বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উদগ্রামের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন দুর্গাপুজো এখনও দেশভাগের যন্ত্রণা ও আবেগকে মনে করিয়ে দেয়
1 min read
তন্ময় চক্রবত্তী ঃ– এক সময় সাবেক দিনাজপুরের রাজ বাড়ির কামানের গোলা ফাটানোর আওয়াজ শুনেই বর্তমান ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের রাধিকাপুর উদগ্রামের পূজার সূচনা হত। আজ সেই সব শুধুই ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। আজ আর রাজাও নেই নেই রাজপাটও। কিন্তু আজ যা আছে তা বিভক্ত দুই বঙ্গের সীমান্ত চিহ্নিত করণের কাঁটাতারের বেড়া। ভারতবর্ষ বিভক্ত হবার পর এই রাধিকাপুরের উদগ্রামের দুর্গা মন্দিরের নামে থাকা চল্লিশ বিঘা জমিও চলে গিয়েছে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে।যা রয়েছে বর্তমানে বাংলাদেশের মধ্যে। আর এপারে রয়ে গিয়েছে দেবীর মুল মন্দির এবং মন্দির সংলগ্ন ১৩ বিঘা কৃষি জমি। সেই জমিতে চাষাবাদ করে ও ভক্তদের অর্থদানে বর্তমানে দেবী পুজার আয়োজন করা হয়। কিন্তু দুই বঙ্গের বিভাজন উদগ্রামের দুর্গা পূজায় আজও ও প্রভাব ফেলতে পারেনি। আজও এপার বাংলার উদগ্রামে নিয়ম নিষ্ঠাভরে গ্রামবাসীদের দ্বারা উদগ্রামের মন্দিরে পুজিত হয় দেবী দশভু
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
জা। এখানে অষ্টমীতে বলি দেওয়া হয়। পাঁঠা বলি দেখতে সংলগ্ন বালাহার, মির্জানগর, ছাপাইর, উত্তর কৃষ্ণপুর, গোটগাঁও, মালিজুম, নারায়ণপুর, রামগঞ্জ, ভাবক থেকে লোকেরা আসেন। পুজোর সময়ে রাধিকাপুরের প্রত্যন্ত এই এলাকায় কলকাতা, শিলিগুড়ি, বর্ধমান সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন আসেন।
কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী
রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উদগ্রামের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন দুর্গাপুজো এখনও
দেশভাগের যন্ত্রণা ও আবেগকে মনে করিয়ে দেয়। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া থেকে ঢিল
ছোঁড়া দূরত্বে এই পুজো হয়। গ্রামের একমাত্র দুর্গাপুজোকে ঘিরে স্থানীয় মানুষদের
উৎসাহ ও উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো। পুজোর ক’দিন গ্রামের লোকেরা অন্যত্র যান না। তাঁরা ষষ্ঠী থেকে দশমী
পর্যন্ত ঠাকুর দালানে একসঙ্গে বসে সময় কাটান। এমনকী শহরের বিগবাজেটের মণ্ডপ দেখতেও
বাসিন্দারা শহরমুখো হন না।
রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উদগ্রামের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন দুর্গাপুজো এখনও
দেশভাগের যন্ত্রণা ও আবেগকে মনে করিয়ে দেয়। সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া থেকে ঢিল
ছোঁড়া দূরত্বে এই পুজো হয়। গ্রামের একমাত্র দুর্গাপুজোকে ঘিরে স্থানীয় মানুষদের
উৎসাহ ও উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো। পুজোর ক’দিন গ্রামের লোকেরা অন্যত্র যান না। তাঁরা ষষ্ঠী থেকে দশমী
পর্যন্ত ঠাকুর দালানে একসঙ্গে বসে সময় কাটান। এমনকী শহরের বিগবাজেটের মণ্ডপ দেখতেও
বাসিন্দারা শহরমুখো হন না।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ শহর থেকে
প্রায় ১৬ কিমি দূরের ভারত – বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উদগ্রাম। প্রায় ৩০০ বছর আগে
গ্রামের লোকেরাই এখানে দুর্গাপুজোর সূচনা করেন। গ্রামবাসীরা বলেন, সেসময় অবিভক্ত
দিনাজপুরের রাজবাড়ির কামান দাগার আওয়াজ শুনেই ষষ্ঠীপুজোর ঘট বসানো হতো। সময়
পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সেনিয়ম এখন আর পালন করা হয় না। দেশভাগের পর দিনাজপুরের
রাজবাড়ির সঙ্গে পুজো নিয়ে আর কোনও যোগাযোগ নেই। এখন পঞ্জিকা মেনেই এখানে পুজো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রবীণ অশোক বর্মন
বলেন, আগে এখানকার
দুর্গাপুজো দেখতে বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ আসতেন। দেশভাগের পর এদিকে আসতে হলে
পাসপোর্ট, ভিসার দরকার হয়।
তাই ভিড় কমলেও অনেকেই পাসপোর্ট, ভিসা বানিয়ে এখানে আজও পুজো দেখতে আসেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এখন কাঁটাতারের বেড়া দু’দেশের ভূখণ্ডের
মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। রাজবাড়ির পুজোর নিয়ম কানুনের সঙ্গে মিল রেখে
দেবীর আরাধনা না হলেও পুজোয় মঙ্গলচণ্ডীর গান এখানে পুজোর বাড়তি আকর্ষণ বহন করে।
গ্রামবাসীরা বলেন, উদগ্রামের এই প্রচীন দুর্গাপুজোর আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের
বিভিন্ন রকম আবেগ জড়িয়ে রয়েছে।
ওই গ্রামের আরেক প্রবীণ বাসিন্দা ঊষা দাস , চপলা দাস জানান, এখানকার দুর্গা অত্যন্ত জাগ্রত। মা সবার মনস্কামনা পূরণ করেন।
যেকোনও অনুষ্ঠান তা বিয়েই হোক কিংবা অন্নপ্রাশন অথবা জন্মদিন, সকলেই এই
মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে যান। গ্রামবাসীদের বিয়েতে অতিথি হিসেবে যাঁরা আসেন তাঁরাও
এই মন্দির চত্বরের চাতালে রাত্রিবাস করতে পারেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
স্থানীয় বাসিন্দা হেমন্ত দাস বলেন, আমরা পুজোর জন্য
কোনওরকম চাঁদা তুলি না। মায়ের মন্দিরের নামে বহু চাষের জমি ছিল। কিন্তু দেশভাগ
হওয়ার পরে দেখা যায় ৩৬ বিঘা জমি বাংলাদেশের দিকে চলে গিয়েছে। ভারতের দিকে মাত্র
১৪ বিঘার মতো জমি রয়েছে। সেই জমি থেকে যে আয় হয়, তা দিয়েই প্রতি
বছর পুজোর খরচ করা হয়।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});