সামাজিক প্রথা ভেঙে অবশেষে মহিলা অব্রাহ্মণ পুরোহিত দ্বারা নিজেদের বিবাহ অনুষ্ঠান করে তাক লাগিয়ে দিলেন রায়গঞ্জের দম্পতি।
পিয়া গুপ্তা চক্রবর্তী, রায়গঞ্জ প্রথাগতভাবে পৌরহিত্যের কাজে এত দিন পুরুষদেরই নিযুক্ত থাকতে দেখা গেছে বিয়ে থেকে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সব সামাজিক অনুষ্ঠানে ছিল পুরুষ পুরোহিতদের প্রাধান্য।আমাদের সামাজিকগত পরিকাঠামো সুচতুর ভাবে এমনই যেখানে অলিখিত ভাবে এটাই মনে করা হয়, পুরুষ মেধাবী, পুরুষ বোহেমিয়ান, পুরুষ সোনার আংটি’। অন্যদিকে মেয়েদেরকে সব কিছু থেকে বঞ্চিত করা হয়ে এসেছে। তবে এবারে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতায় বদল আনতেসমাজে নারীরা যে কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই, নারীরাও পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে সব কাজ করতে পারে এইবার্তা দিলেন নিজের বিবাহ অনুষ্ঠানে রায়গঞ্জের এক দম্পতি।
সমাজের ধারণা, পুরোহিত মানেই পুরুষ। এই ধারণাই এতদিন চলে এসেছে তবে এই ধারণা থেকে বেড়িয়ে এসেনিজেদের বিবাহ অনুষ্ঠানে এক অভিনব সামাজিক বার্তা তুলে ধরলেন রায়গঞ্জ এর বীর নগরের বাসিন্দা ঋতুপর্ণা রায়। পেশায়পেশায় রায়গঞ্জ স্টেশন এ রেলের কর্মরত।আর পাত্র ছিলেন বাঁকুড়ার বাসিন্দা অতনু সিংহ মহাপাত্র পেশায় পশু চিকিৎসক।দীর্ঘদিন ধরে পাত্রীর ইচ্ছে ছিল এই পুরুষতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় মহিলারা আজ যে পিছিয়ে নেই তা নিজের বিয়ের মাধ্যমে প্রমাণ করবেন তার তাগিদেই তিনি যখন বিয়ে করবেন তখন তিনি মহিলা পুরোহিত দিয়ে তার বিয়ের সমস্ত নিয়ম আচার মেনে তার বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবেন অবশেষে ঋতুপর্ণার ইচ্ছা পূরণ হলো সম্প্রতি রায়গঞ্জে । সোমবার রাতে ঋতুপর্ণা ও অতনুর বিয়ে দিলেন গঙ্গারামপুরের নিবাসী মহিলা পুরোহিত মন্ডল সুলতা মন্ডল।
বিয়ের সমস্তনিয়মাচার মেনে তার বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করলেন। এই বিয়ের অনুষ্ঠান যখন অনুষ্ঠিত হয় তখন যারা সেই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন তাদের উৎসাহ ছিল চরমে পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় ঋতুপর্ণা ও অতনু যেভাবে তাদের সু চিন্তাভাবনার মাধ্যমে প্রকৃত শিক্ষায় এই সমাজের গোঁড়ামিকে ভেঙ্গে দিলেন তাকে সাধুবাদ জানিয়েছে অনেকে পাশাপাশি তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এই কামনা করেন অনেকে।
উল্লেখ্য রায়গঞ্জ শহরের মোহরকুঞ্জে এক কন্যার বিবাহ কার্য করলেন মহিলা পুরোহিত সুলতা মন্ডল। অব্রাহ্মণ সুলতা মন্ডল জাতি ধর্মের তুয়াককা না করেসোশ্যাল ট্যাবু ভেঙে বিবাহের কাজে এগিয়ে এলেন।উত্তর দিনাজপুর তথা উত্তরবঙ্গে সর্বপ্রথম মহিলা পুরোহিত দিয়ে কনের বিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা ছিল রায়গঞ্জ শহরের মোহরকুঞ্জ বিবাহ অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে। রায়গঞ্জের বাসিন্দা শিপ্রা রায়ের কন্যা ঋতুপর্ণা রায়ের বিয়ের পুরোহিতের সমস্ত কাজই করলেন সুলতা মন্ডল । বিবাহ অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত থেকে অতিথি অভ্যাগত এবং পরিবারের মহিলারা গর্বিত একজন মহিলার এই পুরোহিত পেশায় যুক্ত হওয়ায়। সমাজের কোনও কাজেই যে মহিলারা আজ আর পিছিয়ে নেই এটা অনুভব করতে পেরেই গর্বিত তাঁরা।