণ করে বেকার সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের সহায়ক সেখ ইসাহক বলেন ইচ্ছুক যুবক যুবতীরা আমাদের মাঝিয়ান কৃষি বিজ্ঞান ফার্মে এসে যোগাযোগ করে স্বনির্ভর হবার সুযোগ সুবিধাগুলি নিতে হলে প্রয়োজনে কৃষি বিজ্ঞান ফার্মের সাথে যোগাযোগ করতে পারে বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *