টাটার কারখানা পশ্চিমবঙ্গে না হতে দিলেও গত দশ বছরে ভুয়া আধিকারিকদের কারখানা কুটির শিল্পের আকার নিয়েছে এই বঙ্গে
1 min readটাটার কারখানা পশ্চিমবঙ্গে না হতে দিলেও গত দশ বছরে ভুয়া আধি কারিকদের কারখানা কুটির শিল্পের আকার নিয়েছে এই বঙ্গে
তপন চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ,১৯জুলাই:সাংবাদিকদের দীর্ঘদিন ধরেই নানান রকম ভেজাল কারবারিদের খুঁজে বের করার প্রবণতা আমরা দেখতে পেয়েছি।যেমন সর্ষের তেলে রমরমিয়ে ভেজাল,হলুদের মধ্যে ভেজাল,পোস্তর মধ্যে ভেজাল সহ আরো বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর ভেজাল সচরাচর পাওয়া গেছে।যতই দিন যাচ্ছে ভেজালের ধরন ততই দিন দিন পরিবর্তন হতে চলেছে।প্রতিনিয়ত একই রকমের ভেজালের খবর করতেও খুব একটা ভালো লাগেনা।তাই এবার শুধু ভেজল কারখানা নয় পশ্চিমবঙ্গে মাটিতে কুটির শিল্পের মত সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় গজিয়ে উঠছে ভুয়ো আধিকারিকদের কারখানা। সিঙ্গুরের টাটার কারখানা হতে না দিলেও রাজ্যের প্রতিটি জেলাতে কুটিরশিল্পে মত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ভুয়া আধিকারিকদের কারখানা।যেখানে সরকারের বদান্যতায় নাকি এই ভুয়ো আধিকারিকদের কারখানায় প্রচুর কাজকর্ম করে খাচ্ছে একশ্রেণীর মানুষ।অভিজ্ঞমহলের ধারণা সরকার যখন চাকরি দিতে পারছে না তখন আমাদের পশ্চিমবঙ্গের যুবক যুবতীরা নিজেরাই নিজেদের পছন্দমত মনোবাসনা চরিতার্থ করবার জন্য কেউ আই এ এস অফিসার, কেও সিবিআই অফিসার, কেওবা পুলিশ অফিসার(ডি এস পি) সেযে প্রসাশনের খুব কাছ থেকে দিনে দুপুরে জনগণের কোটি কোটি টাকা প্রতারিত করছে। সেখানে রাজ্য সরকারের আমলাদের এসব দিকে তাকানোর কোন সময় নেই।
রাজ্য প্রসাশনের তাবর তাবর আধিকারিক ও পশ্চিমবঙ্গের সি আই ডি,ডি আই বি নামক সরকারের বড় মাপের আধিকারিকদের বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে দিনের পর দিন ভুয়া অফিসারদের কারবারিরা রাজ্য সরকারের তকমা লাগিয়ে সরকারের সমস্ত কিছু ব্যবহার করে তাদের কার্যসিদ্ধি করে আসছে। অথচ সরকারের উর্ধতন প্রসাশন কিছুই নাকি বুঝতে পারেনি কোনভাবেই। ।এটা কি করে হতে পারে?এই পশ্চিম বঙ্গে এটাই নাকি হতেপারে না হয়। এটা তাহলে নিশ্চয় মগের মুল্লুক।এখানে তাহলে সবই হতে পারে।কারো খোঁজ নেবার জানার কোন প্রয়োজন নেই।এই রাজ্যের যার যখন ইচ্ছা হবে তখন সে আই এ এস হতে পারে,আই পি এস হতে পারে।হতে পারে সিবিআই অফিসার।সব কিছুই হতে পারে।কিছুতেই নেই মানা।অবাধ স্বাধীনতা।যে যার খুশি মত মনের সুপ্ত বাসনা পূরণ করতেই পারে এই বঙ্গে।আশ্চর্যের ঘটনা হটাৎ করে ভুয়ো আধিকারিকদের কুটির শিল্পের কারখানা কি হয়েছে না তা নয়।বিগত দশ বছর ধরে এই শিল্প ধীরে ধীরে মহিরুহে পরিণত হলেও আমাদের রাজ্য সরকার এইসব শিল্পকে ছোট ঘটনা বা ছোট শিল্প বলেই দৃষ্টি দিতে চায়নি।কারন এই শিল্পেও যে প্রচুর শ্রমিক করে কম্মে খাচ্ছে।এটাওতো এক প্রকার কর্মসংস্থান। সংখ্যা কি ভাবে কাদের সহযোগিতায় এই দুঃসাহসিক কাজ একের পর এক করে যাচ্ছে যার বিন্দু বিসর্গ তারা জানতে পারেনি না জেনেও যতদিন চুপ করে থাকা যায় সেই কাজটাই তারা করে গেছে? ভাবলে অবাক হতে হয়।তাহলে কি আমাদের এই রাজ্যে সমান্তরাল প্রসাশন কারো কারো আঙ্গুলিহেলনেই এই ভুয়া আধিকারিকরা দাপটের সাথে নিজের ইচ্ছে মত যা খুশি তাই করে আসছিল?প্রশ্ন এখানেই।কাদের আশীর্বাদ ধন্য এইসব মহাপুরুষ ভেজাল কারবারিরা?এই রাজ্যের তাবর তাবর প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যদি এদের পেছনে না থাকে কি করেইবা এই ভেজাল বা ভুয়া আধিকারিকরা সাহস পায়?ইতিমধ্যেই কয়েকজন দুঃসাহসিক ভুয়ো মহাপুরুষ দের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার করা হছে।বিভিন্ন ভুয়া আধিকারিকরা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় বা চক্ষু লজ্জায় যেমন করেই হোক পুলিশের জালে ধরা পড়েছে বলে জানা যায়।যেমন দেবাঞ্জন দেব ভুয়ো আই এ এস অফিসার কলকাতা পৌর নিগমের ডেপুটি জয়েন্ট সেক্রেটারি,যিনি খোদ কলকাতা পৌর নিগমে বসতেন।কিন্তূ কলকাতা পৌর সভার পৌর প্রসাশক তথা তদানীন্তন পৌর ও নগর উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম কোন ভাবেই নাকি তাকে চিনতে পারেন নি।যা অবাক করার মতই ঘটনা।শুভদ্বীপ মুখোপাধ্যায়,ভুয়ো সিবিআই অফিসার,উত্তর দিনাজপুর জেলার বেঞ্জামিন হেমরম, ভুয়ো এন এইচ আর সির তকমা লাগিয়ে বেমালুম কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।সনাতন রায় চৌধরী,সি বি আই অফিসার,রবি মুর্মু ভুয়ো ডিএসপি,আসিফুল হক,ভিজিল্যান্স অফিসার।রাধারানী বিশ্বাস ভুয়া সি আই ডি অফিসার।বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা পশ্চিমবঙ্গে ভুয়ো অফিসারের সংখ্যা এখানেই থেমে থাকবে বলে মনে হয়না।এটা বলা যায় কয়েকটা স্যাম্পল সামনে এসেছে।অনেকের ধারণা এই ধরনের ভুয়ো আধিকারীকদের কে বা কাহারা সংগঠিত করে নাকি বিগত বিধান সভার ভোটের সময় বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নেবার একটা গন্ধ পাচ্ছে।পুলিশ যদি সক্রিয় হয় তাহলে এই ধরনের অনেক ভুয়ো অধিকারিককেই তাদের জালে আটকাতে অনেকদিন আগেই পারতো।রাজ্যের জেলায় জেলায় এ ছাড়াও আর এক ধরনের শিল্প চালু হয়েছে।নামে বেনামে বিভিন ধরনের জাল নথি তৈরি করে সরকারের বিভিন্ন বৃত্তির কোটি কোটি টাকা উত্তর দিনাজপুর জেলাতেই লোপাট হয়ে যাচ্ছে।কে কার খোঁজ রাখে বলতে পারেন? এই সব কোটি কোটি টাকা যাদের হাত দিয়ে বিভিন্ন কায়দায় বের করে প্ৰকৃত বৃত্তি প্রাপকদের না দিয়ে লোপাট করছে তারাইকি শুধু দোষী?না একদম নয়।এদের পেছনে শাসক দলের প্রভাবশালীদের আশীর্বাদ না থাকলে এই দুঃসাহস কোন ভাবেই আসতে পারেন বলেই অভিজ্ঞ মহলের বিশ্বাস।এমন অর্থ লোপাটের ঘটনা শুধু উত্তর দিনাজপুর জেলাতেই নয় সারা রাজ্যে এদের জাল মসৃণভাবে বিছানো আছে।এই টাকার ভাগের অধিকারী শুধু এরাই নয়।এদের পেছনে যারা কলকাঠি নাড়ানোর মূল কারিগর তাদের কি রাজ্য প্রসাশন একটি কেশাগ্র স্পর্শ করবার ক্ষমতা দেখতে পারবে? উত্তর না।এই ভুয়া শিল্প পশ্চিমবঙ্গে এততাই মহিরুহে পরিণত হয়েছে যার শিকড় এতটাই গভীরে প্রবেশ করেছে সেখান থেকে সেই শিকড় উপরে ফেলা যেমন তেমন কাজ নয় যেমন তেমনি ইচ্ছাও নেই।কারন এর দৌলতেই বেঁচে আছি ভবিষ্যতেওঁ থাকবো।