অশীতিপর মৃৎ শিল্পী গোপেন পাল জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও বৃদ্ধ ভাতার নাগাল না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে-
1 min readঅশীতিপর মৃৎ শিল্পী গোপেন পাল জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও বৃদ্ধ ভাতার নাগাল না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে-
তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,(উত্তর দিনাজপুর),৪ জুলাই: অশীতিপর বৃদ্ধ মৃৎ শিল্পী গোপেন পাল জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও একটি সরকারি বৃদ্ধ ভাতা পাবার শেষ চেষ্টা করেও ব্যার্থ হলেন।অনেক আশা নিয়ে নেতাদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেও কাজের কাজ কিছুই না হবার ফলে নিরাশ।তিনি আর কাউকে বৃদ্ধ ভাতার পাবার কারনে কোন নেতার কাছে আবদার করবেন না। ফলে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে গোপেন পালকে।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ৮নম্বর মুস্তাফানগর অঞ্চলের মুস্তাফানগর গ্রামে শনিবার সকালে তার কাছে যেতেই বাড়ির সামনে রাস্তাতেই দেখা হল গেল।
মৃৎ শিল্পী গোপেন পাল এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন বাড়ীর পাশের গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে অনেকবার সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে প্রধান সাহেবের সাথে দেখা করেছি।শুধু বলেন করে দেব।একটু অপেক্ষা করতে হবে।অশীতিপর বৃদ্ধ বলেন কত অপেক্ষা করবো আর? আমারতো বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে।সামান্য কটা দিনের জন্য আমি একটু নিশ্চিন্তে কাটাতে পারতাম যদি বৃদ্ধ ভাতাটি পেতাম।কিন্তূ না সেটা আর হলোনা।গোপেন বাবু বলেন নেতাদের আর বিরক্তের কারন হতে চাইনা। গত কুড়ি বছর ধরে চেষ্টা করে করে আমি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি।কুড়ি বছর সময়ের মধ্যেই যখন কিছু করতে পারিনি বাবা।তখন আর এই কয়দিনের জন্য তাদের বার বার করে বলে কোন লাভ যে হবেনা তা বুঝতে আর বাকি নেই।মৃৎ শিল্পী গোপেন পাল বলেন তেলা মাথায় তেল দেওয়া আমাদের স্বভাব।আর এই স্বভাবের আজও পরিবর্তন না হওয়ায় আমার মত মানুষের কপালে আর সরকারি ভাতা জুটবেনা এটাইতো স্বাভাবিক। হত দরিদ্র মৃৎশিল্পী গোপেন পাল দুঃখ করে বলেন চোখে সামনেই দেখছি সরকারি বৃদ্ধ ভাতা গুলি কাদের পাবার কথা আর কারাইবা পাচ্ছে। তাদের মুস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের এমন অনেক মানুষ বৃদ্ধ ভাতা পায় যাদের লজ্জা না হলেও আমার নিজের লজ্জা লাগে।এরা কি ভাবে বৃদ্ধ ভাতা নেয়?যাদের দোতলা বাড়ি,জমি জমা,ছেলে চাকরি সবই ভগবান দিয়েছে।অথচ সরকার থেকে আমাদের অসহায় দের সাহায্য করবার জন্য সরকার থেকে মাত্র মাসিক এক হাজার যেটা বরাদ্দ করা হয়েছে সেটাতেও তাদের ভাগ বসাতেই হবে? আসলে সরকার এখন বোধ হয় নিয়ম পাল্টে দিয়েছে।তাই আমার মত দুস্থ ব্যক্তিদের জন্য এসব নয়।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার তিনি গরিবদের সরকারি সাহায্য পাবার কথা বললেও কোথায় পাচ্ছি?অনেক বলেছি আমাকে একটু সাহায্য করেন।আমার সংসার আর চালাতে পারছিনা।কিন্তু না এরা নিজেদের দলের লোক ছাড়া কিছুই বোঝেনা।বয়সের ভারে কাজ করার ইচ্ছা না হলেও জোর করে মনের সাহসে এখনো মাটির কাজ করে চলেছি পেটের তাগিদে।আগের মত পরিশ্রম করতে পারিনা ফলে মাটির জিনিষ পত্রও আর বেশি বেশি করে বানাতে পারিনা।এ ব্যাপারে ৮নম্বর মুস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি– কংগ্রেস জোটের প্রধান রুমা বালা দেবশর্মাকে গোপেন পাল বৃদ্ধ ভাতা পাবার যোগ্য ব্যক্তি হয়েও কেন তিনি ৮০ বছর বয়সেও বৃদ্ধ ভাতা পাচ্ছেনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন এই মুহূর্তে তপশিলি জাতি এবং উপজাতি শ্রেণীর বয়স্কদের বৃদ্ধ ভাতা দেওয়া হল।এর পর সাধারনদের দেওয়া হবে।তখন ওনার ব্যবস্থা হবে বলে জানান। যোগ্য ব্যক্তি হয়েও ৮০ বছরের বৃদ্ধ গোপেন পালের আজও বৃদ্ধ ভাতা না পাবার কারন জানতে চাইলে কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীপা সরকার বলেন গোপেন পালের বৃদ্ধ ভাতা না পাবার কোন কারন নেই।আমাকে কেও এই খবরটা জানায়নি।দুই তিন মাস আগেও একজন ৮৪বছরের বৃদ্ধার ভাতা করে দিয়েছি।এই সব দুস্থ্য মানুষদের জন্যইতো সরকার এই ব্যবস্থা করেছে।তিনি বলেন যত দ্রুত সম্ভব আমি দেখছি কেন মুস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এই হত দরিদ্র ৮০ বছরের বৃদ্ধের বার্ধক্য ভাতা করে দেননি আজও।