বিজেপির প্রার্থী তালিকায় ‘আদি’- ৪৪, ‘নব্য’-১৩
1 min readবিজেপির প্রার্থী তালিকায় ‘আদি’- ৪৪, ‘নব্য’-১৩
লোকসভা ভোটের পরে ভিন দল থেকে বঙ্গ বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। দুর্নীতি সহ নানা অভিযোগে অভিযুক্তরা ‘বেনোজলের’ মতো দলে ঢুকে পড়েছিলেন। আর তাতেই সিঁদূরে মেঘ দেখছিলেন সঙ্ঘের নেতারা। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকেও সতর্ক করে দিয়েছিলেন তাঁরা। ‘নব্যদের’ দাপটে ক্ষোভ বাড়ছিল দলের আদি নেতা-কর্মীদের। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, বিধানসভার প্রার্থী তালিকায় দলে ‘বেনোজলের’ মতো ঢুকে পড়া ‘নব্য’রা প্রাধান্য পেতে পারেন। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে সেই আশঙ্কা অমূলক বলে প্রমাণিত হয়েছে। বঙ্গ দখলের যুদ্ধে দলে সদ্য আসা সুবিধাবাদীদের নয়, দলের দুর্দিনের নেতা-কর্মীদেরই প্রাধান্য দিয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব।
এদিন প্রথম দু’দফার ভোটের জন্য ৫৭ আসনের জন্য যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, রাজনৈতিক ডিগবাজি খেয়ে অন্য দল থেকে দলে আসা মাত্র এক ডজন নেতার ঠাঁই হয়েছে। তাঁরা হলেন নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী, রামনগরে স্বদেশরঞ্জন নায়েক, কাঁথি উত্তরে সুনীতা সিংহ, কাঁথি দক্ষিণে অরূপ কুমার দাস, সবংয়ে অমূল্য মাইতি, চন্দ্রকোণায় শিবরাম দাস, পুরুলিয়ায় সুদীপ মুখোপাধ্যায়, জয়পুরে নরহরি মাহাত, তালডাংরায় শ্যামল সরকার, শালতোড়ায় চন্দনা বাউড়ি, হলদিয়ায় তাপসী মণ্ডল ও গোসাবার চিত্ত প্রামাণিক। আর অরাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে ময়নায় টিকিট পেয়েছেন ক্রিকেটার অশোক দিন্দা। গেরুয়া শিবিরের টিকিট পাওয়ার আশায় রাজনৈতিক ডিগবাজি খাওয়া ‘নব্য’ নেতারা কার্যত হতাশ হয়েছেন। বনশ্রী মাইতি ও সৌমেন্দু অধিকারীর মতো শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠদেরও টিকিট দেওয়া হয়নি।দলের ‘আদি’ নেতাদের যে সুদিনে ভোলা হবে না, বরং তাঁদেরই গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা। পুরুলিয়ার ৯টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৭টি আসনে পেয়েছেন দলের ‘আদি’ নেতারা। বাঁকুড়ার ১১ টি আসনের মধ্যে শালতোড়া ও তালডাংরা আসনে প্রার্থী করা হয়েছে ‘নব্য’দের। ওই দুই আসনে দলের প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল ছেড়ে আসা চন্দনা বাউড়ি ও শ্যামল সরকার। ঝাড়গ্রামের চার আসনে প্রার্থী করা হয়েছে দলের পুরনোদের। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণা ও সবং আসনে তৃণমূল থেকে আসা নব্যদের প্রার্থী করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার চারটি আসনের মধ্যে তিনটি আসনে প্রার্থী করা হয়েছে দলের আদি নেতাদের।রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, প্রার্থী তালিকা নিয়ে তৃণমূলে যেভাবে লড়াই শুরু হয়েছে, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্যই দলের আদি নেতাদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যে সব নব্য নেতাদের প্রার্থী করা হয়েছে, তাঁদের রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে দেখেই প্রার্থী করা হয়েছে। প্রথম দফার প্রার্থী তালিকায় যেভাবে দলে আসা নব্য নেতারা উপেক্ষিত থেকে গিয়েছেন, তাতে অন্যান্য জেলার ‘নব্য’ নেতারা যথেষ্টই শঙ্কিত।