October 23, 2024

রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে দীপা দাশমুন্সিই কংগ্রেস প্রার্থী হতে চলেছেন

1 min read
নিজস্ব প্রতিনিধি :- রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে দীপা দাশমুন্সিই কংগ্রেস প্রার্থী হতে চলেছেন। এরফলে জেলা কংগ্রেস শিবিরে একটি দীর্ঘপ্রতীক্ষার অবসান হল। বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা নিয়ে টানাপোড়েনের কারণে রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দিতে পারবে কি না তা নিয়ে কিছুদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছিল। জেলা কংগ্রেস এই আসনে দীপাকে প্রার্থী চেয়ে আগে থেকেই অনড় ছিল। কিন্তু পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে কি না একসময়ে সেই প্রশ্ন সামনে উঠে আসে। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেস সাফ জানিয়েও দিয়েছিল, এই আসনে সিপিএমের হয়ে তারা ভোট চাইতে পারবে না। কংগ্রেস প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল রায়গঞ্জ আসন তাদেরকে দিতে হবে। তাই এই আসন তাঁরা ছাড়তে পারবে না। কিন্তু শেষপর্যন্ত এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে কি না তা নিয়ে দলের নেতা, কর্মী ও সর্মথকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা ছিল। রবিবারই জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত দাবি করেছিলেন দীপা দাশমুন্সি এই কেন্দ্রের প্রার্থী হচ্ছেন। সোমবার সকাল থেকে কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে এই বিষয়টি নিয়ে উৎসাহ দেখা যায়। বিকালে দীপা দাশমুন্সির নাম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে ছড়িয়ে পড়তেই দলীয় কর্মী সর্মথকরা আবেগে ফেটে পড়েন। রায়গঞ্জ লোকসভা আসন থেকে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়, মায়া রায়, গোলাম ইয়াজদানি, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, দীপা দাশমুন্সির মতো কংগ্রেস নেতারা এর আগে জয়ী হয়েছিলেন। মাঝে পরপর তিনটি টার্মে বামেদের সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও গতবার বামপ্রার্থী মহম্মদ সেলিম হয়েছেন জয়ী হন।

জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিতবাবু বলেন, রায়গঞ্জ আসনটি কংগ্রেসের, এই দাবি আমি আগেও করেছি। আমরা অনেক আগেই বলেছিলাম এই আসন থেকে দীপা দাশমুন্সি প্রার্থী হবেন। কিন্তু বামেরা আগেভাগে এই আসনে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দেয়। এরফলে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। আমরা সমস্ত পরিস্থিতি রাজ্য নেতৃত্বকে জানাই। সোনিয়া গান্ধী রাজ্যের ৪২টি আসনেরই লড়ার অনুমোদন দিয়েছেন। তারমধ্যে দীপা দাশমুন্সির নামও রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করে দিয়েছি। রায়গঞ্জ কংগ্রেসের দুর্ভেদ্য দুর্গ বলে চিরকালই পরিচিত ছিল। স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘসময় এই আসনটি কংগ্রেসের দখলে ছিল। ১৯৫৭-১৯৬৭ সালে পরপর তিনবার কংগ্রেসের চপলাকান্ত ভট্টাচার্য জয়ী হয়েছিলেন। এরপর এই আসন থেকে ১৯৭১ সালে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়, ১৯৭২ সালে তাঁর স্ত্রী মায় রায় জয়ী হন। তারপর ১৯৭৭ সালে কংগ্রেস ফর ডেমোক্রেসি থেকে হায়াত আলি জয়ী হন। ১৯৮০ সাল থেকে পরপর তিনবার গোলাম ইয়াজদানি এই আসনে কংগ্রেসের হয়ে জয়ী হয়েছিলেন। এরপর ১৯৯১ সাল থেকে পরপর তিনবার বামপ্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই আসনে জয়ী হন। কিন্তু ১৯৯৯ সালে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির কাছে তিনি পরাজিত হন। ২০০৪ সালে ফের রায়গঞ্জ লোকসভা আসন থেকে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি জয়ী হয়েছিলেন। এরপরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি ২০০৯ সালে এই আসন থেকে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। যদিও ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে দীপাদেবী বাম প্রার্থী সেলিমের কাছে পরাজিত হন। 
এবারের লোকসভা নির্বাচনের দামামা বাজতেই জেলায় সবার আগে কংগ্রেসই দীপা দাশমুন্সি প্রার্থী হচ্ছেন বলে প্রচার শুরু করে। কিন্তু বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। বামেরা সেলিমের নাম ঘোষণা করে। আর এতেই ক্ষুদ্ধ জেলা কংগ্রেস জানিয়ে দিয়েছিলে তারা বামেদের হয়ে প্রচারে নামবে না। শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয় কংগ্রেস রাজ্যে একলা চলো নীতি গ্রহণ করবে। সেমতো তারা রাজ্যের ৪২টি আসনের প্রার্থীর নাম হাইকমান্ডের কাছে পাঠায়। হাইকমান্ড তাতে সিলমোহর দেয়। দীপা দাশমুন্সি রায়গঞ্জ আসনে প্রার্থী হলেন। আর সোমবার থেকেই গা-ঝাড়া দিয়ে প্রচারের জন্য তারা ময়দানে নেমেও পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *