বালাস গ্রামের ধোকরা শিল্প আজ বিলীন হবার পথে,সরকারের নেই কোন হেলদোল।
1 min readবালাস গ্রামের ধোকরা শিল্প আজ বিলীন হবার পথে,সরকারের নেই কোন হেলদোল।
তপন চক্রবর্তীকালিয়াগঞ্জ,২৯এপ্রিল:উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের ধনকোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বালাস গ্রাম একটি তফসিলি সম্প্রদায় ভুক্ত এলাকা। এই বালাস গ্রামটি দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প হিসাবে ধোকরা শিল্প ইতিমধ্যেই সুনাম অর্জন করতে সমর্থ হয়ছে। গ্রামের গৃহবধূ তথা বাড়ীর মেয়ে পড়ুয়ারা মা দিদিমার সাথে বাড়িতে বসেই ধোকরা বানিয়ে থাকে।বালাস গ্রামের এই ধোকরা শিল্প যেন একটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পরূপে কয়েক দশক ধরে চলে আসছে।বাড়ির গৃহবধূরা বাড়ির সমস্ত কাজ সেরে এই ধোকড়া বানিয়ে থাকে। পূর্বে জমির পাট দিয়ে এই ধোকরা বানানো হত। দিনবদলের সাথে সাথে এই ধোকড়া বর্তমানে সুতলি দিয়ে বানানো হয়ে থাকে।
একটি সাড়ে ছয় হাত ধোকরা বানাতে তিন কিলো সুতলি এবং ৭০টাকার রং লেগে থাকে।একটি ধোকরা বানাতে মোট খরচ হয় ২৭০ টাকা ।কিন্তু বাজারে সেটি বিক্রি হয় ৫০০থেকে ৫৫০ টাকা।উত্তর দিনাজপুর জেলার বিখ্যাত সোমবারের ধনকোল হাটে গ্রামের মহিলারা গিয়ে ধোকরা বিক্রি করে থাকে। বালাস গ্রামের গৃহবধূ রীতি সরকার ক্ষোভের সাথে জানায় সরকার আমাদের সুযোগ সুবিধা দেবার জন্য ২০১২সালে অনেক কাগজ পত্র নিলেও কোন রকম সুযোগ সুবিধা আজ পর্যন্ত আমরা কেও পাইনি।গ্রামের যুবক তারিণী দেবশর্মা বলেন এই ধোকরা শিল্পকে নিয়ে বালাস গ্রামে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা যেতে পারে।এটা আমাদের দীর্ঘ দিনের দাবি।কিন্তু রাজ্য সরকার কুটির শিল্পের উন্নয়নের কথা বার বার বললেও কাজ কর্মে তার কোন নিদর্শন আজ পর্যন্ত দেখতে পেলাম না।কিন্তু রাজ্য সরকার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে হাল ছেড়ে দিয়ে বসে আছে।
বালাস গ্রামের বাসিন্দা তথা উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সদস্য কমল সরকার বালাসের ধোকরা শিল্পের নাম কয়েক যুগ থেকে। অথচ গ্রাম্য এই কুটির শিল্পকে রাজ্য সরকার কোনরকম আজ পর্যন্ত গুরুত্ব দেয়নি। ফলে এত সুন্দর একটি শিল্প ধীরে ধীরে অবক্ষয়ের পথে চলে যাচ্ছে।
রাজ্য সরকার যদি এই শিল্পের দিকে একটু নজর দিতে পারতো তাহলে এই শিল্পের মাধ্যমে অনেক বেকার যুবক যুবতীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারত বলে তিনি মনে করেন।উত্তর দিনাজপুর জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার সুনীল সরকারকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বালাস গ্রামের অধিকাংশ রাজবংশী সম্প্রদায়ভুক্ত বাড়ীর গৃহ বধূরা সংসারের কাজ সামলিয়ে
ধোকরা বানিয়ে থাকে।আমরা জেলা শিল্প দপ্তরের মাধ্যমে এই শিল্পকে নিয়ে কিছু করা যায় কিনা সে ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছি বলে সুনীল সরকার জানান।তিনি বলেন সরকারি জমি পেলে বালাস গ্রামে একটি ধোকরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা যেতে পারে।আমরা সেই চেষ্টাই করছি বলে জানান।