October 28, 2024

দাদার নিরাপত্তায় কোর টিম আরো চাপে ফেলল দিদিকে!

1 min read

দাদার নিরাপত্তায় কোর টিম আরো চাপে ফেলল দিদিকে!

 আর দাদার অনুগামীদের আত্মবিশ্বাস এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে, সেখানে দিদির লোকেরা প্রমাদ গুনতে শুরু করেছে। এমন রাজনীতি বাংলার মানুষ যে প্রত্যক্ষ করবেন তা বোধহয় কয়েক মাস আগেও বোঝা যায়নি। কিন্তু রাজনীতিতে শেষ কথা বলে যে কিছু হয় না তা ফের প্রমাণিত হল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবার কাছে দিদি নামেই পরিচিত। দিদির সৈনিকরা তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে জান লড়িয়ে দিচ্ছেন দলের কাজে।বাংলার রাজনীতি এতদিন আবর্তিত হয়েছে দিদিকে ঘিরে। এবার সেখানে প্রবেশ ঘটেছে দাদার।সেখানে দলের মধ্যে তিনিই ছিলেন শেষ কথা। কিন্তু হঠাত্‍ই তৃণমূলে নতুন রূপে আবির্ভাব ঘটল দাদা অর্থাত্‍ শুভেন্দু অধিকারীর। 

দাদা যেভাবে দল না ছেড়েও বেসুরো হয়ে কথা বলছেন, তাতে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছেন দিদির অনুগামীরা। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে দাদা ও দিদির অনুগামীদের মধ্যে সহস্র মাইল দূরত্ব তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন প্রায় নিয়ম করে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে নাম না করে তৃণমূলের একশ্রেণির নেতাদের উদ্দেশ্য করে তোপ দাগছেন তাতে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে জোড়া ফুল শিবির।আর ঠিক সেই সময় আত্মপ্রকাশ করল শুভেন্দুর নিরাপত্তায় তৈরি হওয়া নতুন টিম। এই টিমে থাকছেন শুভেন্দু অর্থাত্‍ দাদার অনুগামীরা। যারা দাদা অন্তপ্রাণ তাঁদের মধ্য থেকে বাছাই করে প্রায় ৮০ থেকে ১০০ জনের মতো একটি দল তৈরি করা হয়েছে। সেই দলের ছেলেদের গায়ে থাকছে শুভেন্দুর ছবি সম্বলিত গেঞ্জি। পূর্ব মেদিনীপুরের পাশাপাশি বিশেষ করে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে শুভেন্দু যখন সফর করবেন তখন তাঁর নিরাপত্তায় এই বাহিনীকে দেখা যাবে। যে ঘটনায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।এখন প্রশ্ন শুভেন্দুর তো সরকারি নিরাপত্তা ছিল, তাহলে তাঁর এমন নিরাপত্তা বাহিনীর প্রয়োজন হল কেন? উত্তর একটাই, তৃণমূল নেতৃত্বকে আরো বেশি চাপে ফেলতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দাদার অনুগামীরা। আসলে শুভেন্দুর অনুগামীরা বুঝিয়ে দিতে চান তাঁদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত্‍ আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে দাদাকে ঘিরে। সেখানে তাঁরা আগামী দিনে তৃণমূল বা অন্য কোনো দলেই থাকুন না কেন, তাঁদের রাজনীতি আবর্তিত হবে শুধুমাত্র শুভেন্দুকে ঘিরেই। তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশেষ বার্তা দেওয়ার জন্যই এমন পদক্ষেপ করছেন শুভেন্দু অনুগামীরা তা বুঝতে অসুবিধা হয় না।আসলে তাঁরা তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে এই বার্তা দিতে চান যে, শুভেন্দু অধিকারী একজন জননেতা। তিনি সব সময় মানুষের সঙ্গে থাকেন। রাজ্যে পরিবর্তনের জন্য তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য। মূলত এই বার্তা দেওয়ার জন্যেই এবং নতুন করে তৃণমূল নেতৃত্বের নজর কাড়ার জন্যই এমন নিরাপত্তা টিম তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যদিও শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যে বিষয়টি নিয়ে একটি কথাও বলেননি।আর সবকিছু দেখেশুনে রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনও মুখে কুলুপ এঁটেছে। তবে কি শুভেন্দু অনুগামীরা আগামীদিনে এভাবেই দাদাকে সামনে রেখে রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন চালাতে চাইছে? কারণ শুভেন্দু অনুগামীরা জানেন তাঁর দলে থাকাটা বা না থাকাটা কতটা প্রভাব ফেলতে পারে সামনের বিধানসভা নির্বাচনে। এমনিতেই গত লোকসভা নির্বাচনে ফলের নিরিখে দেখা গিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতে বিজেপির ভোট কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে।সংগঠনহীন বিজেপি যদি এত ভোট পায় সেখানে শুভেন্দুর মতো জননেতা যদি গেরুয়া শিবিরে যান তবে তাঁদের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হবে না তা পরিষ্কার। তাই যতদিন যাবে নানা ভাবনা ও ঘটনা প্রবাহের মাধ্যমে শুভেন্দু অধিকারীর কোর টিম রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্বের আরো বেশি করে নজর কাড়তে চাইবে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। শুভেন্দু অনুগামীদের এই চাপের রাজনীতি তৃণমূল কতটা হজম করতে পারে সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *