এবার বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির কারিশমা কি ব্রাত্য । প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে
1 min readএবার বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির কারিশমা কি ব্রাত্য ? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে
তনময় চক্রবর্তী প্রতিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটা সময় গমগম করত উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এডিকোলোনি দাশমুন্সি বাড়ির চেহারা। আজ সেই বাড়ি প্রায় শ্মশানের রূপ নিয়েছে। দ্বিতল বিশিষ্ট প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির শ্রী কলোনির বাড়ি যেন আজ শুধুই সুনসান। একটা সময় তার বাড়ি থেকেই রাজ্যের কারা কারা কংগ্রেসের টিকিট পাবেন তানি গুটি সাজানো হতো। আজ সেই বাড়ি একেবারে নিস্তব্ধতা। একজন কর্মকর্তা ও এখন আর এই বাড়িতে নেই। গত কয়েক বছর আগে বাড়ির কর্তা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছেন। তবে যাওয়ার আগে তিনি তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন তার সুযোগ্য সহধর্মিনী দীপা দাশমুন্সি কে।
দীপা রাজনীতিতে নেমে প্রথমেই বাজিমাত করে দিয়েছিলেন। প্রথমে গোয়ালপুকুর বিধানসভা থেকে লড়াই করে জয়ী হয়ে ২০০৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল অব্দি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিধায়ক হন। এরপর ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে র আগে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ার পর উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকদের অনুরোধে রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে প্রথমবার দাঁড়িয়ে জয়ী হন তিনি। সেই সময় তিনি এখানে সিপিএম প্রার্থী কে বিপুল ভোটে হারিয়ে এই আসন থেকে লোকসভার সদস্য হন। সেই ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল অব্দি তাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের মন্ত্রী পদ সামলাতে হয় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে। এরপর লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেসের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাস্টার স্ট্রোক এ ধরাশায়ী হয়ে পড়েন দীপা দাশমুন্সি। একটি মাত্র কারণ সেবার দীপা দাশমুন্সি কে লড়াই করতে হয়েছিল একদিকে যেমন ঘরে অন্যদিকে বাইরে। এই আসনের সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয়েছিল প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ভাই অর্থাৎ দীপা দাশমুন্সির দেওর সত্যরঞ্জন দাশমুন্সি কে।সেই নির্বাচনে কিছু ভোটের ব্যবধানে হেরে যেতে হয় দীপাকে । তার সেখান থেকেই যেন স্বপ্নভঙ্গ হলো দীপা দাশমুন্সির। একদিকে কেন্দ্রে কংগ্রেস এর বদলে বিজেপি সরকার। অপরদিকে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। সবকিছুই যেন তার হাতের নাগালের বাইরে। এরপর ২০১৯ সালে পুনরায় রায়গঞ্জ লোকসভা আসনের তিনি দাঁড়ালেও সেবার ও তিনি হেরে যান মোহাম্মদ সেলিমের কাছে। গত লোকসভা নির্বাচনের সময় একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল এবং সর্বত্র উঠেছিল দীপা দাশমুন্সি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন। কিন্তু সব জল্পনা কে অবসান ঘটিয়ে কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাশমুন্সি জানিয়ে দেন তিনি কংগ্রেসের ছিলেন কংগ্রেসে আছেন এবং আগামী দিনেও থাকবে। আর তাই এবারের লোকসভা নির্বাচনে তিনি কংগ্রেসের টিকিটেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্র থেকে। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায় তিনি তৃতীয় স্থান দখল করেন। এরপর থেকে তিনি অনেকটাই মুখ ঘুরিয়ে নেয় উত্তর দিনাজপুর জেলা বাসীর কাছ থেকে। আর তাকে দেখা যায় না বছরের কোন সময় জেলার বিভিন্ন প্রান্তেঅনুষ্ঠানে কিংবা সাংগঠনিক কোন আলোচনা সভা কে। আবারো বিধানসভা নির্বাচন এখন চলে এসেছে। সর্বত্র মাঠে ময়দানে সব রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার জন্য। তবুও দীপা দাশমুন্সি দেখা নেই এই জেলাতে। যদিও একদিনের জন্য তিনি এসেছিলেন। তাই শ্রী কলোনি শ্রী যেন হারিয়ে গেছে আজ। শ্মশানের নিস্তব্ধতায় ভরে গিয়েছে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি বাড়ি ।যদিও বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম এর সঙ্গে জোট করে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করছে উত্তর দিনাজপুর জেলায় জাতীয় কংগ্রেস। তবুও কোথাও দেখা যাচ্ছে না প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সেই কারিশমা ভরা ফ্লেক্স কিংবা দেওয়াল লিখনে দাশমুন্সি কথাটা ব্যবহার। তাহলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এবার বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি কারিশমা কি ব্রাত্য হতে চলছে ?