উপনির্বাচনের দুই কান্ডারী একুশের প্রতিপক্ষ, অপেক্ষায় জনগনের রায় কালিয়াগঞ্জে।

৩ ফেব্রুয়ারি বুধবার। জয়ন্ত বোস। আর বেশি দিন নেই। আসছে আসছে এটাই ভালো লাগে কিন্তু যেদিনের অপেক্ষায় সারা পশ্চিমবঙ্গের বঙ্গবাসীরা তাকিয়ে আছে সেদিনটি উপস্থিত হলেই সব জল্পনার অবসান ঘটে যাবে। তবে যতদিন না আসছে ততদিন একটা সাসপেন্স, পক্ষে প্রতিপক্ষের আলোচনা, এ ওর বিরুদ্ধে সরব, সত্যি মিথ্যার গল্পের ফাঁদে নাটকের ভাষন চলছে চলবে। হ্যাঁ, পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে জনগনের রায় নিয়ে কে বসবে সরকার গড়ার শপথ নিয়ে? একদিকে ইনক্লাব – বন্দেমাতরম এর যুগলবন্দী অন্যদিকে ঘাস- পদ্মের রাজনৈতিক ময়দান গরম করা আবহাওয়ায় করোনা ভাইরাস পাততাড়ি গুটিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কারণ রাজনৈতিক ময়দানে নেই সামাজিক দুরত্ব, নেই কোনো মাস্ক এর দেখা, নিমেষেই হারিয়ে গেল মনে হয় ভাইরাস করোনা।

তবুও আজকের প্রতিবেদন টির হেডলাইন কে সামনে রেখে পাঠকদের কাছে উপস্থাপন পশ্চিমবঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে উঃ দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনটি নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষন। আর এই এক্সক্লুসিভ বিশ্লেষিত প্রতিবেদনে আকর্ষণীয় বিষয় কালিয়াগঞ্জের বিগত উপনির্বাচনের দুই কান্ডারী বর্তমানে একুশের প্রতিপক্ষ। বেশিদিন হয় নি, এইতো ২০১৯ এর কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনের ময়দান। বাগানের ফুল গাছে একই বৃন্তে দুটি কুসুম।

ছিল, আজ আর নেই। উনিশের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কান্ডারী তার মধ্যে একজন আবার গ্যারান্টার শুভেন্দু অধিকারী এবং অপরজন রাজীব বন্দোপাধ্যায়। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের যিনিই প্রার্থী হবেন তাঁর ও তৃণমূল কংগ্রেসের দলের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ হিসেবে ময়দান কাঁপাবে এই দুই কান্ডারী এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। দুটি কুসুম একত্রিত হয়ে পদ্ম পুষ্পের আকার ধারণ করেছে।

ফিরে তাকানো যাক, পাঠকরা তাকাবেন হয়তো। ২০১৬ সালে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনে সি,পি,আই,এম এবং কংগ্রেসের জোট বন্ধনে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন কংগ্রেসের প্রয়াত নেতা প্রমথ নাথ রায়। বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে বিরাট ব্যবধানে জয় পেয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী। বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান ছিল ৪৬,৬০২। এর ঠিক তিন বছর পর রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী কালিয়াগঞ্জ থেকে ৫৬,৭৬২ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। ফলে রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল ২০১৯ কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে সহজ অঙ্কের হিসাবে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে পদ্মশিবির। তবে নির্বাচনে জয়-পরাজয় শুধু অঙ্কের ওপর নির্ভর করে না, রসায়নেরও একটা বিষয় রয়েছে তার প্রমান পাওয়া যায় কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফলে। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী তপন দেব সিংহ সেই রসায়নে বিজেপির লিড নেওয়া ৫৬৭৬২ ভোটকে মেকআপ করে ২৩০৪ ভোটে পরাজিত করেছিলেন বিজেপি প্রার্থী কমল সরকার কে। জয় পরাজয় ভোটের অঙ্ক এসব থাকবেই কিন্তু থাকবে না একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর পাশে উনিশের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীর দুই কান্ডারী শুভেন্দু রাজীব যারা একুশের নির্বাচনে প্রতিপক্ষের ভুমিকায়। কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনী এলাকার জনগন দেখবে দুই কান্ডারী কে প্রতিপক্ষের ভুমিকায় বাজার গরম করা ভাষনের মধ্যে দিয়ে। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই সরকারের জনহিতকর বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ , দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সুবিধা সাথে বিগত উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা আসনের প্রার্থী কর্তৃক কিছু প্রতিশ্রুতি পালিত না হওয়া। কিন্তু বাস্তবে যে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী কিংবা সরকারের পক্ষে একবছর দুই মাসের মধ্যে সব প্রতিশ্রুতি আজোও অবধি ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে সম্পন্ন হয়েছে কিনা জানা নেই। যেমন আজোও ভারতবর্ষের জনগন তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রায়ই চেক করেন ১৫ লক্ষ টাকা তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পরেছে কিনা। তপন দেব সিংহ তিনি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জনগনের সামনে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকারের এক আত্মা মনেপ্রাণে পদ্মপ্রেমী মন্ত্রী দের (শুভেন্দু রাজীব) পাশে রেখেই প্রতিশ্রুতির কথা বললেও এই উল্লেখযোগ্য দুই মন্ত্রী বিশেষ করে আবার উঃ দিনাজপুর জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী দরাজ কন্ঠে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা এলাকার জনগনের কাছে সেইসকল প্রতিশ্রুতি গুলো পালনের অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু জনগনের বক্তব্যে দুই মন্ত্রী মহোদয় যেখানে উভয়ে এতটাই মানুষের পাশে থেকে কাজ করার প্রতিশ্রুতি শব্দ উচ্চারণ করে পদ্ম শিবিরে যোগদান করলেন সেখানে কালিয়াগঞ্জের মানুষের জন্য প্রতিশ্রুতি গুলো কে অসমাপ্ত রেখে কবর দিয়ে চলে গেলেন কেন এই প্রশ্ন উঁকি মারছে। হ্যাঁ, রাজনৈতিক নেতাদের যাওয়ার, চলার , বলার একশো শতাংশ নিজস্ব রাজনৈতিক অধিকার আছে, কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি গুলো কে জনগনের স্বার্থে সমাপ্ত করেই নাহয় যেতেন বলে অনেকের সুর। আবার বিভিন্ন স্তরের অনেককেই বলতে শোনা গেল শেষ লগ্নে বিদায় কেন, এই বিদায় তো আরো আগেই হতে পারতো? একুশের কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা নির্বাচনে রাজনৈতিক মঞ্চে বিগত দুই কান্ডারী প্রতিপক্ষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন নিশ্চিত এবং ভাষনে ঝড় উঠিয়ে বাজার গরম করে বিজেপির পালে ভোট টানার রনকৌশলে জনগনের রায় কে টেনে আনার পক্ষে কতখানি সার্থক হতে পারবেন আগামী দিন বলবে জনগনের রায়ে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের আওতায় গ্রাম থেকে শহর জুড়ে যে জনকল্যাণ মুখী উন্নয়ন দেখা গিয়েছে সেখানে এই উন্নয়নে জনগনের সাথে ও পাশে থেকেছেন উনিশের উপনির্বাচনের কান্ডারী তথা ১০ বছর ধরে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকারের দুই প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী ও রাজীব বন্দোপাধ্যায়। বিভিন্ন সময়ে কালিয়াগঞ্জের রাজনৈতিক ময়দানে গলা ফাটিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্তুতি গেয়ে এবং মোদী সহ বিজেপির গুষ্টি তুষ্টি করে জনগনকে অবহিত করেছিলেন আবার এই বঙ্গ বিজেপিতে বর্তমান পাল্টি খাওয়া নেতাদ্বয় সুর পাল্টিয়ে মোদী তথা বিজেপির স্তুতি গেয়ে এবং তৃণমূল কংগ্রেস তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গুষ্টি তুষ্টি করে ময়দান মাতিয়ে তুলছেন তাতে করে কোন নীতি আদর্শে জনগনকে ভাবিয়ে তুলে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা একুশের নির্বাচনে ভোট টানবেন বিজেপির পক্ষে সেটাও লাখ টাকার প্রশ্ন বলে জনগনের কাছে উঁকি মারছে। তবে উনিশের উপনির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কান্ডারী ঠিক দেড় বছরের মধ্যে কালিয়াগঞ্জে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পুরোনো কান্ডারী দের পিছনে ফেলে নব্য কান্ডারী হিসেবে অবতীর্ণ হবেন। আর ঠিক এই টার্নিং পয়েন্টে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা একুশের নির্বাচনে জনগন হয়তো বিচার বিশ্লেষণ করেই হয়তো রায়দান দিবেন। তবে জনগনের একাংশ মনে করছেন দীর্ঘদিন ধরে দুই কান্ডারী ” মমতা বাংলার গর্ব ” কবচ সাথে করে ময়দানে জনগনের কাছে কবচ দিয়ে বেড়ালেন, এরাই আবার জনগনের কাছে ” মোদী দেশের গর্ব” কবচ নিয়ে প্রচারে নামবেন তাতে করে জনগনের কাছে প্রশ্ন কোন কবচ তাদের জন্য শ্রেয়? কিন্তু সকলেই তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এখনও খোঁজ নিচ্ছেন ১৫ লক্ষ টাকা এসে পৌঁছল কিনা কিংবা নব্য বিজেপির দুই কান্ডারী শুভেন্দু রাজীব যিনারা এই ১৫ লক্ষ টাকার নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদীর আশ্বাসের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন তিনারা এবার সেই আশ্বাসের পক্ষে সাওয়াল করে বাংলার জনগন কে আর্থিক স্বচ্ছলতায় নতুন বাংলা গড়ে তুলবেন তো? জনগনের রায় কালিয়াগঞ্জ সহ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে এই বিশ্বাস নামক অঙ্কের সাথে জড়িয়ে থাকবে বলে গুনগুন আওয়াজ চারিদিকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *