October 26, 2024

শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গেলেন প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল। স্বাগত জানাল গ্রামবাসীরা

1 min read

শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে গেলেন প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল। স্বাগত জানাল গ্রামবাসীরা

তন্ময় চক্রবর্তী মানুষের সাথে মিশে গিয়ে মানুষের সেবা করার কারো মানসিকতা যদি থাকে তাহলে কোন প্রতিকূলতায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না তার কাছে তা আবারো প্রমাণ করে দেখিয়ে দিল কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা র প্রশাসক তথা তরুণ উদ্যমী যুবক কার্তিক চন্দ্র পাল। তাই এবার তিনি শহরের মানুষের পাশাপাশি গ্রামের মানুষের পাশে থেকে তাদের সুখ-দুঃখের ভাগিদার হতে চান।

আর সেই লক্ষ্যেই গ্রামের মানুষরা কেমন আছে ? গ্রামের রাস্তা ঘাটের পরিস্থিতি বা কেমন? গ্রামের মানুষরা ঠিকঠাকভাবে করোনা মোকাবেলায় মুখে মাক্স ব্যবহার করছে কিনা । কিংবা গ্রামের মন্দির গুলোর অবস্থা কেমন আছে।

এই সমস্ত কিছুই খোঁজখবর নিতে ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছেন কার্তিক বাবু। শুধু তাই নয় তার মনের মধ্যে একটা কৌতুহলী জন্মায় শহরের মানুষদের পাশাপাশি যাতে গ্রামের মানুষরাও একটু ভালো থাকতে পারে তার জন্য তাদের যা যা সমস্যা তার যদি একটু তাদেরও সমস্যা গুলোর ভাগিদারী হয়ে তার কিছুটা যদি সমাধান করতে পারেন তার হাত ধরে তার সাধ্যমত চেষ্টাতে।

তাহলে তিনি বুঝবেন তিনি ভালো আছেন। আর সেই তাগিদেই তিনি ছুটে গেলেন কালিয়াগঞ্জ থেকে সুদূর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ছোট্ট একটি গ্রাম নারায়ণপুরে। হাজারো ব্যস্ততার মাঝে একটু সময় বের করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে মোরা টাঙ্গন নদীর পাশে অবস্থিত এই গ্রামে তিনি ছুটে গেলেন। পাশাপাশি তিনি মনে করেন জন্মাষ্টমীর দিনটি একটু আলাদা রকম ভাবে কাটাবেন গ্রামের মানুষদের সাথে। আর সেই লক্ষ্যে তার নিজস্ব গাড়ি নিয়ে ছুটলেন রাধিকাপুর এর নারায়ণপুরের উদ্দেশ্যে।

তবে যেতে যেতে হঠাৎই তার সামনে বাধা হয়ে দাড়ালো খারাপ রাস্তা। একদিকে ভরাট টাঙ্গন নদী বইছে অপরদিকে রয়েছে জলে ভরা খাল। আর মাঝখান দিয়ে যে রাস্তা গিয়েছে তা বলার মতো না। অথচ ভোটের সময় নেতারা এখানে এসে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গিয়েছিলেন একবার জিতলেই রাস্তা হয়ে যাবে।

কিন্তু ভোট শেষ হলেও রাজা তার দায়িত্বভার নিলেও এখানকার গ্রামবাসীদের কাছে দেওয়া রাজার সেই প্রতিশ্রুতি রাজা কিন্তু আজ বেমালুম ভুলে গেছেন। তাই নারায়ণপুরের দিকে যাওয়া রাস্তা আজ নরক খাদে পরিণত হয়েছে। তাই গাড়ি নিয়ে যাওয়া যাবে না নির্দিষ্ট সেই নারানপুর এর উদ্দেশ্যে।

 

তাই গাড়ি এক জায়গায় রেখে প্রায় তিন কিলোমিটার মেঠো পথে হাঁটা শুরু করলেন প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে। অপরূপ সৌন্দর্যে মোরা গ্রামের মেঠো পথ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মধ্যেই তাকে দেখা গেল গ্রামবাসীদের সাথে কথা বলতে, ও দাদা কেমন আছেন, আপনারা ভালো তো।

মনে হচ্ছিল তাকে দেখে তার যেন অতি পরিচিত সেই মানুষ গ্রামে র। অবশেষে এইভাবে হাঁটতে হাঁটতেই পৌঁছে গেলেন ঠিক নারায়ণপুরে। আর সেখানে পৌঁছে গিয়ে প্রশাসক কার্তিক বাবু প্রথমেই ঝটকা মারলেন সেখানকার উঠতি যুবকদের উদ্দেশ্যে। কার্তিক বাবুকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোনো নির্বাচন শুরু হয়েছে প্রার্থী হয়েছেন কার্তিক বাবু। গ্রামে এসেছেন ভোট চাইতে।

কিন্তু না গ্রামের টানে মানুষের ভালোবাসার টানে নিঃস্বার্থভাবে তিনি এসেছে না গ্রামে মানুষের ভালোবাসা ও আশীর্বাদ নিতে। এদিন যখন প্রশাসন নারায়ণপুরে পৌঁছালেন তখন তিনি দেখলেন একটি ফাঁকা জায়গায় ভলিবল খেলছিল কিছু উঠতি যুবক। তখন তিনি নিজেকে আর সামলাতে পারেননি।

সঙ্গে সঙ্গে তিনিও সেই খেলার মাঠে প্রবেশ করে বললেন চল এবার তোদের সাথে আমিও খেলবো। আর এতেই খানিকটা হতচকিত হয়ে পড়ে এখানকার উঠতি যুবক যারা ভলিবল খেলছিল। কিছুক্ষণ পর দেখা গেল গ্রামবাসীদের সাথে মিশে গিয়ে একেবারে তাদের কায়দায় একেবারে পেশাদারিত্ব ঢঙে নিজেও হলে বল খেলতে শুরু করে দিলেন।

যখন তিনি খেলছিলেন তখন কাত্তিক ব্যবস্থা দেখে মনে হচ্ছিল কোন পেশাদার খেলোয়াড় খেলছে মাঠে। কারণ তিনি যেমন ভলিবলের সার্ভ করছিলেন তেমনি ঠিকঠাক চাপ মেরে প্রতিপক্ষ দলকে একটা সময় চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। খানিকক্ষণ এইভাবে গা গরম করা পর তিনি যুবকদের বলেন তোদের বল ও ভালো নেট কিনতে যা টাকা দরকার আমি তোদের দিচ্ছি তোরা ভালো বল ও নেট কিনে নিস।

আর এতেই ভীষণ আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে সেই উঠছি যুবকরা। আনন্দ তারা চেপে না রাখতে পেরে তারা সকলেই কার্তিক বাবু কে বলেন আপনি যা বললেন আমাদের জন্য তা আমরা কখনোই ভুলবো না। এরপর কার্তিক বাবু সরাসরি চলে গেলেন এই গ্রামে ই নির্মীয়মান বিষ্ণু মন্দির জন্ম অষ্টমী কবে শামিল হতে। শুধু তাই নয় তিনি মন্দির প্রাঙ্গণে গিয়ে মন্দির নির্মাতার হাতে কিছু আর্থিক সাহায্য দিয়ে তাদেরকেও বুঝিয়ে দিলেন তিনি তাদেরও প্রিয় মানুষ।

পাশাপাশি তিনি এদিন গ্রামবাসীদের হাতে একটি করে মাক্স ও মিষ্টি মুখ করান।স্বভাবত গ্রামের মানুষরা সবাই হতচকিত হয়ে গেলেন তার এখানে উদ্যোগে। গ্রামবাসীদের মুখে মুখে এও বলতে শোনা যায় । সত্যি আজ স্বয়ং ভগবান ই তাদের মন্দিরে পদার্পণ করেছেন। না হলে গ্রামবাসীদের সুরক্ষায় তিনি কেনইবা মাক্স, কেনই বা তাদের মিষ্টিমুখ করাবেন, আর শহর থেকে এত দূরে এসে কেনই বা প্রত্যন্ত গ্রামে বিষ্ণু মন্দিরের উন্নতিকল্পে আর্থিক সাহায্য বা করবেন কেন? জানা যায় রাধিকাপুর নারায়ণপুর গ্রামে নিজ হাতে বিষ্ণু মন্দির গড়ে তুলেছেন এই গ্রামেরই এক হতদরিদ্র কৃষিজীবী গোপেন্দ্র নাথ রায়।

দক্ষিণ ভারতের যেসব বিখ্যাত হিন্দু মন্দির রয়েছে তার আদলেই গোপেন বাবু তার এই মন্দির তৈরি করেছেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা মনোরম পরিবেশে কার্তিক চন্দ্র পাল যেভাবে গ্রামের মানুষদের কাছে গিয়ে আপন হয়ে গেলেন তা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হয়ে রইল এটা নিঃসন্দেহে বলা যেতেই পারে। কার্তিক বাবু বলেন,গ্রামবাসীদের টানে তার গ্রামে আসা, তিনি সংবাদ মাধ্যমে শুনেছেন এই গ্রামে একটি বিষ্ণু মন্দির তৈরি করছে গ্রামেরই এক হতদরিদ্র কৃষক।

 

যখনই তিনি জানতে পারলেন তখনই তার একটা কৌতুহল জন্মালো যে তিনি এখানে এসে সেই মন্দির দেখবেন আর সেই তাগিদেই বিষ্ণু দেবতা ও গ্রামবাসীদের আমন্ত্রণে তার নারায়ণপুরে আসা। এছাড়াও তিনি এর আগেও এসেছিলেন এবং তখন তিনি দেখেছিলেন এই গ্রামের অনেকেই মাক্স ব্যবহার করছেন না তাই তিনি নিজের তাগিদেই আজ বেশ কিছু মাক্স এনে গ্রামবাসীদের মধ্যে বিতরণ করলেন। সামনে বিধানসভা নির্বাচন আর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি যেভাবে জনসংযোগ বৃদ্ধি করতে গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন তাতে কি আপনার আগামী দিনে নতুন কোনো চিন্তাভাবনা রয়েছে রাজনীতির ময়দানে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন বিধায়ক বা অন্য কিছুর জন্য তিনি জনসংযোগ করছেন না তিনিতো কালিয়াগঞ্জ ই সন্তান ।

রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে তিনি মানুষের সাথে সম্পর্ক সবসময় রক্ষা করে থাকেন এটা সকলেই জানে। পাশাপাশি তিনি বলেন যে সমস্ত জায়গায় ধর্মীয় ব্যাপার থাকে সে সমস্ত জায়গা গুলোতেও তিনি যান। তার ভালোলাগার তাগিদে। সেখানে গ্রাম ও শহরের মধ্যে ভাগাভাগি কোন বিভেদ নেই। তিনি বলেন ঝাড়খণ্ডের দেওঘর মন্দির ও তিনি যেমন যান। তেমনি বীরভূমে তারা মায়ের কাছেও তিনি যান।

তেমনি কালিয়াগঞ্জ এটাতো আমার নিজের জায়গা । এটা আমার জন্মভূমি আমার মাতৃভূমি। সেখানে এসেছি একটা মন্দির দর্শন করতে। এরমধ্যে রাজনীতির কোনো রং নেই। আমরা সকলেই রাজনীতির ঊর্ধ্বে। আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা মানুষ। আর মানুষ হয়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। এছাড়া তিনি বলেন গ্রামে এসে কি যে আনন্দ লাগলো তা মনের ভাবে প্রকাশ করতে পারছিনা। তবে একটা কথা বলব যখন এই নারায়ণপুরে যুবকদের সাথে বল হাতে নিয়ে ভলিবল খেলতে শুরু করলাম তখন কিন্তু ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। কারণ ছোটবেলা য় খুব ভলিবল খেলতাম। তিনি বলেন এই নারায়ণপুরে এসে এক পাশে টাঙ্গন নদী বইছে অপরদিকে সবুজ ধানের জমি রয়েছে। তা মনোরম এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা। তাই আজকের এই দিনটি আমার কাছে খুবই সুন্দর ভাবে কাটলো।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *