ওঁরা হাসপাতালে কার্তিকের অটোয়
1 min readওঁরা হাসপাতালে কার্তিকের অটোয়
ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা। অটোচালকদের বিরুদ্ধে সর্বত্রই ইদানীং বিস্তর অভিযোগ। কোথাও বাড়তি ভাড়া নিয়ে বচসায় জড়িয়ে পড়া, কোথাও-বা যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার। সোদপুর পঞ্চাননতলার অটোচালক কার্তিক মণ্ডল কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও সম্পূর্ণ অন্য রকম এক অভিজ্ঞতা। বিনামূল্যে আর্তদের পরিষেবা দিয়ে অটোচালকদের মুখ উজ্জ্বল করছেন তিনি।কার্তিকের নিজের অটো।
বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী সীমা আর দশ বছরের ছেলে। বাবা সতীশ মণ্ডল মারা গেছেন। গত ডিসেম্বরে সোদপুরে এক সন্ধ্যায় অটো নিয়ে দঁাড়িয়ে ছিলেন কার্তিক। সেখানে এক বৃদ্ধ দম্পতিকে দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখেন কার্তিক। এগিয়ে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তঁারা জানান, বাস পাচ্ছেন না, কিন্তু হাসপাতালে খুব শিগগিরই যাওয়াটা তঁাদের কাছে খুব জরুরি। অটোয় যাবেন কি না জিজ্ঞেস করলে তাঁরা ভাড়ার কথা চিন্তা করে যেতে রাজি হননি। কার্তিক ওঁদের অসুবিধের কথা চিন্তা করে বুঝিয়েসুঝিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে দেন। ভাড়া দিতে গেলে, কার্তিক ভাড়া নেননি। বরং বলেন, তিনি তাঁদের ছেলের মতো, কিছুতেই ভাড়া নিতে পারবেন না।সে রাতেই কার্তিক বাড়িতে ফিরে সিদ্ধান্ত নেন, এরপর এই ভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকাল থেকে রাত যথাসাধ্য করবেন। পানিহাটি হাসপাতাল হোক কিংবা সাগর দত্ত বা ব্যারাকপুর বিএন বসু হাসপাতাল, বিনামূল্যেই অসহায় রোগীদের পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে টানা সেই কাজ করে চলেছেন কার্তিক। কার্তিকের কথায়, নিজের অটো, নিজের গ্যাস। সারাদিন নিজস্ব রুটে অটোর ভাড়া খাটার মাঝখানে কিছু কিছু অসহায় মানুষের জন্য এই ত্যাগ স্বীকার তঁাকে মানসিক শান্তি দেয়। তিনি এখন অনেকেরই আপনজন, আপদ-বিপদের ত্রাতা। আর তাতেই তাঁর আনন্দ ও সার্থকতার বোধ। এভাবেই চালিয়ে যেতে চান কার্তিক।