October 27, 2024

কালিয়াগঞ্জ থানায় চেক প্রদান অনুষ্ঠানে বলা না বলার দৃশ্যে চেক বিতরণ।

1 min read

কালিয়াগঞ্জ থানায় চেক প্রদান অনুষ্ঠানে বলা না বলার দৃশ্যে চেক বিতরণ।

জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ।
করোনা আবহের মধ্যে আসন্ন শারদ উৎসবে দূর্গা পূজা উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি পূজা আয়োজক দের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্দ্যোগে আর্থিক সহায়তা ৫০০০০ টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা আগেই হয়েছিল।
সেই মোতাবেক রাজ্যের প্রতিটি থানার পাশাপাশি উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ থানা প্রশাসন গত বছরের মতো এবারও প্রতিটি পূজা কমিটি গুলোকে তাদের পূজা কমিটির সম্পাদক বা সভাপতিদের নাম , তাদের ব্যাঙ্ক একাউন্ট তথ্য সহ মোবাইল নং সহ থানায় যোগাযোগ করার ঘোষনা মাত্র সকল পূজা কমিটিগুলো তৎক্ষণাৎ তাদের সকল তথ্য জমা দেন। আর্থিক সাহায্য ৫০০০০ টাকা বলে কথা‌।এরপরেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেই আর্থিক সহায়তার চেক এসে পৌঁছায় গত ১০ তারিখে কালিয়াগঞ্জ থানায় এবং সকল পূজা কমিটি কে জানিয়ে দেওয়া হয় বেলা ১২ টায় সকলকে চেক প্রদান করা হবে। এই অবস্থায় বেলা ১২ টায় কালিয়াগঞ্জ থানা চত্তরে ১১৯ টি শহর ও ব্লকের প্রতিটি পূজা কমিটির পদাধিকারি সহ দুই তিনজন করে ভীড় উপচে পরে চেক নিতে থানা প্রাঙ্গণে। সেই দৃশ্য দেখে তখনও মনে হচ্ছিল না করোনা আবহ চলছে। মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই ছিল না অথচ এই টাকা দিয়েই পূজা করতে এবং পারমিশন নিতে কত নিয়মের হ্যাপা পোয়াতে হবে, হয়রানি হতে হবে। কালিয়াগঞ্জ থানা চত্তরে একটি বসবার গোল ঘড়ে তখন নীল সাদা বেলুন লাগিয়ে মাইক নিয়ে তৎপরতার সাথে ব্যস্ত থানার আধিকারিকরা। অনুষ্ঠান টি পরিচালনা করছিলেন কালিয়াগঞ্জ থানার সাব ইন্সপেক্টর পিনাকি সরকার, সাথে উপস্থিত ভারপ্রাপ্ত আই,সি এবং অন্য এক সাব ইন্সপেক্টর বাসুদেব সাধুখা। ঠিক সেই সময় এসে উপস্থিত হন কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার বিদায়ী পৌরপতি তথা বর্তমান পৌর প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল। ঠিক ১০ মিনিটের মধ্যে এসে উপস্থিত হন কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক তপন দেব সিংহ, সাথে এক এক করে উঃ দিনাজপুর জেলা পরিষদের কোমেন্টর অসীম ঘোষ এবং কয়েকজন রাজনৈতিক সমাজসেবী তিনারা তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যানারে পরিচিত। থানার গোল বৈঠকি স্থানে সকলে একসাথে চেয়ার নিয়ে বসেন এবং পাশাপাশি বসতে দেখা যায় পৌর প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল ও বিধায়ক তপন দেব সিংহ কে। যতক্ষন তারা উভয়ে সহবস্থান করছিলেন তাদের দেখে অপরাধী গানটি মনে পরছিল বলে এক উপস্থিত রসিক ভদ্রলোক বলে ফেললেন। যে গানের কলি এখনও সবার মুখে মুখে আওরাতে দেখা যায়, বিশেষ করে টিন এজারদের কন্ঠে। সেই গানের দুটি কলি
” ওরে মনের খাচায় যতন কইরা দিলাম তোরে ঠাই,
এখন তোর মনেতে আমার জন্য কোন জায়গা নাই “। রসিক ভদ্রলোকের গানের ঐ কলি শুনে তাকে প্রশ্ন করা হলো কি জন্য এবং কেন হঠাৎ করে এই গানটির সুর ধরলেন। তিনি হাসতে হাসতে বললেন দেখুন গোল বৈঠকি স্থানে পাশাপাশি বসে আছেন বিধায়ক ও পৌর প্রশাসক কিন্তু কেউ কারো সাথে কোন বাক্যালাপ করছেন না। রসিক ভদ্রলোকের কথা শুনে তাকে প্রশ্ন করা হলো কেন দাদা ? তিনি বললেন দুজনেই তৃণমূল কংগ্রেসের ঘড়ানায় নিজেদের পদাধিকারীর পরিচিতি বাড়িয়েছেন এবং কিছুদিন পূর্বে কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন কার্তিক চন্দ্র পাল কিন্তু বর্তমানে সেই সভাপতির পদ থেকে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে নাকি রাজনৈতিক ময়দানে একটা বার্তা চাউর হয়েছিল বিধায়কের জন্যই নাকি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির পদ হারিয়েছেন কার্তিক চন্দ্র পাল। এই চাউর হওয়ার বার্তার সত্যতা কতখানি তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও গতকালের চেক প্রদান অনুষ্ঠানে দুই জনের বলা না বলার দৃশ্য অনেকটাই সেই সত্যতার বিষয়বস্তু কে উস্কে দিয়ে গেল। কিছুদিন আগেই দেখা যেত কত সখ্যতা, কত মিল , কত ঠাট্টা তামাশা উভয় উভয়ের মধ্যে কিন্ত চেক প্রদান অনুষ্ঠানে এত ভীড়ের মাঝেও এই রসিক ভদ্রলোকের চোখে কিন্তু ঠিক জায়গায় দৃষ্টি পরেছিল। আর পরেছিল বলেই কি তিনি অপরাধীর গানের কলিতে গুনগুন করছিলেন? তবে উভয়ে উভয়ের মনেতে যে জায়গা নেই তা কিন্তু প্রস্ফুটিত। এই দৃশ্য কালিয়াগঞ্জে রাজনৈতিক ময়দানে আগামী দিনে কোন সমীকরনের চেহারা নেয় সেটাই দেখবার বিষয়। তবে থানা চত্তরে ঐ রসিক ভদ্রলোক বললেন সোমবার হাটে সেন্ট বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ী বিক্রেতা মাইকে বলেন কখনও জুঁই, কখনও চামেলী, কখনও রজনীগন্ধা, কখনও বেলি গন্ধ সম্পূর্ণ একই সেন্টের শিশি থেকে যেমন গন্ধ বের হয় ঠিক তেমনি রাজনৈতিক নেতৃত্বদের সময়ের তালে তেমন গন্ধ পাওয়া যায় কখনও জুঁই, কখনও রজনীগন্ধা, কখনও বেলি তো কখনও চামেলী। বলা না বলার দৃশ্যে চারিদিকে ভুরভুর করছে সেই আতরের গন্ধ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *