December 7, 2024

উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC শ্রমিক সংগঠন কে দুর্নীতি, আর্থিক জালিয়াতি, অশ্লীল দুশ্চরিত্রের ডাস্টবিনে পরিণত করলেন শেখর দাস , চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।

1 min read

উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC শ্রমিক সংগঠন কে দুর্নীতি, আর্থিক জালিয়াতি, অশ্লীল দুশ্চরিত্রের ডাস্টবিনে পরিণত করলেন শেখর দাস , চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।

তন্ময় চক্রবর্তী একদিকে কলকাতা হাইকোর্ট, সিবিআই সাথে বেইমান মিরজাফর আখ্যা দিয়ে তাদের আবার ঘরে ফিরিয়ে নেওয়ার সংবাদ আর সংবাদের মাঝে উঁকি মারছে আজকে সংবাদ প্রতিবেদনের শিরোনাম। তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন রাজ্য INTTUC সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য জুড়ে পোস্টারে ছয়লাপ হয়েছে শ্রমিক বন্ধুদের জন্য যেখানে লেখা হয়েছে যেকোনো অভিযোগ থাকলে নির্দিষ্ট মোবাইল নং এ অভিযোগ জানিয়ে নথিভুক্ত করতে পারেন।

কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠন রাজ্য INTTUC সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায় যদি শ্রমিক দের উদ্দ্যেশ্যে লিখে দিতেন শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে নির্দিষ্ট মোবাইল নং আপনাদের অভিযোগ নথিভুক্ত করুন তাহলে হয়তো উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC সভাপতি শেখর দাস শ্রমিক সংগঠন INTTUC প্লাটফর্ম কে ডাস্টবিন- এ পরিণত করার সাহস রাখতেন কিনা সন্দেহ, শেখর দাসের বিরুদ্ধে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।

ডাস্টবিন থেকে ইতিমধ্যেই যেভাবে গন্ধ বের হতে শুরু করেছে তাতে করে নাকে রুমাল দিয়ে তৃণমূলীরাই পাশ কাটানোর চেষ্টা করছেন। এমন দৃশ্য দেখা গেল আজকে রায়গঞ্জ বিধান মঞ্চে আয়োজিত উত্তর দিনাজপুর প্রোগ্রেসিভ টোটো অটো ড্রাইভারস্ ইউনিয়ন এবং উত্তর দিনাজপুর সিকিউরিটি গার্ড ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এর যৌথ ১ম জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠানে।

 

উক্ত সম্মেলনের আমন্ত্রিত পত্রে সবাইকে জানানো হয় সম্মেলনের উদ্বোধক উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার ৯ জন বিধায়ক উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু ইনারা ডাস্টবিন এর গন্ধ পেয়েছেন বলেই কি অনুপস্থিত? তবে যারা ছিলেন উপস্থিত তারাও হয়তো ডাস্টবিনের গন্ধ সহ্য করেই বসেছিলেন হয়তো। আসল ঘটনায় আসা যাক। গত বছর ২০২১ এর আগষ্ট মাসে উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC সভাপতি হিসেবে শেখর দাস কে উক্ত পদে বসান রাজ্য INTTUC সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায়।

 

জেলা INTTUC সভাপতি হয়ে তিনি কালিয়াগঞ্জ শহর INTTUC প্রাক্তন সভাপতি প্রয়াত সঞ্জিত সরকারের বাড়িতে আসেন সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করতে। অভিযোগের সুত্রে সেইসময় প্রয়াত সঞ্জিত সরকারের একমাত্র পুত্র কলেজ ছাত্র রাজনীতি থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করে আসা শুভজিৎ সরকার কে জেলার INTTUC সংগঠনে একটি ইউনিটের জেলার দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন। শুভজিৎ সরকার সেই প্রস্তাবে সম্মতি হলে সাংগঠনিক ভাবে জেলা পর্যায়ে সংগঠনের পদাধিকারীর জন্য ১৫ লক্ষ্য টাকা লাগবে বলে শেখর দাস বলেন।

শুভজিৎ সরকারের অভিযোগ অনুযায়ী ১৫ লক্ষ্য টাকা নগদ অর্থ উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC সভাপতি শেখর দাস নিয়ে নেওয়ার পরে গত ২৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখে শুভজিৎ সরকার কে উত্তর দিনাজপুর প্রোগ্রেসিভ ট্রাক ড্রাইভারস্ ইউনিয়ন এর উত্তর দিনাজপুর জেলার সহসভাপতি পদে নিয়োগ পত্র দেন শেখর দাস স্বাক্ষর প্রদান করে কিন্তু কোনো সিলমোহর ছিল না। সিলমোহর না থাকায় শুভজিৎ সরকার এই বিষয়ে প্রশ্ন তুললে শেখর দাস দুইদিন পরে পুনরায় ঐ একি তারিখ উল্লেখ করে সিলমোহর সহ স্বাক্ষর প্রদান করে শুভজিৎ সরকার কে উত্তর দিনাজপুর প্রোগ্রেসিভ ট্রাক ড্রাইভারস্ ইউনিয়ন এর এবার জেলা সভাপতির নিয়োগ পত্র দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ডকুমেন্টস্ দেখে আরো একটি বিষ্ময়কর ঘটনা উদঘাটন হয়েছে সেটা হলো ২০২১ সালের আগষ্ট মাসে শেখর দাস উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC সভাপতি মনোনীত হয়ে তিনি ২০২১ এর অক্টোবর মাসের ২৬ তারিখে উত্তর দিনাজপুর প্রোগ্রেসিভ ট্রাক ড্রাইভারস্ ইউনিয়ন এর লেটার প্যাড এ শুভজিৎ সরকার কে নিয়োগপত্র দিচ্ছেন নিজেকে উক্ত ইউনিটের জেনারেল সেক্রেটারি পরিচয় দিয়ে। দুর্নীতির পরিচয় রাখলেন নিজে নিজেই নিয়োগপত্র তুলে দিয়ে। এমন অভিযোগের তীর অর্থাৎ সাংগঠনিক নিয়োগপত্র নিয়ে একাধিক জনের সাথে প্রতারনা সহ দুর্নীতির ছাপ রেখেছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC সভাপতি শেখর দাস এমনি অভিযোগ।

শুধুমাত্র জালিয়াতি নিয়োগপত্র নয়, অভিযোগ নগদে ১৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন অভিযোগ কারী শুভজিৎ সরকারের কাছ থেকে INTTUC ইউনিয়ন এর নাম করে সংগঠনের পদাধিকারী হতে গেলে টাকা লাগবে এই বলে। অভিযোগকারীর অভিযোগ অনুযায়ী সাংগঠনিক দুর্নীতি, আর্থিক দুর্নীতি শুধু নয় উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC সভাপতি শেখর দাস একজন অসভ্য অশ্লীল চরিত্রের মানুষ সেটাও নাকি প্রমানের ছাপ রেখেছেন নিজেই। অভিযোগ কারী শুভজিৎ সরকারের মায়ের নামে ফেসবুক একাউন্টে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান শেখর দাস। আদতে শুভজিৎ সরকারের মায়ের নামে থাকা ফেসবুক একাউন্ট টি অপারেট করেন শুভজিৎ সরকারের বোন। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গৃহীত হয়ে যাওয়ার কিছুদিন পরেই অভিযোগ কারী শুভজিৎ সরকারের মায়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে শেখর দাস অশ্লীল অসভ্য ম্যাসেজ, অশ্লীল ছবি পাঠাতে শুরু করেন। অভিযোগ কারী শুভজিৎ সরকারের বোন অতি লজ্জায় মোবাইল সেট টি শুভজিৎ সরকারের কাছে হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে শেখর দাসের নোংরা অশ্লীল নারীদের প্রতি লালসার প্রচুর ম্যাসেজ অভিযোগ কারী সংগৃহীত করতে থাকে যা জনসমক্ষে তুলে ধরা ভীষণ লজ্জার।

 

এরপরেই অভিযোগ কারী সকল বিষয় সমুহ তথ্য প্রমাণাদি সহ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব দের কাছে জানালে এক বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরী করেন বলে অভিযোগ করেন অভিযোগ কারী শুভজিৎ সরকার। শুরু হয় ওভার টেলিফোনে শুভজিৎ সরকার কে প্রানে মেরে ফেলার হুমকী এবং অপরিচিত লোকদের অভিযোগকারীর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে অভিযোগকারী ও তাঁর বাড়ির সকলকে প্রানে মেরে ফেলার হুমকি। এই বিষয়ে অভিযোগ কারী কালিয়াগঞ্জ থানায় শেখর দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে গেলে সেই অভিযোগ নিতে কিভাবে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ প্রশাসন নিতে অস্বীকার করলেন সেই বিষয়েও অভিযোগ আনলেন অভিযোগকারী শুভজিৎ সরকার।

 

তবে অভিযোগ কারী শুভজিৎ সরকার রাজ্য INTTUC সভাপতি ঋতব্রত বন্দোপাধ্যায় সহ আরো তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব দের কাছে অভিযোগ জানালে উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC সভাপতি শেখর দাসের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে তদন্ত হবে, হচ্ছে এবং সত্য উদঘাটন তদন্তের সাপেক্ষে উঠে আসবে কিন্তু ইতিমধ্যেই যেভাবে INTTUC রাজ্য সংগঠন সহ উত্তর দিনাজপুর জেলা INTTUC সংগঠন কে শেখর দাস তাঁর সাংগঠনিক দুর্নীতি, আর্থিক দুর্নীতি এবং অশ্লীল দুশ্চরিত্রের নোংরা আবর্জনার ডাস্টবিনে পরিনত করেছে অভিযোগের সুত্র ধরেই এই সংবাদ।যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই শেখর অবশ্য এ নিয়ে বলছেন, ‘‘যা বলার দলের জেলা সভাপতি বলবেন। উনিই এখানে দলের সর্বেসর্বা।’’ এ নিয়ে তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলার সভাপতি কানহাইলাল অগ্রবালের বক্তব্য, ‘‘আমি অভিযোগ পেয়েছি। আমি তিন জনকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তার রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেব।’’বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলার সহ-সভাপতি নিমাই কবিরাজের মন্তব্য, ‘‘এক জন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কী ভাবে মহিলার সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেললেন, তা শুনে বিস্মিত হচ্ছি। আবার সব অভিযোগ পাওয়ার পরেও তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিষয়টির সুরাহা না করে তদন্ত কমিটি গড়ে যা করছেন, তা প্রহসন ছাড়া কিছু নয়।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *