October 27, 2024

পথ চলা শুরু মমতার ‘কর্মসাথী’র

1 min read

পথ চলা শুরু মমতার ‘কর্মসাথী’র

আর্থিক উন্নতির মূল সূত্র কর্মসংস্থান। তাই শুধু মুখে নয়, কাজেও ‘আত্মনির্ভর’ হতে হবে। স্বনির্ভর করে তুলতে হবে বেকার যুবক-যুবতীদের। করোনা পর্বের অনেক আগেই এই সারসত্য বুঝতে পেরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বাজেটেই ঘোষণা হয়েছিল তাঁর স্বপ্নের প্রকল্প ‘কর্মসাথী’। দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত মূলধনের ছোট বা মাঝারি ব্যবসার মাধ্যমে আয়ের পথ তৈরি করতেই এই উদ্যোগ। অবশেষে গত ৯ সেপ্টেম্বর এই প্রকল্পের গেজেট নোটিফিকেশন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ‘কর্মসাথী’র খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছে সরকার। আপাতত তিন বছর এই প্রকল্প চলবে। প্রতি বছর এক লক্ষ বেকার যুবক-যুবতী এই প্রকল্পের সুবিধা পাবে বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এর জন্য ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে নবান্ন।ঠিক কী কী সুবিধা দেবে ‘কর্মসাথী’? জানা গিয়েছে, মূলত ছোট ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট, পরিষেবা প্রদানকারী উদ্যোগ বা দোকান খোলার জন্য উৎসাহ দেওয়া হবে।

নিজস্ব মূলধন হিসেবে প্রকল্প মূল্যের ৫ থেকে ১০ শতাংশ টাকা জোগাড় করতে হবে আবেদনকারীকেই। ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রকল্পের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ অর্থের সংস্থান করতে পারলেই হবে। এক্ষেত্রে কোনও বাছবিচার থাকবে না। ন্যূনতম শর্তাবলি পূরণ করে আবেদন জানালেই মুশকিল আসান। ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত প্রকল্পের ক্ষেত্রে নিজের দেয় অংশের পরিমাণ ১০ শতাংশ। যদিও তফসিলি জাতি-উপজাতি, সংখ্যালঘু ও মহিলাদের জন্য এই অঙ্ক ৫ শতাংশই থাকছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রকল্প মূল্যের ১৫ শতাংশ অর্থ শুরুতেই ভর্তুকি দেবে রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পদপ্তর। বাকি ৭৫ বা ৮০ শতাংশ টাকা কম সুদে জোগাবে রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক। সরকারি ভর্তুকির হাতছানি অবশ্য আরও রয়েছে। তিন বছরের মধ্যে ঋণের অংশ নিয়ম করে সুদে-আসলে শোধ করে দিলে উদ্যোগপতির কপালে জুটবে এই বাড়তি ভর্তুকি। সেক্ষেত্রে সরকার মোট সুদের ৫০ শতাংশ অর্থ উদ্যোগকারীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ফিরিয়ে দেবে।গেজেটে বলা হয়েছে, বাংলার গ্রাম ও শহর—উভয় জনপদের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সি কর্মহীন স্থায়ী বাসিন্দারা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন। ঋণ পাওয়ার যোগ্যতামান ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণী (ক্লাস এইট) পাশ। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নাম লেখানো বেকাররা এক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রাধিকার পাবেন। গ্রামবাংলার ক্ষেত্রে বিডিও, জেলার পুর এলাকার জন্য এসডিও এবং রাজধানী শহরের বাসিন্দাদের সরাসরি কলকাতা পুরসভায় আবেদনপত্র জমা করতে হবে। ঋণ ও ভর্তুকির বিষয়ে খোঁজখবর মিলবে এখান থেকেই। এর জন্য তিনটি ক্ষেত্রেই দু’জন করে অফিসারকে নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে পৃথক হেল্প ডেস্ক খোলার নির্দেশ এসেছে। জেলায় একজন এডিএম এবং কলকাতায় পুর কমিশনারকে গোটা প্রকল্পের উপর নজরদারি চালাবেন। তবে তাঁদের এই কাজে সাহায্যের জন্য একটি করে স্টিয়ারিং কমিটি গঠনের কথাও বলা হয়েছে সরকারের তরফে।বিডিও, এসডিও এবং পুর কমিশনারের তরফে অনলাইন বা অফলাইনে জমা পড়া আবেদনপত্র ও নথিসমূহ ডিজিটাল মাধ্যমে পাঠানো হবে সমবায় ব্যাঙ্কে। সেখানে ঋণগ্রহীতাকে আগাম একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। যাচাই পর্বে সব ঠিকঠাক থাকলে সেই অ্যাকাউন্টেই ঋণ ও ভর্তুকির টাকা পাঠিয়ে দেবে ব্যাঙ্ক। তবে ঋণের অংশ দেওয়া হবে দু’দফায়। প্রথম দফায় অর্ধেক টাকা দেওয়ার পর খরচের হিসেব জমা দিতে হবে উদ্যোগপতিকে। তা জমা পড়ার পরই মিলবে দ্বিতীয় দফায় বাকি অংশের টাকা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *