October 28, 2024

তৃণমূলের প্রত্যাঘাতে ঘর ভাঙল সৌমিত্রর, ‘‌মুক্তি দিলাম তোমায়’‌, নোটিস ধরালেন সুজাতাকে

1 min read

তৃণমূলের প্রত্যাঘাতে ঘর ভাঙল সৌমিত্রর, ‘‌মুক্তি দিলাম তোমায়’‌, নোটিস ধরালেন সুজাতাকে

দলবদলের পালায় নাটকীয় মোড়। ঘর ভাঙল বঙ্গ বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতির। শুভেন্দু পর্বের রেশ কাটতে না কাটতেই তৃণমূলে যোগ দিলেন সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করলেন। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তার কিছুক্ষণ পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে কেঁদে ভাসালেন বিজেপি নেতা সৌমিত্র। তৃণমূলের এই প্রত্যাঘাতে রীতিমতো বাকরুদ্ধ তিনি। নিজেই বলছেন, ‘‌স্বপ্নেও ভাবিনি।’‌ছলোছলো চোখে সৌমিত্র বলেন, ‘বাচ্চা মেয়ে, অনেক উচ্চাকাঙ্খা ছিল। জিজ্ঞেস করত, তুমি বিজেপিতে বড় পদ পেলে, আমায় কেন দেওয়া হল না?‌ লোকসভা ভোটে বিষ্ণুপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে একা লড়েছিল। স্বামীর জন্য লড়েছিল।

একই পরিবারের দু’‌জন বড় পদ পাবে, বিজেপিতে এই নিয়ম নেই। অমিতজি, কৈলাসজি ওকে মেয়ের মতো ভালবাসতেন। আজ সুজাতা যা করল, এরপর আর একসঙ্গে থাকতে পারব না। বিয়ের অ্যালবামটা আর তৈরি করা হল না। খাঁ পদবি ছেড়ে দিও। মণ্ডল পদবি নিয়ে যা করার করো। ভাল থেকো সুজাতা। ভালবাসি তোমায়।’‌স্ত্রী সুজাতাকে ডিভোর্সের নোটিসও পাঠিয়েছেন সৌমিত্র। ১০ বছরের ঘর ভাঙায় এদিন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না সৌমিত্র। স্ত্রী-র জন্য কী কী করেছেন তিনি, তালিকা তুলে ধরলেন সাংবাদিক বৈঠকে। শেষে বলেন, ‘‌সুজাতা, তোমায় মুক্তি দিলাম।’‌ সৌমিত্রবাবু ড্রাইভারের মুখে শুনেছেন, তাঁর স্ত্রী জ্যোতিষীর পরামর্শ নিচ্ছিলেন। ওই জ্যোতিষীই নাকি সুজাতাকে বলেছেন, তৃণমূলে গেলে বড় পদ পাওয়া যাবে। ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, ‘‌ঘরের লক্ষ্মী চুরি করল তৃণমূল। মানুষের জন্য কাজ করতে করতে ধরতেই পারিনি যে আমার ঘরটাও ভেঙে যাচ্ছে! ‌কিন্তু বিগক কয়েক মাস ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে রাজনৈতিক ও পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছিল। তার জেরেই হয়ত তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সুজাতা। সৌমিত্রও কি তৃণমূলে ফিরবেন?‌ উত্তরে সুজাতা জানান, শুভবুদ্ধির উদয় হলে হয়ত উনি ফিরে আসতে পারেন। মমতা ব্যানার্জি এবং অভিষেক ব্যানার্জি তাঁকে যা দায়িত্ব দেবেন, তা তিনি পালন করবেন।’‌তৃণমূলে যোগ দিয়ে সুজাতা বলেন, ‘‌বিজেপির হয়ে প্রচুর লড়েছি। প্রাপ্য মর্যাদা দেয়নি ওরা। বিজেপি তৃণমূলের লোকদের মুখ্যমন্ত্রিত্ব, উপমুখ্যমন্ত্রিত্বের লোভ দেখাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের প্রতিমূর্তি, তিনি তাঁর সেনানী। শুভেন্দু ধান্দাবাজ, তাঁকে নেতা বলে মানি না। অযোগ্য লোকেদের নিয়ে মাতামাতি করে বিজেপি। তৃণমূলের দুর্নীতিগ্রস্তদের দলে ঠাঁই দিচ্ছে ওরা। যাঁরা রক্ত ঝরায়, তাঁদের কথা ভাবে না। বিজেপি এখন তৃণমূলের বি-টিম। তাহলে আমি বি-টিমে কেন থাকতে যাবো?‌ তাই এ-টিমেই যোগ দিলাম।’‌সৌমিত্র-সুজাতা আগেই তৃণমূলেই ছিলেন। লোকসভা ভোটে বিষ্ণুপুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণপাত করেছিলেন সৌমিত্রর স্ত্রী। সৌমিত্র সেখানে ঘুকতে পারতেন না। একাই প্রচার চালাতেন সুজাতা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *