কালিয়াগঞ্জে পূজার আনন্দ মাঠে মারা মহাষ্টমী ও নবমীর রাতে,দুধের সাধ ঘোলে মেটালো ষষ্ঠী ও সপ্তমীর রাতে-
1 min readকালিয়াগঞ্জে পূজার আনন্দ মাঠে মারা মহাষ্টমী ও নবমীর রাতে,দুধের সাধ ঘোলে মেটালো ষষ্ঠী ও সপ্তমীর রাতে-
তপন চক্রবর্তী,কালিয়াগঞ্জ,৫অক্টোবর:আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাসকে মান্যতা দিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার দূর্গাপূজার দর্শনার্থীরা আগেভাগেই ষষ্ঠী এবং সপ্তমীর দুইদিন পূজার আনন্দ চুটিয়ে উপভোগ করেছিল।কারন মহাষ্টমী ও নবমীতে যেহেতু বৃষ্টি হবে আগেই যেহেতু আবহাওয়া দপ্তর বলেছিল নিম্নচাপের কথা।যা বলা ঠিক সেই অনুপাতে কাজ।মহা অষ্টমীর দিন সন্ধ্যায় সবে মাত্র পূজার কেনা জামা জুতো পরে বের হতেই অঝরে বৃষ্টি। দীর্ঘক্ষণ প্রবলবেগে বৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও বৃষ্টির প্রভাব কিছুটা কমলে দর্শনার্থীরা পুনরায় বেরিয়ে পড়ে পূজা দেখতে।উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের এবারের দুর্গা পূজার মুষ্টিমেয় কয়েকটি পূজা কমিটি থিমের ব্যবহার করে দর্শকদের যথেষ্ট পরিমাণেই আকর্ষণ করতে পেরেছে।যেমন নশিরহাট হরিহরপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবার তাদের পূজায় সমাজের শহর ও গ্রাম বাংলা থেকে যাত্রা শিল্প এক একদম উঠে গেছে বলা যায়।
এবারের পুজোয় সেই যাত্রা শিল্পকে কেমন করে আবার পুনরুজ্জীবিত করা যায় সেই ব্যাপারে দর্শনার্থীদের সচেতন করতে যাত্রা শুরু এই পুজোর থিমের নাম দেওয়া হয়েছে।কালিয়াগঞ্জ শহরের ধনকোলের রশিদপুর সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবার তাদের পুজোর থিমের নাম “ভক্তি “।এই ক্লাবের উদ্যোক্তারা ভক্তি থিমের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চায় অনেক হয়েছে আর নয়।এবার ভালো কাজ করে মানুষের আপদে বিপদে দাড়িয়ে তাদের সমস্যার সমাধান করুন।
মানুষকে প্রতারনা করে তাকে বিপদে ফেলে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নয়।ভালো কাজ করলে যেমন স্বর্গে যাওয়া যায় তেমনি খারাপ কাজ করলে কিভাবে নরকে যাওয়া যায় সেই দৃশ্য তারা দর্শকদের দেখিয়ে দিয়েছে।তাই মানুষের ঢল নামে একদিকে যেমন যাত্রা শুরু থিমের পূজায় তেমনি ভক্তি থিমের পুজাতেও নেমেছিল মানুষের ঢল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে। কালিয়াগঞ্জের পাবনা কলোনীর প্রতিভা সংঘের পূজায় কালিয়াগঞ্জ শহরে থেকেই ব্রাজিলের আমাজনের জঙ্গলের দুধের স্বাদ ঘোলে মিটিয়ে দেবার ব্যবস্থা করেছে। হাজার হাজার দর্শক পাবনা কলোনীর বিশালাকার জঙ্গলের মধ্যে গিয়ে গা ছম ছম পরিবেশের মধ্যে দিয়ে আলো আধারী পরিবেশের মধ্যে গিয়ে ব্রাজিলের আমাজন জঙ্গলের রূপ কেমন হতে পারে তার কিছুটা অনুভব করতে পেরেছে বলে সবাইকেএকই মন্তব্য করতে শোনা যায়।
এ দিকে কালিয়া গঞ্জের সাহাপাড়া দুর্গোৎসব কমিটি মায়াপুরের ইসকন মন্দিরে আদলে সুন্দর মন্ডপ সজ্জা করে ইসকন মন্দিরের পরিবেশ তৈরি করে সবাইকে মুগ্ধ করতে পেরেছে বলা জায়। দশমীর দিন বৃষ্টি না থাকায় দশমীর দুর্গা পূজার কার্নিভাল সন্ধ্যায় দেখবার জন্য কালিয়াগঞ্জ শহরের মানুষ পূজার অধিকাংশ প্রতিমা কালিয়াগঞ্জ থানার সামনের পূর সভার নদীর ঘাটে বিসর্জন দেখবার জন্য প্রতি বছরের মত প্রচুর মানুষ হাজির হয়।বিসর্জন ঘাটে উপস্থিত থাকেন কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার পৌর পিতা রাম নিবাস সাহা সহ পৌর সভার কমিশনারগন,উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের কো মেন্টর অসীম ঘোষ,কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাজীব সাহা,বিশিষ্ট শিল্পপতি তথা সমাজসেবী স্বপন সরকার,উপস্থিত ছিল কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ আধিকারিকদের সাথে সিভিক পুলিশ বাহিনী যাতে কোন রকম আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না ঘটে।
সন্ধ্যা থেকে একের পর এক বনেদি বাড়ির প্রতিমা বিসর্জন দেবার জন্য প্রসেশান করে নদী ঘাটে আসার সাথে সাথে বিভিন্ন বারোয়ারী পূজার প্রতিমা বিসর্জনের জন্য ঘাটে আসে।কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার সাফাই কর্মীরা অত্যন্ত তৎপরতার সাথে এক এক করে লরি থেকে প্রতিমাকে নামিয়ে শৃংখলার সাথে প্রতিমা নিরঞ্জনের ববস্থা করে।কালিয়াগঞ্জ শহরের মানুষ চোখের জলে মাকে বিদায় জানানোর সাথে সাথে মায়ের কাছে প্রার্থনা করে মা তুমি আবার এসো এই ধরায় অসুরদের বিনাশ করে।এই ধরায় অশান্তির পরিবেশকে বিনাশ করে মানুষের সুখ সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নদীর ঘাটে একদিকে মায়ের বিসর্জনের সাথে সাথে চিরাচরিত প্রথা অনুযায়ী উপস্থিত বয়স্কদের ছোটরা প্রনাম করলে তারা ছোটদের আশীর্বাদ করে।
অনেকেই সমস্ত ভেদাভেদ ভুলে একে অপরকে আলিঙ্গন করে থাকেন। তবে এত সুন্দর একটি অনুষ্ঠানে ও সুন্দর পরিবেশে একটি বারের জন্য দেখা যায়নি কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়কে যা নিয়ে চলছিল বিসর্জন ঘাটেই চলছিল গুঞ্জন।তাদের বক্তব্য কালিয়াগঞ্জ শহরের এত সুন্দর একটি অনুষ্ঠানে বিধায়ক থাকবেনা এটাহয়না। যদিও ছোট খাটো দুই একটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া বিসর্জনের অনুষ্ঠানটি ছিল হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে অত্যন্ত প্রসংশনীয়। কালিয়াগঞ্জ থানার আই সি দীপাঞ্জন দাস বলেন কালিয়াগঞ্জ মহা ষষ্ঠীর দিন থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত কালিয়াগঞ্জ শহর ও গ্রামের সর্বত্র শান্তিপূর্ন ভাবে দুর্গা মায়ের পূজা হয়।কোথাও কোন রকম অশান্তির খবর ছিল না বলেই তিনি জানান। কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার পৌর পিতা রাম নিবাস সাহা বলেন কালিয়াগঞ্জ শহর ও ব্লকে শান্তিপূর্ন ভাবে দুর্গা পূজার দিন গুলি অতিবাহিত হবার জন্য তিনি কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ কর্মী,সিভিক ভলেন্টিয়ার,কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার কর্মী ও সর্বপরি কালিয়াগঞ্জ পৌর সভার সাফাই কর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রম করার জন্য তিনি তাদের অভিনন্দন জানান।