October 29, 2024

সকল অহংকার কে হার মানিয়ে স্বাস্থ্যই সম্পদ শিখিয়ে দিয়ে গেল ২০২০.

1 min read

সকল অহংকার কে হার মানিয়ে স্বাস্থ্যই সম্পদ শিখিয়ে দিয়ে গেল ২০২০.

৩১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার। জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ উঃ দিনাজপুর।পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান শিক্ষিত প্রানী মানুষ আর এই মানুষের মধ্যেই জন্ম নেয় অহংকার। অহংকারের নির্দিষ্ট কোনো সংগা নেই। এক একজন এক এক ধরনের অহংকারের চাদর পরে থাকেন। তবে প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিতদের অহংকার নামক শব্দটি জড়িয়ে ধরতে পারে না। আর পারে না বলেই তিনারা মহাপুরুষ রুপে এই ধরাধামে জন্ম নেন। অহংকার নামক শব্দটি যখন কাউকে জড়িয়ে ধরে তখন তাদের চলনে বলনে উঠতে বসতে বডি ল্যাঙ্গুয়েজে বোঝা যায় অর্থাৎ সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন। আজ কিছুক্ষন পরেই পৃথিবীর ক্যালেন্ডার থেকে বিদায় নেবে দুই হাজার কুড়ি কিন্তু এক দূর্দান্ত ক্ষোভে দুই হাজার কুড়ি কে দুই হাজার বিশ বলতে দ্বিধা করেন নি। বিশ বলতে বিষ শব্দে রুপান্তর ঘটিয়ে মনের যন্ত্রনা কে প্রকাশ করেছেন মাত্র। তবে আজকের এই প্রতিবেদনে মানবজাতির কাছে ২০২০ আশীর্বাদ ।

আগামীকাল নতুন সূর্য উঠবে, নতুন করে বাঁচার তাগিদে সকলের কাছে এক অহংকার জন্ম নেবে স্বাস্থ্য হলো বড় সম্পদ। মানবজাতির কাছে সকল স্তরের অহংকার কে হার মানিয়ে স্বাস্থ্য যে বড় সম্পদ হয়ে উঠতে পারে শিখিয়ে দিয়ে বিদায় নিতে চলেছে ২০২০. সেই কারনে মানবজাতির কাছে ২০২০ আশীর্বাদ কিন্তু অভিশাপ নয়। এইরকম পরিস্থিতিতে করোনার এই ভয়বহতা আমাদের কি শিক্ষা দিল? সমাজ থেকে আমরা কি শিক্ষা পেলাম? হ্যাঁ, আমার ধারণা, করোনা আমদের অনেক কিছু দেখিয়ে দিয়েছে, বুঝিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতের করণীয় সম্পর্কে সচেতন হতে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা বলছেন, করোনাভাইরাস তার রূপ পরিবর্তন করছে প্রতিনিয়ত, কিন্তু আমরা কি আমাদের পরিবর্তন করছি, পরিবর্তিত হওয়ার জন্য যা প্রয়োজন সে শিক্ষা কি আমরা পেয়েছি। আমার মনে হয় আমাদের সময় এসেছে সব কিছু নতুন করে ভাবার, পরিকল্পনা করার। সময় কখনোই বসে থাকবে না। তাহলে কি শিক্ষা আমরা পেতে পারি চলুন এগুলোর ওপর একটু আলোকপাত করা যাক। করোনার এই দুর্যোগকালীন সময়ে আমাদের স্বাস্থ্য বা রোগ সচেতনতা বেড়েছে। এখন সময় এসেছে আমাদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার, প্রথম প্রায়োরিটি এটাই হওয়া উচিত। নিজের শরীরের যত্ন না নিলে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়। করোনা আমাদের মাঝে এই সচেতনতা তৈরি করে দিয়েছে। এই মুহূর্তে অল্প সময়ে নিজেকে বডিবিল্ডার বানানো অসম্ভব কিন্তু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে সুন্দর ও সুস্থ্য থাকার চেষ্টা করা যেতেই পারে। শরীরকে এমন ভাবে তৈরি করা যেতে পারে যেন ভবিষ্যতে সে মনকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন অসুখের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারে। ইন্টারেস্টিং খবর হলো আমাদের অনেকেরই ধূমপানের অভ্যাস রয়েছে, যখন জানা গেলো যাদের ফুসফুসের সমস্যা আছে তাদের করোনা দ্রুত এফেক্ট করে তখন অনেকেই ধূমপান ছেড়ে দিয়েছে বা কমিয়ে দিয়েছে। কারণ আমরা জানি ধূমপানের কারণে ফুসফুস মারাত্মকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর করোনার নেতিবাচক প্রভাব ফুসফুসেই সব থেকে বেশি হয়। করোনা আমাদের মধ্যে ইন্টার পারসোনাল রিলেশন বাড়িয়েছে, আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে একে অপরকে ভালোভাবে বুঝার, চেনার। করোনা আমাদের আরো বেশি করে সামাজিক করে তুলেছে। পারিবারিক ও সামাজিক ভালোবাসায় বন্ধন দৃঢ় হয়। বর্তমান টেকনোলজি আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে দূরে থেকেও কাছে থাকার। বিপদে বন্ধুর পরিচয় পাওয়া যায়। কথাটা বহুল প্রচলিত। পরিবারের প্রতিও আমাদের দায়বদ্ধতা বেড়েছে। করোনা বয়স্কদের বেশি এফেক্ট করে আমরা বিভিন্নরকম আলোচনা আর পরিসংখ্যানে দেখেছি। আমরা আমাদের বয়স্ক বাবা-মা-আত্মীয়-স্বজনদেরকে সহজে এলাও করছি না বাড়ির বাইরে যেতে। আমরা আত্মীয়-স্বজনকে বলছি সচেতন থাকতে। এ করোনাকালে অফিস, আদালত, স্কুল, কলেজ সব বন্ধ থাকাতে সকলেই অল্প-বিস্তর অবসর সময় পেয়েছে, যেটা পরিবারের সঙ্গে কাটানোর একটা গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে। সেটা কতোটুকু কাজে লাগাতে পারলাম আমরা? আমাদের মানসিকভাবেও শক্তিশালী হতে হবে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে করোনাকে জয় করার আরেকটি বড়ো হাতিয়ার হচ্ছে মানসিক শক্তি। ভেঙে পরলে চলবে না কোনোভাবেই। মনে সাহস রাখতে হবে। আমাদের মন মানসিকতার পরিবর্তন হয়েছে ব্যপক, প্রিয়জনদের কথা ভাবতে হবে। এ সময়ে প্রিয়জনেরাই মনোবল বৃদ্ধি করে। নিজের শক্তি বা আস্থা বাড়ান। মানসিক শক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নিজের প্রতি অন্যের কাছে আরো আস্থা অর্জন করে ফেলুন। অনিয়ম, দূষণ আর নিজের প্রতি অযত্ন বিভিন্ন কারণে আমরা দিন দিন হয়ে পরছি শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল। এখনই সময় এসব বিষয়কে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার। নিয়মিত শারীরিক ব্যয়াম, যোগাসন, হাঁটাহাটি করে শরীরকে গড়ে তুলতে হবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। এই করোনার ভয়াবহ সময়ে একটি শব্দ খুব বেশি করে শোনা যাচ্ছে, সেটা হলো ইমিউনিটি। করোনা থেকে বাঁচতে হলে বাড়াতে হবে শরীরের ইমিউনিটি শক্তিকে। সেটা বাড়ানোর জন্য শরীরকে দিতে হবে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য, যথোপযুক্ত ভিটামিন। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, মাছ মাংস খেতে হবে। সাথে শরীরেকে দিতে হবে প্রাকৃতিক ভিটামিনও। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। তবে শুধু ভিটিমিন-সি খেলেই অসুস্থ হবে না, এর কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ এখন নেই। বরং পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাসের সাথে, নিয়মিত ভালো ঘুম দরকার। বিশেষ করে রাতের ঘুম। এটা প্রতিনিয়ত অভ্যাস করতে হবে। করোনাভাইরাসের আকস্মিক আক্রমণ, আমরা আজও আমাদের এই ভয়াবহ শত্রুকে সম্পূর্ণ জানতে পারিনি। আজ দশ মাস পর এ দেশের নাগরিক হিসেবে এই গণশত্রু থেকে সামান্যতম শিক্ষা নিয়েও যদি আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে সঠিক দিক-নির্দেশনামূলক সিদ্ধান্ত নিয়ে অগ্রসর হতে পারি সেটাতেই আমাদের সফলতা আসবে। আর এই আশীর্বাদ করেই বিদায় নিতে চলেছে ২০২০ আর এটাই শিক্ষা দিয়ে গেল স্বাস্থ্যই বড় সম্পদ যা মানবজাতির সকল অহংকার কে হার মানিয়ে দিয়েছে।

6 thoughts on “সকল অহংকার কে হার মানিয়ে স্বাস্থ্যই সম্পদ শিখিয়ে দিয়ে গেল ২০২০.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *