October 28, 2024

শুভেন্দুর পথেই হাঁটছেন সুনীল-শীলভদ্র-বিশ্বজিত্‍-কণিষ্ক?‌

1 min read

শুভেন্দুর পথেই হাঁটছেন সুনীল-শীলভদ্র-বিশ্বজিত্‍-কণিষ্ক?‌

শাসক শিবিরে রক্তক্ষরণ অব্যাহত। শুভেন্দুর পর দল ছাড়লেন জিতেন্দ্র তিওয়ারিও। শুক্রবারই তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে আসানসোলের প্রাক্তন পুরপ্রশাসকের এই সিদ্ধান্তে রীতিমতো হতচকিত রাজনৈতিক মহল। এদিনই পুরপ্রশাসকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন জিতেন্দ্র। সূত্রের খবর, তারপরই নাকি তাঁর পার্টি অফিসে হামলা চালানো হয়। তাতেই আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ঘন্টাখানেকের মধ্যেই দলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিলেন তিনি।এদিন ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‌মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মান করি, তাঁকে বিড়ম্বনায় ফেলছেন ফিরহাদ।’‌ তবে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘বিজেপিকে পছন্দ করি না, যাচ্ছিও না। মমতা ব্যানার্জির পর শুভেন্দুই সবথেকে বড় নেতা। তাঁকে দলে রাখা উচিত ছিল।’ ফিরহাদকে লেখা জিতেন্দ্রর একটি চিঠি প্রকাশ্যে চলে আসার পরই ফাটল নজরে আসে।

প্রাক্তন পুরপ্রশাসকের বক্তব্য, ‘‌রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের টাকা ব্যবহার করতে দিচ্ছে না রাজ্য সরকার!’‌ এদিন দল থেকে ইস্তফা দিয়ে জিতেন্দ্র বলেন, ‘‌সমস্যার কথা বললেই বিজেপি তকমা দেওয়া হচ্ছে। যেতে না চাইলেও ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। আসানসোলের উন্নয়নের স্বার্থে লড়তে হবে।’‌সূত্রের দাবি, শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদান এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। জিতেন্দ্র শুভেন্দুর পথ অনুসরণ না করলেও বর্ধমান পূর্বের ‘‌বিদ্রোহী’‌ তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলও যে বিজেপিতে যাচ্ছেন, তা মোটামুটি পরিষ্কার।

 

মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভাতে শুভেন্দু-সুনীল একসঙ্গে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাতে পারেন। শুভেন্দুর ইস্তফার পরই কাঁথিতে সক্রিয় তৃণমূল। দু’‌টি দলীয় কার্যালয় দখলের ঘটনাও ঘটে। সূত্রের খবর, দু’‌টি কার্যালয়ের বাইরে লেখা ছিল শুভেন্দু অধিকারী সহায়তা কেন্দ্র। পার্টি অফিসের গেরুয়া রঙ বদলে নীল-সাদা রঙ করা হয়েছে। লাগানো হয়েছে তৃণমূলের পতাকা। এদিন সুনীলের কাঁকসার বাড়িতে শুভেন্দুর সমর্থনে লাগানো পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তা নিয়ে ‘‌বিক্ষুব্ধ’‌ সাংসদ বলেন, ‘‌যত ছিঁড়বে, ততই বাড়বে বিরোধিতা।’‌

এদিন কলকাতায় শুভেন্দুর বাড়ির সামনেও মমতা-অভিষেকের ছবি সহ পোস্টার পড়েছে। পাশের একটি হোর্ডিং-এ লেখা, ‘‌ সম্মান-অসম্মান। যে দল গোটা পরিবারকে বহুরকম পদ দিল, ক্ষমতা দিল, উচ্চতা দিল তারা? নাকি নারদের টাকা নেওয়ার ভিডিও দেখিয়ে যারা গ্রেফতার চেয়ে পায়ে সিবিআই-ইডির শিকল পরিয়ে দিল তারা? আসল কারণটা কী?’‌শুভেন্দু-সুনীল, ‘‌দুই ভাই’ ছাড়াও তালিকায় রয়েছেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, কালনার বিধায়ক বিশ্বজিত্‍ কুণ্ডু, শুভেন্দু অনুগামী ও তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত নেতা কণিষ্ক পণ্ডা।

এদিন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সম্পাদক‌ কণিষ্ক। বলেন, ‘‌দার্জিলিং থেকে দিঘা, ৭০ থেকে ৭২ জন বিধায়ক, ১০ থেকে ১২ জন সাংসদ, ৪ থেকে ৫ জন জেলা সভাধিপতি অমিত শাহের সভায় যোগ দেবেন বিজেপিতে।’‌ সূত্রের দাবি, বিভিন্ন তৃণমূল নেতাদের থেকে নেওয়া ঋণের টাকা মেটাতে শুরু করে দিয়েছে শীলভদ্র দত্ত। তৃণমূলের টিকিটে বিধানসভা ভোটে আর দাঁড়াবেন না, এই সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলেন তিনি। ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, দলবদলের আগে ধারদেনা নিয়ে যাতে কটাক্ষ শুনতে না হয়, তারই প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল বিধায়ক।এদিন শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, যদি কেউ দল ছেড়ে অন্য কোথাও যোগদান করেন, তাতে প্রচারে খানিকটা প্রভাব পড়লেও মাটিতে তেমন প্রভাব পড়বে না। তৃণমূল কংগ্রেস শুভেন্দু অধিকারীকে একাধিক পদ দিয়েছে। মমতা ব্যানার্জি তাঁকে ভরিয়ে দিয়েছেন। আর এই বিজেপিই তাঁকে চোর বলে গালাগালি করেছে। একটাই প্রশ্ন, শুভেন্দু কী এসব ভালবেসে করছে না ভয়ে করছে?’‌ শুভেন্দুকে বিজেপিতে স্বাগত জানিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। যদিও দলবদলের হিড়িককে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, আগামী ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুর কলেজ মাঠে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাই বদলে দেবে বঙ্গ রাজনীতির সমস্ত সমীকরণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *