December 21, 2024

কালিয়াগঞ্জ শহরে কৃষকের নাম ভাঙিয়ে নদী মাফিয়ারা শ্রীমতী নদীকে দখল করে বরো চাষের জমিতে পরিণত করেছে,প্রশাসন নীরব 

1 min read

কালিয়াগঞ্জ শহরে কৃষকের নাম ভাঙিয়ে নদী মাফিয়ারা শ্রীমতী নদীকে দখল করে বরো চাষের জমিতে পরিণত করেছে,প্রশাসন নীরব

তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ৩০ শে এপ্রিল:ভোট আসে আবার ভোট চলেও যায়। কিন্তু কালিয়াগঞ্জ শহর ও গ্রামের এক শ্রেনীর মানুষের অত্যাচারে নিষ্পেষিত কালিয়া গঞ্জের শ্রীমতী নদীর অবস্থা অনেকটাই হাসপাতালের আই সি ইউ তে রাখার মতই অবস্থা।বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ভোটের প্রচারে এলেও কেও একবারের জন্য শ্রীমতী নদীর খবর নিতে চায়না।সবারই জানা নদী সাধারণত কেন্দ্রীয় সরকারের সম্পত্তি।স্বাধীনতার আগে থেকে যে শ্রীমতী নদী একসময় খরস্রোতা থাকার ফলে এই দুই দিনাজপুরের মধ্যে এলাকার ব্যাবসায়ীদের স্বার্থে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল তা যেন আজ সবই ইতিহাস।

নেই সেই রাম নেই সেই অযোধ্যা কিন্তূ শ্রীমতী নদী যে একসময় কল্লোলিনী শ্রীমতী ছিল তার প্রমাণ আজও শ্রীমতী নদীর দুই পাড় ধরে যাবার সময় অনেক প্রত্ন তাত্বিক গবেষকেরা তাদের বিভিন্ন প্রকাশিত পুস্তকে শ্রীমতী নদীর অনেক অজানা তথ্য জানা যায়। উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের প্রত্নতাত্বিক তথা গবেষক ড:বৃন্দাবন ঘোষ বলেন শ্রীমতী নদীর দুই পার দিয়ে যাবার পথে এখনো অজস্র মন্দির দেখা যায় যা বর্তমানে দেখে বোঝা যায় এই নদী তীরবর্তি জনপদে ছিল অনেক দেবদেবীর মন্দির ও মন্দিরের থান।বর্তমানের আই সি ইউ তে থাকা উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শ্রীমতী নদীকে এই এলাকার ভেগধারী বেশ কিছু মানুষ উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে বেশ কিছু ধরেই শ্রীমতী নদীর জলের গতি নানা ভাবে বন্ধ করে তাদের আয়ত্বের মধ্যে এনে সেই শ্রীমতী নদীকে বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত করে সেটাকে সরকারি সম্পত্তি থেকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছে রায়তি সম্পত্তির মাধ্যমে প্রশাসনের সম্পূর্ন সহযোগিতায়। শ্রীমতী নদীকে একসময় বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন কালীয়াগঞ্জে ভূমিপুত্র তথা প্রয়াত কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রী প্রিয় রঞ্জন দাসমুন্সী।তিনি জলসম্পদ মন্ত্রী থাকা কালীন ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে নদী বিশেষজ্ঞদের কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতী নদীতে এনে শ্রীমতী নদীকে কল্লোলিনী করবার প্রয়োজনে নদীর মাঝ থেকে মাটি তুলে নদীর দুধারের পার বাধানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলেও সেখান থেকে কালিয়াগঞ্জ শহরের কিছু ভেগধারী কৃষক প্রয়াত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয় রঞ্জন দাস মুন্সীর উপর একটি মামলা করে ভেগধারি কৃষকরা জিতেও যায়।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়া গঞ্জের শ্রীমতী নদীকে তার পূর্বের চেহারায় ফিরিয়ে এনে নদীকে তার গতি এনে দেবার চেষ্টা আজও করে যাচ্ছে কালিয়াগঞ্জ নদী বাঁচাও ও উন্নয়ন কমিটি।সংস্থার সম্পাদক প্রসূন দাস বলেন আমরা অনেক চেষ্টা করে উত্তর দিনাজপুর জেলার জেলা শাসক অরবিন্দ কুমারের কাছে গিয়ে শ্রীমতী নদীর নাব্যতা বাড়িয়ে তার পূর্ব পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করে বলেছিলাম শ্রীমতী নদীকে ১০০ দিনের কাজের আওতার মধ্যে আনলে একদিকে যেমন নদীর উন্নয়ন করা সম্ভব হতে পারে।অন্যদিকে প্রচুর জব কার্ড হোল্ডারের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।জেলা শাসক আমাদের কথার সাথে একমত হয়ে একটি অর্ডার করে ছিলেন কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বিডিওকে।বিডিও নির্দেশ পেয়েই কালিয়াগঞ্জ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরে গিয়ে দেখেন কালিয়াগঞ্জে নাকি শ্রীমতী নদী বলে কোন অস্তিত্ব নেই।নদী বলতে যা নদীর আকার নিয়ে পরে আছে সেটা হল নদীর পরিবর্তে রায়তি সম্পত্তির জমি।পরবর্তীতে জেলাশাসকের কাছে এই বিষয় নিয়ে দরবার করলেও জেলা শাসক অরবিন্দ কুমারের কোন রকম হেলদোল ছিলনা সরকারে সম্পত্তি বাঁচানোর ব্যাপারে কোন উদ্যোগ।যা অবাক হবার মতই ঘটনা।আর তখনি বোঝা গেছে ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।বর্তমানে শ্রীমতী নদীর মধ্যে নিজেদের ইচ্ছামত কেও কেও পুকুর কেটে মাছ চাষের ব্যাবস্থা করে নিচ্ছে বলে জানা যায়।কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার বর্তমান পৌর পিতা রাম নিবাস সাহার কাছে কালিয়াগঞ্জ নদী বাঁচাও কমিটির পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল আপনি বসে না থেকে শ্রীমতী নদীর সংস্কারের ব্যাপারে কিছু একটা করুন দাবি করা হয়েছিল।তিনি যতটুকু পেরেছেন তার সীমা বদ্ধতার মধ্য দিয়ে সেটা করেছেন।পৌর পিতা রাম নিবাস সাহা শান্তি কলোনীর শ্মশান ঘাটের পার্শ্ববর্তী এলাকায় শ্রীমতী নদী যে ভাবে দুশনে ভরে ছিল সেই নদীর এলাকা গুলো ড্রেজার দিয়ে পরিষ্কার করে একটা সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে কালিয়াগঞ্জ শহরের মানুষদের যে উপহার দিতে পেরেছে সেটা এক কথায় অভিনন্দন পাবার যোগ্য। পৌর পিতা রাম নিবাস সাহা বলেন কালিয়াগঞ্জ শহর তথা ব্লকের মানুষদের স্বার্থে শ্রীমতী নদীকে তার চলার পথে বাধাকারীদের সরিয়ে আমাদের শ্রীমতী নদীকে পুনরায় কল্লোলিনী করার জন্য শপথ নিয়ে সবাইকে এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে বলে জানান।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *