October 28, 2024

ঘটনাবহুল দুই হাজার কুড়ি কে বিদায় জানিয়ে আসছে ২০২১ , বর্ষশেষ অনুষ্ঠানে লাগাম ছাড়লেই বিপদ,  তাই বিধি-নিষেধ পালন করে আনন্দ করুন।

1 min read

ঘটনাবহুল দুই হাজার কুড়ি কে বিদায় জানিয়ে আসছে ২০২১ , বর্ষশেষ অনুষ্ঠানে লাগাম ছাড়লেই বিপদ,  তাই বিধি-নিষেধ পালন করে আনন্দ করুন।

তনময় চক্রবর্তী ঘটনাবহুল এই বছর কে বিদায় দিয়ে ইংরেজির নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে জোরদার প্রস্তুতি চলছে।মাঝখানে মাত্র আরেকটি দিন। তারপরে বিদায় নিবে দুই হাজার কুড়ি।  কিন্তু সত্যিই কি দুই হাজার কুড়ি র সমস্ত প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠা যাবে ২০২১ এ। সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর নেই কারো কাছে। তবে বছর শেষে এসে  বেশিরভাগ এর মধ্যেই যেন একটা বেপরোয়া ভাব। আর সেই লাগামছাড়া মানসিকতা নিয়েই তারা গা ভাসিয়ে দিচ্ছে উৎসবের আনন্দে। আর এই অত উৎসাহীদের রাস টানতে আবার আদালতকেই হস্তক্ষেপ করতে হলো।

রাজ্যে কোভিদ বিধি মেনেই যাতে বর্ষ বিদায় বর্ষবরণ উৎসব পালিত হয় তা সুনিশ্চিত করতে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কে। আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছেন করণা আবহে এই উৎসব পালন করতে গিয়ে কোথাও যাতে মাত্রাছাড়া ভীর না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে পুলিশ প্রশাসনকেই। এর জন্য কোন জনবহুল জায়গায় সব ব্যবস্থাই সরকারকে নিতে হবে। সেইসঙ্গে জনসমাগমের স্থানগুলিতে নিয়মিত জীবাণুনাশক স্প্রে করা বা জনগণ যাতে মাক্স অবশ্যই ব্যবহার করেন সে ব্যাপারেও প্রশাসনকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। অনেকেই বলবেন হয়তো সব ব্যাপারেই আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হয় নাকি। এক্ষেত্রে তো তেমন কোনো প্রয়োজনই ছিল না। এখনতো সারাদেশে ও এই রাজ্যে মোটামুটি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে।

৯৬ শতাংশ আক্রান্ত ই সুস্থ হয়ে উঠেছেন । তাহলে কেন এত কড়াকড়ি।  আবার রাজনৈতিক সমাবেশ রোড শো যদি চলতে পারে তাহলে আনন্দ উৎসব কেন নয় ?  এই প্রশ্ন উঠছে। গোটা বছরটাই যেখানে করোনা  আতঙ্কে ঘর বন্দী অবস্থায় দিন কেটেছে সেখানে বছরের শেষে একটু আনন্দ করলে কিবা এমন এসে যাবে। কিন্তু না সত্যিই এসে যাবে বৈকি। বর্ষ শেষ বা বর্ষ বরনে ক্ষণিক আনন্দের মাশুল দিতে হতে পারে আমাদের সকলকেই। আর তাই আদালতের নির্দেশের ও প্রয়োজন ছিল। যেমন এর আগে দুর্গাপুজো কালীপুজো তে দর্শনার্থীদের পুজোয় মণ্ডপে প্রবেশ করতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল হাইকোর্ট। সেই  সময়  ছট পুজো, ঈদ মহরম এ ও  জনসমাগম নিয়ন্ত্রিত করা হয়। ফলে ওইসব ক্ষেত্রে সংক্রামন মাত্রাতিরিক্ত হয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু এবার বড়দিনের সুনির্দিষ্ট তেমন কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় বড় বড় জায়গায় যেভাবে মানুষের ঢল নামে তাতে কোন দূরত্ব বিধি মানার কোনো সম্ভব ছিল না। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে কোন কোন জায়গায় বিকেলের পর থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। পুলিশের তৎপরতায় অবশ্য কিছু সময়ের মধ্যে অবস্থা স্বাভাবিক হয়েছিল। কিন্তু সেদিন রাস্তায় বেরোনো মানুষজনের বেশিরভাগেরই মুখে ছিলনা কোন মাক্স। ইচ্ছাকৃত   হোক কিংবা অনিচ্ছাকৃত এই মাক্স না পড়ার অনিহা যে কতটা বিপদ হতে পারে সেই ধারণাও  যেন কারণ নেই। শুধু কোলকাতা নয় কলকাতার বাইরে ও বিভিন্ন সরকারি ও বিনোদন পার্কেও প্রচুর ভিড় হয়। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখে আদালত।

 

বর্ষশেষে জনসমাগম যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেই আশঙ্কা থেকেই আবারো আদালত আরোপ করে বিধি নিষেধ। তবে আশঙ্কার আরো কারণ আছে ব্রিটেনে নতুন ভাবে যে করোনাভাইরাস এর সন্ধান মিলেছে তার সংক্রমণ শক্তি নাকি ৭০  শতাংশ বেশি। আর এদেশে ব্রিটেন ফেরত কুড়ি জনের দেহে এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। এমনকি কলকাতাতেও লন্ডন ফেরত এক যুবকের মধ্যে এই সংক্রমণ ধরা পড়েছে। বৃটেনের সঙ্গে আপাতত ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত উড়ান চলাচল বন্ধ রেখেছে ঠিক ই । কিন্তু ২৫ শে নভেম্বর থেকে ২৩ শে ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন বিমানবন্দরে নেমেছে ৩৩ হাজারেরও বেশি যাত্রী। নতুন প্রকারের এই ভাইরাসে ১৭ রকমের  পরিবর্তন ঘটেছে বলে প্রধান বিজ্ঞান উপদেষ্টা কে বিজয় রাঘবন জানিয়েছে। আর তাই এটি খুবই মারাত্মক এবং সংক্রামক। যদিও খুব শীগ্রই এদেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়ে যাবে। এবং নতুন রকমের করোনাভাইরাস এর উপরে ও  সেই ভ্যাকসিন সমানভাবে কাজ করবে বলে জানা গেছে। তাও উদ্বেগ কাটিয়ে ওঠা যাচ্ছে না। বিজ্ঞানীরা বলছেন এই নতুন প্রকারের ভাইরাস অনেক বেশি সংক্রমণ তার সঠিক প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। সব রকম সর্তকতা অবলম্বন  এবং মাক্স পরা স্যানিটাইজার এর ব্যবহার আর দূরত্ব বিধি মেনে চলতে পারলেই এই ভাইরাসের  ও মোকাবেলা  করা সম্ভব বলে তাদের অভিমত। তাই লাগামহীন না হয়ে আর কয়েকটা দিন যদি একটু নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করা যায় তাতে কিবা এমন  ক্ষতি।  তবে রাজনীতি সমাবেশে নিয়ন্ত্রণ না থাকলে শুধু শুধু বড় বড় শপিং মল, সরকারি ও বিনোদন পার্কে করোনা  বিধি-নিষেধ করে কোন লাভ হবে কিনা এ প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। নিয়মকানুন নিয়ন্ত্রণ কি শুধু অরাজনৈতিক ভিড়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। সাবধান হওয়ার দায় কি শুধু নাগরিকদের। রাজনৈতিক নেতৃত্বের নয়।তারা সেটাও মনে করছেন। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত এব্যাপারে ভাবনা চিন্তা করা । সাধারণ মানুষের জন্য লাগামহীন না হয়ে একটু সচেতনতা বোধ তাদেরও থাকা দরকার। আর তাই ২০২০ শেষলগ্নে দাঁড়িয়ে সবার ই প্রার্থনা আগামী বছরে এভাবে  যেন কাটাতে না হয়। নতুন বছর যেন নতুন আশা, ভরসা প্রত্যাশা  নিয়ে আসে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *