কন্যাশ্রী প্রকল্পের লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠলো প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

মালদা: কন্যাশ্রী প্রকল্পের লাগামহীন দুর্নীতির অভিযোগ উঠলো প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এছাড়াও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আরও অন্যান্য অভিযোগকে কেন্দ্র করে চাপানউতোর শুরু হয়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে।উল্লেখ্য, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের তালবাংরুয়া হাই-মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ খাইরুল আলম, তার বিরুদ্ধে কন্যাশ্রীর টাকা,লক ডাউনে চাল,ডাল বিতরণ থেকে শুরু করে একাধিক বেনিয়মের অভিযোগে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবকদের একাংশ। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তালবাংরুয়া হাই-মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক।

উপরন্তু তার গরহাজিরে তৃণমূলের মদতে কন্যাশ্রী প্রকল্পে দুর্নীতি করার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। সেই কাজে বাধা দেওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নানান মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল মদতপুষ্ট কিছু মানুষ বলে অভিযোগ তার। প্রধান শিক্ষক তার জবানবন্দিতে জানিয়েছেন ২০১৮ সালে স্কুলের ছাত্রী নয়, এমন ২০০ জনের নাম কন্যাশ্রী প্রকল্পে নথিভুক্ত করা হয়েছিল। তিনি খতিয়ে দেখে তা বাতিল করেন। তারপর থেকেই তাদের রোষে পড়েছেন তিনি। এরা সব তৃণমূলের লোক। স্কুলের করণীকের সাথে হাত মিলিয়ে এটা করেছিলেন। এবং তিনি আরো জানান এর নথী এখনও রয়েছে তার কাছে। প্রধান শিক্ষকের এমন মন্তব্যের পর স্বাভাবিক ভাবেই হরিশ্চন্দ্রপুরে কন্যাশ্রী প্রকল্পের নাম নথিভুক্ত করার জাল চক্র সক্রিয়, এমন অভিযোগ ও তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। এই ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।অভিভাবক মহম্মদ তজিবুর রহমান তার বক্তব্যে জানান, “প্রধান শিক্ষক প্রতিটা কাজে দুর্নীতি করছেন। নিজের প্রভাব খাটিয়ে তিনি স্কুলের বাইরের মেয়েদের নাম নথিভুক্ত করেছেন। তিনি নিজের জন্য ১৫ হাজার রেখে ১০ হাজার সেইসব মেয়েদের দিচ্ছেন। সাইকেল নিয়েও ঘোটালা করেছেন তিনি।”তালবাংরুয়া হাই-মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মহম্মদ খাইরুল আলম বলেছেন, “সাইকেলে কোনো দুর্নীতি হয়নি। জালিয়াতি করে স্কুলের ছাত্রী নয় এমন ২০০ জনকে কন্যাশ্রী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। আমি বিডিওকে বলে তা বাতিল করার পর থেকে আমাকে বিব্রত করা শুরু করেছে। এরা তৃণমূলের নামধারী, লুটেপুটে খেতে চায়। প্রতিষ্ঠানের ভালো চায়না।”হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লক বিডিও পার্থ দাস জানান, “ওনারা যে আরটিআই করেছিলেন, আমার অফিস থেকে তার উত্তর দেওয়া হয়েছে। বিষয়টিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”তৃণমূল নেতা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা জেলা চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরী জানান, “তৃণমূলের কেউ এতে যুক্ত থাকলে বিডিও বা নোডাঋ অফিসার কোনো এফআইআর করেননি কেন? ভোটের আগে এসব মিথ্যা অভিযোগ তুলছে বিরোধীরা। যদি প্রমাণ হয় আমাদের দলের কেউ যুক্ত আছে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হবে।”বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল এই প্রসঙ্গে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন “কাটমানি নেওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজ একটা স্কুলে ধরা পড়েছে, তদন্ত করে দেখা যাবে প্রতিটা স্কুলেই এই দুর্নীতি করছে। সবাই জড়িয়ে আছে এতে।”কাটমানি বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছেনা শাসকদলের। এবার কন্যাশ্রী প্রকল্পে দুর্নীতি নিয়ে কাঠগড়ায় তৃণমূল কংগ্রেস। কটাক্ষ করতে ছাড়ছেনা বিরোধীরা। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকদের একাংশ প্রধান শিক্ষকের নামে প্রশাসনের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *