১০ নভেম্বর চিনিয়ে দিল ববি- দোলা-পুর্নেন্দু কে , রাজনৈতিক পাঠ শেখা বাকি।
1 min read১০ নভেম্বর চিনিয়ে দিল ববি- দোলা-পুর্নেন্দু কে , রাজনৈতিক পাঠ শেখা বাকি।
১৩ নভেম্বর, শুক্রবার। জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ, উঃ দিনাজপুর।দলটির নাম তৃণমূল কংগ্রেস, জন্ম ১৯৯৮ সাল, দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যার রাজনৈতিক ক্যারিশমায় দলীয় দীর্ঘ সংগ্রামের পথ ধরে চলতে চলতে ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকার কে জনগনের হৃদয় থেকে সরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকার গড়তে সাহায্য করে। বিভিন্ন গন আন্দোলন কে সকল স্তরের কর্মীদের সমর্থনে ও সহযোগিতায় সার্থক করে তুলতে সামর্থ হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিন্তু কখনোই একক ভাবে নয়।
আর বাস্তবেও একা কেউ করতে সামর্থ হবেন না। এটা ছিল দলগত সাফল্য এবং পাশে পেয়েছিলেন অগনিত লড়াকু সৈনিকদের আর তিনি ছিলেন এই রাজনৈতিক যুদ্ধ মঞ্চের চিফ। সরকারের দ্বায়িত্বে ১০ বছর পূর্ণ হতে চললো। এই সময়কাল চলার পথে অনেক ইতিহাস রচিত হয়ে আছে। কর্মীদের মধ্যে মান অভিমান খেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তির শ্রীবৃদ্ধি হয়তো ঘটেছে কিন্তু সংগঠনের গ্রামার কি জিনিষ তা হয়তো ঠিক মতো কর্মীরা জানেন না বা তাদের পড়ানো হয় নি, শিক্ষা দেওয়া হয় নি। যা হয়েছে তার সবটাই আবেগ তাড়িত।
কর্মীদের কথা বাদ দিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াকু নেতা গোছের নেতৃত্বরাও কি রাজনৈতিক সংগঠনের গ্রামার পরেছেন কিনা সন্দেহ আছে আর এই সন্দেহ বিশেষ করে উঁকি দেওয়ার চেয়ে জনসমক্ষে প্রস্ফুটিত হয়েছে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ভূমি রক্ষা প্রতিরোধ কমিটির ১৩তম বর্ষপূর্তি উৎসবে। মমতার বন্দোপাধ্যায়ের এক অন্যতম লড়াকু সৈনিক শুভেন্দু অধিকারী তার রাজনৈতিক জাত সৈনিকের পরিচয় দিয়ে দিয়েছিলেন অনেক আগেই। যখন যেমন যেকোনো রাজনৈতিক ব্যাটল ফিন্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারী কে কোনো দ্বায়িত্ব দিয়েছেন সেখানে দলের ঝানডা ও সিম্বল কে সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন, চিনিয়ে দিয়েছেন নিজের রাজনৈতিক কোয়ালিটি কে।
বর্তমানে চলতে থাকা এক অদৃশ্য এলার্জির চর্মরোগে আক্রান্ত তৃণমূল কংগ্রেস। কোভিড এ আক্রান্ত সমগ্র দেশের সাথে রাজ্য। আর এই কোভিড আক্রান্তের ফলে সকলে সকলের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলতে গিয়ে রাজনৈতিক প্লাটফর্মেও তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক দূরত্ব তৈরী হতে থাকে। আর এই দূরত্বের অন্যতম এলার্জি ভাইরাস হলো পিকে এবং গোষ্ঠি কোন্দল নামক দুটি ভাইরাস। এর এলার্জির মধ্যেই সচল ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক প্রক্রিয়া। পুরোনো সিস্টেম কে সরিয়ে নতুন সিস্টেমের সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় আরো একটি ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে তা হলো লড়াকু সৈনিকদের মধ্যে ” ইগো ” নামক ভাইরাস। আর এই ইগো নামক বিষয়টি নিয়ে এক একজন লড়াকু সৈনিকরা এক একজনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন।
কিন্তু অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম ছিল ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামের ভূমি রক্ষা প্রতিরোধ কমিটির উদযাপন বর্ষের প্লাটফর্ম যা ১২ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াকু নেতৃত্বদের নেতৃত্বে। অরাজনৈতিক প্লাটফর্মে লাখো মানুষের জমায়েতে সেটা নন্দীগ্রামেই হোক আবার অন্যত্র বিজয়া সম্মিলন উপলক্ষে হোক শুভেন্দু অধিকারীর মঞ্চের সামনে লাখো মানুষের সমাগমে প্রমানিত হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াকু নেতৃত্ব তথা রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জননেতা। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইতিমধ্যেই প্রমাণ হয়ে গেছে। তবে দল তৃণমূল কংগ্রেস কিংবা দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনো সময় কোনো কটূ বাক্য সম্বলিত বক্তব্য পেশ করতে শোনা যায় নি শুভেন্দু অধিকারী কে, তবে নাম না করে নিজের রাজনৈতিক জীবনের গ্লানি কে, অসম্মান বোধ কে তীর্যক ভাবে তার ভাষনে উগরে দিয়েছেন। আর এই উগরে দেওয়াভাষনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়ে যায় চর্চা এমনকি সংবাদ মাধ্যমে প্রতিদিনের মেন মেনু পরিবেশিত হতে থাকে ” শুভেন্দু ” নামক ফ্রাইড রাইস। কিন্তু সপ্তম আশ্চর্যের মতো এই ফ্রাইড রাইস এতটাই যে ভালোবাসেন রাজ্যের তথাকথিত তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক গ্রামার না জানা মন্ত্রী ও রাজ্যসভার সদস্যা যথাক্রমে ববি, পুর্নেন্দু এবং দোলা। সত্যি যে ইনারা সাংগঠনিক গ্রামার জানেন না তার প্রমান করে দিলেন নন্দীগ্রামে এসে পাল্টা সভায় দলের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কটু বাক্য প্রয়োগ করে। মিরজাফর বলতেও ছাড়লেন না। আজ ১২ তারিখ, পিকে ম্যানেজার সোজা চলে যায় শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে কিন্তু দেখা পান নি শুভেন্দু অধিকারীর সাথে। তার অভিভাবক শিশির অধিকারের সাথে কথা হয়েছে পিকে ম্যানেজারের। ববি, পুর্নেন্দু, দোলা একটু ভাবুনতো আপনার দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো কটু বাক্য দূরের কথা একটাও বিরুপ মন্তব্য করেন নি শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। তাহলে ববি, পুর্নেন্দু, দোলা আপনারা ত্রয়ীরা প্লান করে করে এসে কি মিটিং এর নাম করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে শুভেন্দু অধিকারী কে সরিয়ে নিজেরা খুব কাছের হতে চাইলেন নয় কি? তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ তথা অধিকারি পরিবারের দিব্যেন্দু অধিকারি তার ভাষনে বক্তব্য রাখলেন আসল মিরজাফর কে তা আগামী দিন বলবে। না,না আগামী দিন নয় , গতকাল আপনারা ত্রয়ীরা প্রমান করলেন এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসের আসল মিরজাফর আপনারা এই উক্তি রাজ্য রাজনীতির আঙ্গিনায় অসংখ্য মানুষের, অসংখ্য তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের, অসংখ্য বিধায়কদের মনের কথা মাত্র। কোনো এক তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াকু নেতা বললেন দোলা, ববি, পুর্নেন্দু কে একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্মে এসে রাজ্যের যেকোনো প্রান্তে মিটিং এর আয়োজন করে দেখাক কত মানুষের সমাগম করতে পারে। শুধু তাই নয় আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ববি, পুর্নেন্দু নিজের এলাকার নিজের বিধানসভার সিট টি জিতিয়ে আনতে পারবেন তো ? আর দোলা সেন যিনি শ্রমিক ইউনিয়নের নেত্রী। মমতার বন্দোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ ছাড়া , তৃণমূল কংগ্রেসের লোগো ছাড়া একক কৃতিত্বের কিছু ক্যারিশমার কোনো রেকর্ড আছে আপনার রাজনৈতিক ট্রাকে? নন্দীগ্রামে ১০ তারিখে মঞ্চে উঠেই গান ধরছিলেন, একবারের জন্য ভেবেছিলেন, দেখেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের পোসটারে, ব্যানারে আচ্ছাদিত ঐ মঞ্চে আরো দুই মন্ত্রীকে সাথে করে গান গাইতে গাইতে মঞ্চের সামনে কতজন মানুষ ছিলেন??? তড়িঘড়ি ডিসিশন নিয়ে পাল্টা সভার আয়োজনে সামিল হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ইজ্জত কে বিসর্জন দিয়ে গেলেন। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই সভায় এত নগন্য জমায়েত যা দেখে স্বয়ং দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবছেন হায়রে আপনাদের ক্যারিশমা। আপনারা যে প্লান করে এসেছিলেন নন্দীগ্রামে ১০ তারিখের মঞ্চে সেতো আপনারা প্রমান করে দিয়ে গেলেন। নন্দীগ্রামের তৎকালীন শহীদ দের উদ্দেশ্যে যে বক্তব্য থাকার কথা ছিল তার চেয়েও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কটাক্ষের বন্দনায় আপনারা ব্যাস্ত ছিলেন বেশি। বিগত ১২ বছর ধরে আপনারা ত্রয়ীরা নন্দীগ্রামের আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নিশ্চয়ই প্রতিবছর আপনারা আসতেন?? আর যেভাবেই হোক নন্দীগ্রামে ১০ তারিখ তড়িঘড়ি করে যখন তৃণমূল কংগ্রেসের মঞ্চে উঠলেন, চেয়ারে বসলেন তখন মনে পরেনি পাশের চেয়ারে ঐ এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারি নেই কেন বা কেন অনুপস্থিত বা এই মিটিং এর দলীয় আয়োজক কে বলেছিলেন দিব্যেন্দু অধিকারি কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কিনা? আগে শিখতে হবে সাংগঠনিক ব্যাকরণ তারপর অন্য কেউ ব্যাকরণ জানেন কিনা সেই নিয়ে প্রশ্ন তোলা নিজেকে মূর্খ বলে পরিচয় দেওয়া। জননেতা, জননেত্রী হতে হলে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে হয়, কারো বিরুদ্ধে চটকদার কটু বাক্য প্রয়োগ করে হাততালি কুড়িয়ে জননেতা হওয়া যায় না। আজকেও ঘাটালে একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্মে হাজার হাজার জনসমাগমের মাঝে শুভেন্দু অধিকারী নিজেকে তৃণমূল কংগ্রেসের একজন লড়াকু জাত সৈনিক হিসেবে চিনিয়ে দিয়েছেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখেই। আজকে ঘাটালে এই বক্তব্যের রেশ টেনে আগামী কাল কি আপনারা ত্রয়ীরা আবার বলবেন শুভেন্দু অধিকারী কে মিরজাফর ? নাকি ববি, পূর্নেন্দু কে পাশে বসিয়ে দোলা গান ধরবেন মান্না দের সেই বিখ্যাত গান ” সুন্দরী গো, দোহাই তোমায় মান করো না” ।