কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক মন্ডলীতে তৃণমূল নেতা রাজীব সাহা যুক্ত হওয়ায় ক্ষুব্ধ কালিয়াগঞ্জ তৃণমূল নেতা ও কমিশনাররা
1 min readকালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক মন্ডলীতে তৃণমূল নেতা রাজীব সাহা যুক্ত হওয়ায় ক্ষুব্ধ কালিয়াগঞ্জ তৃণমূল নেতা ও কমিশনাররা ।এটা কিসের ইঙ্গিত ?
তনময় চক্রবর্তী করোনা আবহের জেরে গত সাত মাস ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে পৌর ভোট রাজ্যে। মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় রাজ্যের বিভিন্ন পৌরসভায় বসেছে প্রশাসক মন্ডলী। আর তার সাথে তাল মিলিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ পৌরসভাতেও প্রসাশক মন্ডলী কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা পরিচালনা করতে থাকে। যার নেতৃত্বে ছিল প্রাক্তন পৌর প্রধান কার্তিক চন্দ্র পাল। আর সঙ্গে সেই প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য ছিল প্রাক্তন উপ পৌরপ্রধান বসন্ত রায়। দেখতে দেখতে এই প্রশাসক মন্ডলী সাত মাস ধরে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন কাজ করে আসছিল সুনামের সাথে।
ধীরে ধীরে কালিয়াগঞ্জ শহরে একের পর এক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় প্রশাসক কার্তিক চন্দ্র পাল এর নেতৃত্বে উন্নয়নমূলক কাজ যখন হয়ে চলছে ঠিক তখন নতুন করে আবার প্রশাসক মন্ডলীতে রাজ্যের নগর উন্নয়ন দপ্তরের জারি করা নির্দেশে তিনজনকে নতুন করে যুক্ত করায় সে নিয়ে চাপা বিতর্ক শুরু হয়েছে চারদিকে। দলের অন্দরেই চলছে এই নিয়ে চাপা ক্ষোভ। জানা যায় এই প্রশাসক মন্ডলীতে নতুন করে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা হলেন প্রাক্তন কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার কমিশনার ঈশ্বর রজক, প্রাক্তন কমিশনার সীমা দাস চ্যাটার্জী এবং তৃণমূল নেতা রাজীব সাহা। বিতর্কে সূত্রপাত এখান থেকেই যে রাজিব সাহা তৃণমূল নেতা হয়ে কিভাবে এই প্রশাসক মন্ডলীতে যুক্ত হতে পারল। কালিয়াগঞ্জে কি কোন অভিজ্ঞতাসম্পন্ন তৃণমূলের কোন কমিশনার ছিল না। যারা কয়েকবার জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে পৌরসভার কমিশনার হয়েছিলেন। যার পৌরসভায় কাজকর্ম করার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ছিল। কিন্তু এখানে দেখা যাচ্ছে সেটাকে কোন প্রাধান্য না দিয়ে পৌরসভাকে দল দাসে পরিণত করার জন্যই এখানে তৃণমূল নেতাকে প্রশাসক মন্ডলীতে যুক্ত করা হলো। আর এইখানেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যেই। অনেক তৃণমূলকংগ্রেস কর্মীরা বলেন যেভাবে পৌরসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা রাজীব সাহা কে যুক্ত করা হলো তা অনৈতিকভাবে করা হয়েছে। এখানে পৌরসভার অনভিজ্ঞ সম্পন্ন এই ধরনের মানুষকে না দিয়ে যারা কমিশনার ছিলেন তাদের মধ্যে কি নেওয়া যেতে পারত না। এটা কিসের ইঙ্গিত বহন করে ?তাহলে কি কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা কে দলদাসে পরিণত করল এবার তৃণমূল কংগ্রেস। এখানে কি অভিজ্ঞতার কোন দাম নেই। অনেক তৃণমূল নেতা আছে কালিয়াগঞ্জ এ তারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের মুখে বলতে শোনা গেল তৃণমূল কংগ্রেসের সবকিছুই সম্ভব। এখানে যার যত সেটিং রয়েছে সে ততো তাড়াতাড়ি উপরে উঠতে পারবে। এখানে অভিজ্ঞতার কোন দাম নেই। শুধু তাই নয় কালিয়াগঞ্জ পৌরসভায় নতুন করে যে তিনজন যুক্ত হল প্রশাসক মন্ডলীতে সে ব্যাপারে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার অনেক তৃণমূল কংগ্রেস কমিশনাররা ভীষণ ক্ষুব্ধ দলীয় নেতৃত্বের উপর। প্রাক্তন কমিশনার দের মধ্যে অনেককে বলতে শোনা গেল দাদা এই পার্টি এখন শেষের পর্যায়ে। তাই এরকম সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমরা তো অনেকদিন ধরে কমিশনার হয়ে কাজ করছি আমাদের তো আর কোন দাম নেই। যাদের গ্রহণযোগ্যতা কম মানুষের কাছে তারাই এখন বিরাজ করছে এই পার্টিতে। আর তারাই দাম পাচ্ছে বারে বারে। কালিয়াগঞ্জ এর কংগ্রেসের প্রাক্তন কমিশনার মঞ্জুরি দত্ত দাম বলেন, কালিয়াগঞ্জ পৌরসভায় প্রসাশক মন্ডলীতে যে তিনজন নতুন করে যুক্ত হলো তা সম্পূর্ণ অনৈতিক। পৌরসভাকে জনগণের পুরসভা না করে তৃণমূল কংগ্রেসের পৌরসভা করা হয়েছে এখন। আর সেটা না হলে কমিশনাররাই এই প্রশাসক মন্ডলীতে স্থান পেত। তিনি বলেন এই ধরনের কাজ যারা করে তাদেরকে আগামী দিনে মানুষই জবাব দিবে ভোটের বাক্সে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আর তৃণমূল কংগ্রেসে সবই সম্ভব এখন। কালিয়াগঞ্জ এ অনেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কমিশনাররা থাকা সত্বেও কি ভাবে দলীয় নেতা কে এখানে প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য করা হলো সে নিয়ে তারা ভীষণ ক্ষুব্ধ। এখন আর জনগণের পৌরসভার নয় এটি এখন শুধুমাত্র পৌরসভা হয়েছে তৃণমূলের। অন্যদিকে প্রাক্তন সিপিএমের কমিশনার জ্ঞানেন্দ্র শংকর মজুমদার বলেন, নগর উন্নয়ন দপ্তর থেকে জারি করা নির্দেশে কিভাবে তৃণমূল নেতা পৌরসভার কমিশনার না হয়েও সেখানে যুক্ত হতে পারল প্রশাসক মন্ডলীতে সেটি খুব চিন্তার বিষয়। এই ধরনের কাজ গণতন্ত্রের দেশে কখনোই মানা যায় না। অনৈতিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেস এই কাজটি করে বিরাট বড় অপরাধ করে ফেলেছে। এই প্রশাসক মন্ডলীতে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কমিশনারদের জায়গা পাওয়া উচিত ছিল। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের কমিশনার দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে তারা । তারা বলেন ভোটের আগে কালিয়াগঞ্জ এ আবারও এই ধরনের অনৈতিক কাজ করে নিজেদের মধ্যে একটা বিভেদ সৃষ্টি করলো রাজ্যের নগর উন্নয়ন দপ্তর। এটা কিসের ইঙ্গিত ? অনেকে আবার বলছেন কালিয়াগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে পৌর প্রশাসক এর সঙ্গে বিধায়কের ভালো সম্পর্ক না থাকার জন্যই বিধায়কের মনোনীত কমিশনার ঈশ্বর রজক ও রাজিব সাহা কে এখানে যুক্ত করা হলো প্রশাসকের উপর নজরদারি চালানোর জন্য। অনেক তৃণমূল নেতা বলেন এই অনৈতিক কাজের জবাব আগামী পৌরসভা নির্বাচনে পড়বে এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।