পুকুরচুরি নয় এবার কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতী নদী চুরি করে রায়তি সম্পত্তি করে নেওয়ায় ১০০দিনের কাজের মাধ্যমে শ্রীমতী নদী সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে গেল
1 min readপুকুরচুরি নয় এবার কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতী নদী চুরি করে রায়তি সম্পত্তি করে নেওয়ায় ১০০দিনের কাজের মাধ্যমে শ্রীমতী নদী সংস্কারের কাজ বন্ধ হয়ে গেল
তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,১০আগস্ট:এতদিন আমরা শুনে আসছিলাম পুকুর চুরির কথা।এবার পুকুর চুরি নয় এবার কালিয়াগঞ্জ শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া শ্রীমতী নদিকেই চুরি করে তা আবার নিজেদের নামে রায়তি সম্পত্তি করে নেবার চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটলো কালিয়াগঞ্জে।জানা যায় কালিয়াগঞ্জ নদী ও পরিবেশ বাঁচাও কমিটি দীর্ঘদিন ধরে কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতী সংস্কারের ব্যাপারে আন্দোলন করে আসছিল।
নদী বাঁচাও কমিটির যুগ্ম সম্পাদক প্রসূন দাস এবং ব্রহ্ম বলেন তাদের সংগঠন উত্তর দিনাজপুর জেলার জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনার কাছে দরবার করেন যাতে মজে যাওয়া শ্রীমতী নদীকে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে শ্রীমতী নদীকে সংস্কার করা যায়।জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনা কালিয়াগঞ্জ নদী ও পরিবেশ বাঁচাও কমিটির দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে শহরের মধ্য দিয়ে যাওয়া পাঁচ কিলোমিটার শ্রীমতী নদীর সংস্কারের জন্য একটি নির্দেশ জারি করেন।
এর পরেই ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়।জেলা শাসক অরবিন্দ কুমার মিনা তার নির্দেশের একটি কপি কালিয়াগঞ্জ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক প্রসূন ধারার কাছে পাঠিয়ে দিয়ে বলেন কালিয়াগঞ্জের মজে যাওয়া শ্রীমতী নদীর সংস্কারের কাজ অতি দ্রুত যেনশুরু করা হয়।উত্তর দিনাজপুর জেলা শাসকের শ্রীমতী নদী সংস্কারের নির্দেশ পেয়ে যথারীতি কালিয়াগঞ্জের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক প্রসূন ধারা স্থানীয় ভূমি সংস্কার দপ্তরে গিয়ে কাগজপত্র দেখে তার চক্ষু চরকগাছের মত ঘটনা ঘটে।
সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক স্থানীয় ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিককে নিয়ে নদীর কাগজপত্র দেখতে গিয়ে দেখেন শ্রীমতী নদী বলে কাগজপত্রে কিছুই নেই।যা আছে পুরো নদীটাই বিভিন্ন ব্যক্তির নামে রায়তি সম্পত্তি হয়ে আছে। রায়তি সম্পত্তির মালিকরা গোটা নদী জুড়ে বছরের পর বছর ধরে ধান চাষ করে আসছে।এই ঘটনায় কালিয়াগঞ্জ শহর জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।এখন প্রশ্ন উঠেছে কিভাবে একটা জলজ্যান্ত নদীকে কে বা কাহারা কি ভাবে রায়তি সম্পত্তিতে পরিণত করতে পারলো?এর পেছনে তাহলে কি কোন রাঘব বোয়ালের আশীর্বাদ রয়েছে?জেলা প্রশাসন এসব দেখেই বা কেন মুখ বুজে আছে?কালিয়াগঞ্জ নদী ও পরিবেশ বাঁচাও কমিটির অন্যতম সদস্য ডঃ কাঞ্চন দে বলেন এতো মারাত্মক ঘটনা? রাজ্য প্রসাশন ও জেলা প্রশাসন এতবড় একটা ঘটনার কোন আসল রহস্য খুঁজে বের করতে পারছেনা? তিনি বলেন কালিয়াগঞ্জ নদী ও পরিবেশ বাঁচাও কমিটি রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেসমস্ত ঘটনা জানিয়ে অবিলম্বে যাতে শ্রীমতী নদীর সংস্কারের কাজ শুরু করা যায় তার জন্য লিখিত আবেদন জানিয়েছে বলে কাঞ্চন বাবু জানান।নদী বিশেষজ্ঞ তথা পশ্চিমবঙ্গ নদী বাঁচাও কমিটির আহ্বায়ক তুহিন শুভ্র মন্ডল বলেন কালিয়াগঞ্জ শ্রীমতী নদী একটি ঐতিহ্যপূর্ণ নদী।এই সমস্ত নদীগুলিকে সরকার থেকে তার অস্তিত্ব রক্ষার ব্যবস্থা না করে তাহলে পরিবেশ রক্ষায় ক্ষেত্রে বড় বিপর্যয় ঘটতে বাধ্য। অবিলম্বে সরকার থেকে কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বাধ্য হয়ে আমাদের আন্দোলনের পথকেই বেছে নিতে হবে।কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার পৌর প্রসাশক কার্তিক পালকে শ্রীমতী নদীর চুরি হবার ঘটনা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন তিনি শুনেছেন কালিয়াগঞ্জের উপর দিযে বয়ে যাওয়া শ্রীমতী নদী বর্তমানে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত হয়েছে।রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের উচিৎ এই ঘটনা যদি হয়ে থাকে তাহলে উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের খুঁজে বার করা হোক।কেননা নদী জাতীয় সমত্তি।এটা কোন ভাবেই ব্যক্তি গত সম্পত্তি কোন ভাবেই হতে পারেনা।