সরকার পরপর তিনবার গড়লেও গড়া হয়নি কালিয়াগঞ্জের কুনোরহাট পাড়ার টেরাকোটা শিল্পীদের দীর্ঘ দিনের দাবিমত টেরাকোটার ওয়ার্কশপ
1 min readসরকার পরপর তিনবার গড়লেও গড়া হয়নি কালিয়াগঞ্জের কুনোরহাট পাড়ার টেরাকোটা শিল্পীদের দীর্ঘ দিনের দাবিমত টেরাকোটার ওয়ার্কশপ
তপন চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ,৭ মে:রাজ্যে পর পর তিনবার মা -মাটি-মানুষের সরকার গড়া হলেও মাটি নিয়েই যাদের জীবন জীবিকা নির্ভরশীল সেই উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের হাট পাড়ার কুনরের ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটা শিল্পীদের দাবিমত দীর্ঘ ১৫ বছরেও টেরাকোটা শিল্পের উন্নয়নে ও শিল্পীদের কাজের সুবিধার জন্য একটি টেরাকোটার ওয়ার্কসেড নির্মাণ করতে না পারায় চরম ক্ষুব্ধ কুনোর হাটপাড়ার টেরাকোটা শিল্পীরা।কুনরের হাট পাড়ার টেরাকোটা শিল্পীরা বলেন রাজ্য সরকার দাবি করেন
তারা মা-মাটি-মানুষের সরকার।অথচ মাটির সাথে যুক্ত থেকে যারা শুধু জেলা বা রাজ্য অথবা দেশের সুনামই বৃদ্ধি করেনি বিদেশেও যে কুনোর হাট পাড়ার বাহারি টেরাকোটার দেশের সুনাম বৃদ্ধি করেছেতাদের জন্য রাজ্য সরকারের কোন রকম উদ্যোগ না থাকায় হতাশ হয়ে পড়েছে।কালিয়াগঞ্জ ব্লকের কুনোর হাট পাড়ার রাজ্য সরকারের পুরস্কার প্রাপ্ত বর্ষীয়ান টেরাকোটা শিল্পী দুলাল রায় বলেন তারা কুনোরে একটি টেরাকোটা শিল্পের জন্য নিজেরাই পাঁচ কাঠা জমি দিয়েছে।তার পরেও সরকারি আধিকারিকদের কোন রকম উদ্যোগ দেখা যায়নি।
যা অত্যন্ত অবাক হবারই কথা।অথচ রাজ্য সরকার বলে যাচ্ছে তারা নাকি কুটির শিল্পের জন্য প্রচুর কাজ করে যাচ্ছে।।তিনি বলেন রাজ্য রাজ্য সরকার টেরাকোটা শিল্পের মাধ্যমে বেকার সমস্যার সমাধান না করে শিল্পীদের মাঝে মধ্যে পুরস্কার দিয়ে সমস্যার কোন সমাধ্যন হবেনা। সরকারের পুরস্কার দিয়ে আমাদের কি পেট ভরবে?আমাদের কুটির শিল্পীদের পেট ভরানোর জন্য রাজ্য সরকারের
কোন রকম উদ্যোগ বিগত দশ বছরের এই সরকারের আমলে কিছুই দেখতে পেলাম না।অথচ কালিয়াগঞ্জ ব্লকের কুনোর হাট পাড়ার ঘরে ঘরে এই টেরাকোটা শিল্পীরা ক্ষুদ্র পরিসরের মধ্যে সারা জীবন ধরে অত্যন্ত কষ্টের মধ্য দিয়ে কাজ করে চললেও সরকারের নেই কোন রকম হেলদোল।দুলাল রায় বলেন আমরা কুনোর হাট পাড়ার টেরাকোটা শিল্পীরা বিগত কয়েক বছর ধরেই বলে আসছি আমাদের কুনোর হাট পাড়ায় একটি টেরাকোটা ওয়ার্কশপ সরকার করে দিক।কিন্তূ সরকারের তরফ থেকে একবার জমি দেখে মাপযোগ করে গেলেও
তারপর আর কোন দেখা সাক্ষাৎ নেই।রাজ্য সরকার বার বার কুটির শিল্পের উন্নয়নের কথা বললেও কাজের বেলায় কিছুই করেনি।কুনোর হাট পাড়ার বর্ষীয়ান পুরস্কার প্রাপ্ত অপর টেরাকোটা শিল্পী গোপাল রায় বলেন কুনোর হাট পাড়ায় যদি একটি টেরাকোটার ওয়ার্কশপ রাজ্য সরকার আমাদের জন্য করে দিত তাহলে আমরা সেই ওয়ার্কশপে সবাই একসাথে বসে কাজ করতে পারতাম।
সেখানে যুবক যুবতীদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থ্যাও করা যেতে পারতো।কালিয়াগঞ্জ ব্লকের প্রচুর রাজবংশী সমাজের যুবক যুবতীরা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেরা এই শিল্পের সাথে যুক্ত হয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেতে পারতো।কিন্তূ রাজ্য সরকারের কোন রকম উদ্যোগ না থাকায় আজ অনেকেই এই শিল্প থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছে। কুনোর হাট পাড়ার যুবক সমরেশ চন্দ্র রায় বলেন সরকার চাকরি দিতে পারছেনা।কিন্তূ টেরাকোটা শিল্পের জন্য কুনোর হাট পাড়ায় একটি অত্যাধুনিক টেরাকোটা প্রশিক্ষন কেন্দ্র খুলে দিতেতো অবশ্যই পারে।কিন্তূ এই সরকার না চাকরি না টেরাকোটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র কোনটাই করছেন না।অথচ এখান থেকে টেরাকোটার প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক যুবক যুবতীরা স্বয়ম্ভর হতে পারে।
কিন্তূ কে কার কথা শোনে।কুনোর হাট পাড়ার দীপ্তি বর্মন,মীরা রায় বলেন এই অজ গ্রাম কুনোর হাট পাড়াতে টেরাকোটার উপর মেয়েদের সৌখিন গলার হার, হাতের বালা, কানের রকমারি দুল,নেকলেস বানানো হচ্ছে যা কুনোর থেকে ব্যাঙ্গালোর, দিল্লি,বোম্বে,রাজস্থান,গোয়া, পুনে কলকাতা নিয়মিত যাচ্ছে।যা ইমিটেশনের দোকানের জিনিস পত্রের সাথে সহজেই তুলনা করা যায়।অনেকেই টেরাকোটার কানের দুল,হাতের বালা নেকলেস পরে বিভিন্ন উৎসবে পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে কালিয়াগঞ্জের বাইরে থেকে অনেকেই কুনোর হাট পাড়ায়
এসে মহিলারা পছন্দ সই টেরাকোটার গহনা কিনে নিয়ে যাচ্ছে বলে দীপ্তি বর্মন জানান।এসব স্বত্বেও সরকারের কোন রকম আমাদের যে এই কাজে উৎসাহিত করবে তার কোন রকম উদ্দ্যোগ নেই।এ ব্যাপারে উত্তর দিনাজপুর জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার সুনীল সরকারকে কুনরের হাট পাড়ার টেরাকোটার উন্নয়ন নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছেনা কেন এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আমরা চেষ্টা করছি ওখানে এই শিল্পের কি ভাবে উন্নতি করা যায়।বছরের পর বছর আপনাদের কাছ থেকে শুনে আসছি এই শিল্পের জন্য ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে।কিন্তূ সেই ভাবনা চিন্তার কার্যকরী রূপ কোথায় দেখা যাচ্ছে? সরকার থেকে কুটির শিল্পের উন্নয়নের কথা বলা হলেও তা কেন হচ্ছেনা এই প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল ম্যানেজার সুনীল সরকার বলেন খুব শীঘ্রই আমরা কুনরের হাট পাড়ার টেরাকোটা শিল্পেরহ জন্য পরিকল্পনা নিতে চলেছি।কুনোরের বাসিন্দা দুলাল সরকার বলেন রাজ্য সরকারের উচিৎ কুনোরের ঐ তিহ্যবাহী টেরাকোটা শিল্পের উন্নয়নে রাজ্য সরকার বসে না থেকে এই শিল্পের উন্নয়নে কাজ করুক।এই শিল্পের উন্নয়ন হলে এর মাধ্যমে এলাকার প্রচুর রাজবংশী সমাজের যুবক যুবতীরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবে বলে তার বিশ্বাস।