October 28, 2024

কালিয়াগঞ্জে নতুন বাসস্ট্যান্ড কে ঘিরে দাদার পোস্টার কিসের ইঙ্গিত ?

1 min read

কালিয়াগঞ্জে নতুন বাসস্ট্যান্ড কে ঘিরে দাদার পোস্টার কিসের ইঙ্গিত ?

জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ, উঃ দিনাজপুর।কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার বয়স ৩৩ বছরে পদার্পণ করলো। বামফ্রন্ট জমানায় কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার জন্ম, সাল টি ছিল ১৯৮৭। দীর্ঘ সময় কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার পৌর বোর্ড ছিল কংগ্রেস পরিচালিত। ২০১৫ সালে শেষবারের পৌর নির্বাচনে কংগ্রেস পরিচালিত পৌর বোর্ড গঠনের পর ২০১৬ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক শিবিরে দল ত্যাগের হিড়িকে কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস পরিচালিত পৌর বোর্ড তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌর বোর্ডে রুপান্তরিত হয়। তারপর থেকেই রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার এবং কালিয়াগঞ্জ তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌর বোর্ড এর সমন্বয় যোগসুত্র ধরে শুরু হয় কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গের মা মাটি মানুষ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় ও উদ্দ্যোগে বিভিন্ন দপ্তরের থেকে আর্থিক সহায়তা।

 

এই ময়কালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহন মন্ত্রী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী যিনি তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক আঙ্গিনায় উঃ দিনাজপুর জেলার দলের পর্যবেক্ষকের দ্বায়িত্বে ছিলেন বটে। আর এই শুভেন্দু অধিকারী বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস দ্বারা মিরজাফর, বেইমান, গাদ্দার ইত্যাদি শব্দে আখ্যায়িত হয়েছেন কারণ গত ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একরাশ অভিযোগ তুলে বিজেপি রাজনৈতিক দলে যোগদান করেছেন।

২০১৬ সালে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে কংগ্রেস পরিচালিত পৌর বোর্ড কালিয়াগঞ্জ পৌরসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের পরিচালিত পৌর বোর্ডে পরিনত হয় আর এই পৌর বোর্ডের পৌর পতি হন কার্তিক চন্দ্র পাল যিনি ১৯ ডিসেম্বর থেকে কালিয়াগঞ্জ তথা উঃ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কতৃক রাহু, মিরজাফর, বেইমান ও গাদ্দার শব্দে আখ্যায়িত হয়েছেন কারণ কার্তিক চন্দ্র পাল তিনিও শুভেন্দু অধিকারীর হাত টি ধরেই বিজেপি দলে যোগদান করেছেন। কালিয়াগঞ্জ বিবেকানন্দ মোড়ে পুরোনো বাসস্ট্যান্ড কে ভেঙ্গে নতুন করে নবরুপে ঝাঁ চকচকে বাসস্ট্যান্ড তৈরী হয়ে গেছে অনেকদিন আগেই। দীর্ঘ ৬-৭ মাস ধরে পরে রয়েছে নতুন বাসস্ট্যান্ডের শুভ উদ্বোধনের অপেক্ষায়। এদিকে একই সাথে গড়ে উঠা উঃ দিনাজপুরের ইটাহারে নতুন বাসস্ট্যান্ডের শুভ উদ্বোধন ঘটা করে হয়ে গেল মাস খানেক আগে কলকাতা থেকে অনলাইন পদ্ধতিতে এবং উদ্বোধন করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রশ্ন থেকে গেল তাহলে একই সাথে তাহলে তৈরী হয়ে যাওয়া কালিয়াগঞ্জ পৌর বাসস্ট্যান্ড টি শুভ উদ্বোধন হলো না কেন? তবে ইটাহারের বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধনের সময়ে কিন্তু কালিয়াগঞ্জে নবনির্মিত বাসস্ট্যান্ডের ভিতরে বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন উপলক্ষে পৌরসভা কর্তৃক মঞ্চ তৈরী করা হয়ে গিয়েছিল এবং লোকমুখে প্রচারিত হয়েছিল পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী আসছেন বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন করতে। দিনের পর দিন চলতে থাকে কিন্তু পরিবহন মন্ত্রীর আর দেখা পাওয়া যাচ্ছে না কালিয়াগঞ্জ শহরে। কিন্তু কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার প্রাক্তন পৌরপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মা মাটি মানুষের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদান্যতায় পৌর প্রশাসক পদে আসীন কার্তিক চন্দ্র পাল হয়তো তখনও পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর ব্যাটিং কৌশল আঁচ করতে পারেন নি হয়তো। এদিকে কার্তিক চন্দ্র পাল দাদাকে দিয়েই উদ্বোধন করাবেন বলে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন কারণ হাজার হোক দাদার অনুগামী বলে কথা, দাদার পথে দাদার সাথে সাথী বলে কথা। পরবর্তী কালে সেই মঞ্চ আর উদ্বোধনের জন্য ব্যবহৃত না হয়ে খুলে ফেলা হলো। কিন্তু মঞ্চ গড়া হলেও সেই সময় থেকে গত ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকায় কোথাও কিন্তু তথাকথিত দাদার ফটো দিয়ে ” কালিয়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড শুভেন্দু অধিকারীর অবদান, দাদার পথে দাদার সাথে ” এমন লিখনিতে কোনো ফ্লেক্স কারো চোখে পরে নি। পোস্টার পরলো কবে এবং জনগন পোস্টার দেখলো কবে ? পরলো ১৮ ডিসেম্বর রাত্রে জনচক্ষুর আড়ালে এবং জনগন দেখলো ১৯ ডিসেম্বর সকালে কালিয়াগঞ্জ পৌর এলাকার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে। এই পোস্টার কে ঘিরে অনেক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলো পোস্টার কে ঘিরে বিতর্ক এই হেডলাইনে। কিন্তু আজোও সেই পোস্টার রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শোভা পাচ্ছে। কিন্তু কালিয়াগঞ্জের জনগন কানাঘুষা করছে , ফিসফিস করে বলাবলি করছে এই পোস্টার কে নিয়ে। কান পাতলেই বা আড়ালে দাঁড়িয়ে শোনা যাচ্ছে এই পোস্টারগুলো নাকি টাঙ্গানোর পিছনে মিরজাফর দাদার বেইমান ভাইয়ের হাত রয়েছে। সত্যি কিনা প্রতিবেদনের প্রতিবেদক সত্যতার যাচাই করার প্রয়োজন মনে করে নি কিন্তু জনগনের ফিসফিসানি কখনও কখনও উচ্চ স্বরে বহিঃপ্রকাশ ঘটে মাত্র। ১৯ ডিসেম্বর দাদার পথে দাদার সাথে মেদিনীপুরের বিজেপির সভায় দাদার হাত ধরেই দ্বিতীয়বার দাদার অনুগামী ভাই। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী, সমর্থক থেকে শুরু করে কালিয়াগঞ্জ শহরের বিভিন্ন প্রান্তের জনগন বলাবলি করছেন দাদার একান্ত অনুগামী স্নেহের ভাই দলবদলের হ্যাট্রিক টা যে কবে করবেন? কিন্তু হ্যাট্রিক টা যদি করেন তবে কোন প্লাটফর্মে এই নিয়েও চায়ের দোকানে গরম চা চুমুক দিতে দিতে শৈত হাওয়ায় বেশ মজা পাচ্ছেন পাবলিক। তবে দিদির অনুগামীরা যারা দিদিকে দেখেই তৃণমূল কংগ্রেস নামক দলটি করেন এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক পদে আসীন এমনকি পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক কালিয়াগঞ্জ পৌর প্রশাসন বোর্ডের সদস্যপদে আসীন তাদের কাছে যেখানে এখনও অবধি পৌর বাসস্ট্যান্ড উদ্বোধন হলো না বা নতুন বাসস্ট্যান্ড টি তৈরী হলো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আর্থিক সহায়তায় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস কর্তৃক আখ্যায়িত মিরজাফর, বেইমান, গাদ্দারের ছবি লাগানো নতুন বাসস্ট্যান্ডের অবদান সহ দাদার সাথে দাদার পথে পোস্টার কালিয়াগঞ্জ শহরে দাঁড়িয়ে আছে এই ভিশনটি কিসের ইঙ্গিত বহন করছে এই নিয়েও হাজারো আলোচনা। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিজেপি তে চলে গেছেন দাদা ও দাদার ভাই কিন্তু কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা বা কালিয়াগঞ্জ তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠন কি দাদার পথে দাদার সাথে হাঁটতে চলেছে আগামী দিনে?

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *