দু-দশটা বিধায়কভোটের আগে চলে গেলে কোনও ক্ষতি হবে না, আমি গেলেও না: সুব্রত মুখোপাধ্যায়
1 min readদু-দশটা বিধায়কভোটের আগে চলে গেলে কোনও ক্ষতি হবে না, আমি গেলেও না: সুব্রত মুখোপাধ্যায়
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর যেন ফ্লাড গেট খুলে গেছে। তৃণমূলের বুথ সভাপতি, ব্লক সভাপতি, বিধায়ক, সাংসদ, জেলা পরিষদের সদস্য মায় কেউ ইস্তফা দিচ্ছেন তো কেউ ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলছেন। পরিস্থিতি যখন এমনই তখন বিষ্যুদবার তপসিয়ায় তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রবীণ নেতা ও পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘দু-দশটা বিধায়ক ভোটের আগে চলে গেলে দলের ক্ষতি হবে না। আমাদের দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চলে। এত বড় দল, আমি বা অন্য কেউ যদি না থাকি তাহলে কোনও প্রভাব পড়বে না’। এদিন বস্তুত দ্বিবিধ ব্যস্ত ছিল তৃণমূল। এক, দলের ভাঙনের ব্যাপারে। যা নিয়ে নানান প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে। দুই, তিন আইপিএস কর্তাকে কেন্দ্রে ডেপুটেশনে পাঠানোর ঘটনাটি রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনার বিষয় ছিল। এই দুই বিষয়ই যেন স্ট্রেট ব্যাটে খেলতে চেয়েছে তৃণমূল।
আইপিএস কর্তাদের বদলির প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে বলেছেন, এটা অসাংবিধানিক। এটা কোনও ভাবেই মানা হবে না। রাজ্যের অফিসারদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আর সুব্রতবাবু এ বিষয়ে বলেন, ওরা যদি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে চায় তো করে দেখাক! পর্যবেক্ষকদের মতে, পরিস্থিতি এখন যা তাতে দলের সকলের মনোবল ধরে রাখাই তৃণমূলের সামনে চ্যালেঞ্জ। সেই কাজটাই করার চেষ্টা করছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়রা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে দলের কর্মী, সমর্থকদের আবেগ উস্কে দিয়ে বেঁধে রাখতে চেয়েছেন তাঁদের। কারণ, তৃণমূলে দিদিকে নিয়ে আবেগটাই বড় পুঁজি, অমূল্য সম্পদ। সুব্রতবাবু প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গে কংগ্রেস রাজনীতি করেছেন।
১৯৮৪ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যাদবপুর থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী করার নেপথ্যে সুব্রতবাবুর ভূমিকা ছিল। সে ঘটনা অতীত। বর্তমান বাস্তব হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভার প্রথম মেয়াদে পঞ্চায়েত মন্ত্রী হিসাবে তিনি অসামান্য কাজ করেছিলেন বলেই অনেকে মনে করেন। দ্বিতীয় মেয়াদে অবশ্য ততটা সক্রিয় ভাবে তাঁকে দেখা যায়নি বলেই তাঁর মত।
তবে সুব্রতবাবুর নাম না করে এদিন তাঁর কথার সূত্র ধরেই সমালোচনা করেছেন তৃণমূলে একদা তাঁর সহকর্মী মুকুল রায়। সুব্রতবাবু বলেছেন, আমাদের দল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চলে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি বলেন, এটাই তো সমস্যা।
তৃণমূলের কোনও মতাদর্শ নেই। ওই দলের কাউকে প্রশ্ন করুন, তৃণমূলের মতাদর্শ কী? বলবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জিজ্ঞেস করুন তৃণমূলে কী ভাল? বলবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আসলে মতাদর্শহীন একটি দল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মতো। ঐতিহাসিক ভাবে প্রমাণিত সত্য যে এমন দলের অস্তিত্ব বেশিদিন থাকে না। আমি চার বছর আগে তৃণমূল ছেড়েছি। আমার থেকে ভাল সেটা কেউ জানে না। তৃণমূলেরও শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। লিখে রাখুন।