উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লক এর বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে গাঁদা ফুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে
1 min readউত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লক এর বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে গাঁদা ফুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে
তনময় চক্রবর্তী উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ ব্লক এর বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে গাঁদা ফুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে । ফুলের মরসুমের শুরুতেই চাষিরা দামও ভালো পাচ্ছেন। ইতিমধ্যে গাঁদাফুল কালিয়াগঞ্জ রায়গঞ্জ সহ বিভিন্ন বাজারে নেমে গিয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগপোকার আক্রমণ এখনও সেই অর্থে দেখা যায়নি। যে কারণে চাষিরা উদ্বেগের বাইরে রয়েছেন। কালিয়াগঞ্জ ব্লকের কুনোর এবং তার পার্শ্ববর্তী পোয়ালতোড় গ্রামে ব্যাপক পরিমাণে গাঁদা ফুলের চাষ হয়েছে। ফসল, শাক-সব্জির পাশাপাশি গাঁদা ফুলও কৃষকদের কাছে জায়গা করে নিচ্ছে।
জেলার উদ্যানপালন দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, গাঁদাফুল চাষ কম খরচে লাভজনক। তাই এই ফুল চাষের প্রতি চাষিদের আগ্রহ রয়েছে। এবিষয়ে কুনোর এবং পোয়ালতোড় গ্রামের গাঁদাফুল চাষি পলাশ দাস বলেন, বিকল্প চাষ হিসেবে গাঁদাফুল চাষ লাভজনক। যে কারণে আমরা শাকসব্জির বদলে এখন বাণিজ্যিকভাবে এই ফুল চাষ করেছি। তাতে রক্তগাদা থেকে জংলা প্রজাতির ফুল রয়েছে।
এবছর দাম সে অর্থে কমেনি। বাজার এখনও ভালো যাচ্ছে। বাইরে থেকে ফুল আমদানি হলে তখন মন্দা দেখা দেয়। তবে আশা করছি আমাদের এই ব্যবসা লাভজনকই হবে। পোয়ালতোড় গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ সরকার বলেন, গাঁদা ফুল চাষ করলে তো এমনিতেও চাষের জমির শোভা বৃদ্ধি পায়। আগে থেকে এলাকায় গাঁদাফুলের চাষ বেড়েছে। আমরা আগে এসময় সরিষা চাষ করতাম। কিন্তু আমার ভাই গত কয়েকবছর ধরে গাঁদাফুল চাষের দিকে ঝুঁকেছে। গাঁদাফুল চাষ করে তারা ভালোই মুনাফা ঘরে তুলছে। সরকারি উদ্যোগে ভালো প্রশিক্ষণ পেলে এবং সময় মতো পরিচর্চার বিষয়টি মাঠে এসে আধিকারিকরা কৃষকদের বুঝিয়ে দিলে, অনেকেই এই লাভজনক ব্যবসার দিকে ঝুঁকবেন।এবিষয়ে জেলার উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক বলেন,
গাঁদাফুল চাষ সংগঠিতভাবে খুব কম হয়। তবে জেলায় কিছু এলাকায় ছোট ছোট জমিতে ফুল চাষে কৃষকদের আগ্রহ রয়েছে। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে সব্জি চাষ করছেন, তাঁরা বিকল্প হিসেবে একবার গাঁদাফুল চাষ করলে জমির উপকারিতা বাড়ে। গাঁদাফুলের শিকড়ে জমির ক্ষতিকারক জীবাণু নষ্ট হয়ে যায়। এতে জমি উর্বর হয়।জেলা উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কালিয়াগঞ্জ , হেমতাবাদ, ইটাহার ব্লকের বেশ কিছু জায়গায় গাঁদাফুল ব্যাপকহারে চাষ হচ্ছে। হেমতাবাদ এ বিক্ষিপ্তভাবে গাঁদাফুল চাষ হয়।
মূলত জংলা প্রজাতির হলুদ এবং কমলা ফুল বেশি চাষ হয় । এবারও প্রায় একই পরিমাণ জমিতে জংলা প্রজাতির গাঁদাফুল চাষ হচ্ছে । ফুলের পাপড়ি সহজে খসে পড়ে না বলে এই ফুল মালার ফুল হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সারা বছর পুজো-পার্বণ এবং নানা অনুষ্ঠানে ফুলের চাহিদা থাকে। অনেকেই সৌন্দর্যায়ন এবং প্রদর্শনীর জন্য ইনকা প্রজাতির ফুল চাষ করে থাকেন। এই প্রজাতির ফুল অনেকটা বড় হয়। বাড়ির মধ্যে টবে এই ফুলের গাছ অনেককেই সাজিয়ে রাখতে দেখা যায়। তবে বাণিজ্যিকভাবে জংলা প্রজাতির ফুলর চাষই বেশি হয়। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে এই ফুল চাষ হয়ে থাকে। বীজ বসানোর পর প্রায় ৭০ থেকে ৮০ দিনের মাথায় গাছে ফুল আসতে শুরু করে। এক বিঘা জমিতে ৭০০ পিস গাঁদা ফুলের চারা লাগানো যায়। বিঘা প্রতি খরচ হয় গড়ে ১৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জের বাজারে গাঁদাফুল গড়ে ২৫থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তাতে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।