কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার পৌর পিতার বাড়ির ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুকুর ভরাটের কাজ চলায় ক্ষুব্ধ ওয়ার্ডবাসি
1 min readকালিয়াগঞ্জ পৌর সভার পৌর পিতার বাড়ির ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুকুর ভরাটের কাজ চলায় ক্ষুব্ধ ওয়ার্ডবাসি
তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,১৪এপ্রিল:সরকারি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা পৌরপিতার নাকের ডগায় আস্ত একটি পুকুর ভরাটের কাজ চলছে। অথচ কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার নেই কোন রকম হেল দোল। জানা যায় কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের শহরের প্রাণ কেন্দ্র তারক দাস রোডে একটি পুকুর দীর্ঘ দিন থেকেই আছে।বেশ কিছুদিন পূর্বে একবার এই পুকুর ভরাট করবার প্রচেষ্টা নিলেও সাধারন মানুষের প্রতিবাদের কারনে তখনকার মত বন্ধ করে রাখা হয়।সম্প্রতি কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার নির্বাচন হয়ে যাবার পর আবার সেই পুকুর ভরাটের কাজ দ্রুত গতিতে শুরু হয়ে যায়।সব চেয়ে আশ্চর্য্যের ঘটনা কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার সদ্য নির্বাচিত পৌর পিতার বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই পুকুর ভরাটের কাজ চললেও পৌর পিতার কোন রকম হেলদোল নেই বলে ওয়ার্ডবাসীদের ক্ষোভ থেকে জানা যায়।১৫নম্বর ওয়ার্ড থেকে জয়ী কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার পৌর পিতা রাম নিবাস সাহা জয়ী হবার পরেই এই পুকুর ভরাটের কাজ শুরু হয়।এলাকাবাসীদেরবক্তব্য তাহলে কি নতুন পৌর পিতার প্রচ্ছন্ন মদতেই এই কাজ চলছে? এ ব্যাপারে কালিয়াগঞ্জ পৌর সভায় গিয়ে জানা যায় পৌর পিতা রাম নিবাস সাহা শারীরিক অসুস্থতার কারনে বর্তমানে কলকাতায়।কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার উপ পৌরপিতা ঈশ্বর রজককে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।
পৌরসভায় ওয়ার্ডের বাসিন্দা দের পক্ষ থেকে পৌরসভায় কোন লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। তবে সাংবাদিকদের কাছ থেকেই এই ঘটনা জানতে পারলাম।পৌর পিতা রাম নিবাস সাহা কলকাতা থেকে এলেই পৌর সভা সরকারি আইন মেনেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন। ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন প্রকাশ্য দিবালোকে পৌর পিতার বাড়ির পেছনে এবং ব্লক তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনেই একটি পুকুর কয়েকদিন ধরে ভরাট হচ্ছে অথচ পৌরপিতা বা ব্লক তৃণমূল নেতা জানবেন না এটা কি করে বিশ্বাস করা যায়?তাদের বক্তব্য পুকুরের অর্ধেকটা মাটি দিয়ে ইতিমধ্যেই ভরাট করা হয়ে গেছে এবং ভরাটের কাজ চললেও কারো কোন হেলদোল নেই কি কারনে সাধারন মানুষকে বলতে শোনা যায়।
তাহলে কি ডাল মে কুছ কালা হ্যাঁয়? শুধু তাই নয় যেখানে পুকুর ভরাট হচ্ছে একদম তার পাশেই কালিয়াগঞ্জ ব্লক তৃণমূল সভাপতি নিতাই বৈশ্যর বাড়ি।বৃহস্পতিবার সকালে নিতাই বৈশ্যকে পুকুর ভরাট নিয়ে প্রশ্ন করতেই নিতাই বাবু বলেন আমার কাছে কেন এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করছেন? আমার দায়িত্ব তো গ্রামে। শহরের ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। নিতাই বাবুকে এই প্রতিবেদক বলেন তৃণমূলের একজন নেতার বাড়ির সামনে একটি আস্ত পুকুর প্রকাশ্যে ভরাট হতে দেখেও আপনি কিছু বলবেন না?নিতাইবাবু তার উত্তরে বলেন তিনি গ্রামের দায়িত্বে তাই শহরের কোন ব্যাপারে তিনি নাক গলাবেন না। শহরের দেখভাল করার জন্য শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আছেন।
সেখানে আমি কেন পুকুর ভরাট হচ্ছে কি হচ্ছে না তা দেখতে যাব?তিনি আরো বলেন কোথায় কোথায় পুকুর ভরাট হচ্ছে আমি আমি কি সেটা দেখার লীজ নিয়েছি?এ ব্যাপারে কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজিত সরকারকে তার দলের ব্লক সভাপতি নিতাই বৈশ্যর বক্তব্য সম্পর্কে জানালে তিনি বলেন তিনি এই কথা কোনভাবেই বলতে পারেনা।সুজিত বাবু বলেন আগে তিনি একজন শহরের নাগরিক। তার পরে তিনি নেতা।তার উচিৎ ছিল একজন নাগরিক অথবা তৃণমূলের একজন নেতা হিসাবে এই অবৈধ কাজ বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া।তিনি খুব ভালো করেই জানেন পুকুর ভরাটের মত একটি কাজ সম্পূর্ন অবৈধ।
তিনি না একজন নাগরিক হিসাবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন,না করেছেন তৃণমূলের একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসাবে তার দায়িত্ব পালন করেছেন।।যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।তার বাড়ির সামনেই একটা পুকুর ভরাট করছে আর তিনি চুপ করে থাকবেন? এই কথা তিনি কোন ভেবেই বলতে পারেন না।কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুজিত সরকার বলেন তার কানেও এই সংবাদ পৌঁছেছে। কালিয়াগঞ্জ ব্লকের বি এল আর ও এই মুহূর্তে ছুটিতে আছেন।তিনি আগামী পরশু দিন এলেই অবৈধ উপায়ে পুকুর ভরাট কি করে হয় তা দেখব। যা যা আইনগত ব্যবস্থা নিতে হয় তার সব কিছু নিয়েই পুকুর ভরাটের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানান।এদিকে বিজেপি দলের কালিয়াগঞ্জ শহর মন্ডল সভাপতি গৌরাঙ্গ দাস বলেন আমরা জানি কার অঙ্গুলিহেলনে এই পুকুর ভরাট প্রকাশ্য দিবালোকে হচ্ছে।আগামী পরশু থেকে পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন শুরু করছি বলে গৌরাঙ্গ দাস জানান।