ফেস ভ্যালু ” ইতিকথা কি কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠন কে প্রভাবিত করছে।
1 min readফেস ভ্যালু ” ইতিকথা কি কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠন কে প্রভাবিত করছে।
তন্ময় চক্রবর্তী, কালিয়াগঞ্জ।আগামী ২১শে জুলাই অমর শহীদ দিবস উদযাপন কে কেন্দ্র করে বাংলা জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ লেভেল থেকে রাজ্য লেভেলের তৃণমূল কংগ্রেস এর কর্মী, সমর্থক এবং নেতৃত্বদের মধ্যে এক আলাদা অনুভূতি, আবেগ জড়ানো কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। অবশ্যই এই কর্মকান্ড তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন পর্যায়ের। কারণ অমর শহীদ দিবস ২১শে জুলাই মর্মস্পর্শী হৃদয় বিদারক অনুষ্ঠান টি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের। প্রকৃত পক্ষে বুথ লেভেল থেকে সংগঠন শক্তিশালী না হলে কোনোমতেই সম্ভব নয় যে কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে অঞ্চল, ওয়ার্ড, পৌরসভা, পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ, বিধানসভা ও সাংসদ এলাকা নিজেদের দখলে রাখার। কিন্তু ইতিমধ্যেই মাত্র ৪ মাস আগেই রাজ্য জুড়ে শেষ হয়েছে পৌর নির্বাচন এবং সেই পৌর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ লেভেলের সাংগঠনিক শক্তির জোড়ে রাজ্য জুড়ে প্রতিটি পৌরসভায় তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌর বোর্ড গঠিত হয়েছে। তবে এই প্রথম উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ১৭ টি ওয়ার্ডে প্রচন্ড হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে ১০ টি ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেস তাদের প্রার্থীদের জিতিয়ে আনতে পেরেছে। অথচ কালিয়াগঞ্জে ১০ টি জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস ওয়ার্ডে তিতিবিরক্ত সংগঠনের কর্মীরা। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পৌর বোর্ডের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে মুখ পুরেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠনের।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক কার্যালয় থাকলেও সেখানে প্রত্যহ গোনাকয়েক কর্মীদের আনাগোনা। কালিয়াগঞ্জ জুড়েই প্রতিটি ওয়ার্ডে চলছে কর্মীদের মধ্যে এক চাপা ক্ষোভ। কোনদিন কিভাবে আছড়ে পরবে কে জানে। এর কারণ জানা গেছে কালিয়াগঞ্জ পৌর নির্বাচনে জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলররা সকলেই তাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ অর্থাৎ তাদের শারীরিক ভাষায় প্রকাশ করছেন কাউন্সিলর দের” ফেস ভ্যালু ” নাকি সংগঠনের চাইতেও সদ্য পৌর নির্বাচনে জয়ের অন্যতম কারিগর এবং এই আত্ম অহংকার বর্তমানে প্রভাবিত করছে ওয়ার্ড সংগঠন কে। আর এই কনসেপ্ট কে নাকি সর্বোতভাবে সাহায্য করছেন বর্তমান কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি যা ইতিমধ্যেই প্রতিটি ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বস্তরের কর্মীদের মধ্যে আলোচনার বহিঃপ্রকাশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দলীয় সৈনিক জানালেন গতকাল অর্থাৎ ৬ই জুন নাকি সন্ধ্যের সময় কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি বর্তমান বিধায়কের উপস্থিতিতে ২১শে জুলাই নিয়ে আলোচনা করতে শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর, পৌর পতি, উপপৌরপতি এবং কয়েকজন কর্মীদের নিয়ে আলোচনা বসেছিলেন। সেই আলোচনা সভায় বর্তমান বিধায়ক শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির কাছে জানতে চান প্রতিটি ওয়ার্ডের সভাপতিরা নেই কেন।
তিনি সংগঠনের বিষয়বস্তু নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলে আঙ্গুল তুলেছেন বলে জানা যায়। প্রতিটি ওয়ার্ডে বিশেষ করে ১০ টি ওয়ার্ডে বিগত বিধানসভা নির্বাচনে যে পরিমান ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে ছিল বিজেপির প্রাপ্য ভোটের চেয়ে সেখানে সংগঠনের একতা ও পরিশ্রম না থাকলে পিছিয়ে থাকা ভোটের অঙ্ক কে টপকে জয়ী হওয়া কি ” ফেস ভ্যালু ” কৃতিত্ব- এই নিয়ে আলোচনা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সর্বস্তরের কর্মীদের মধ্যে। তাদের আলোচনার মধ্যে এখন প্রতিটি ওয়ার্ডে সকল কর্মীদের কাছে গেলেই আরো একটি আলোচনা যদি ” ফেস ভ্যালু ” এই জয়ের মূখ্য ভুমিকা হয় তাহলে কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতির” ফেস ভ্যালু ” বিপুল পরিমাণ ভোটে পরাজয়ের অন্যতম কারণ কি ? তাহলে যিনি সংগঠনের কান্ডারী তাঁর নিজের বুথ, ওয়ার্ডে যদি” ফেস ভ্যালু ” – র এই অবস্থা হয় তাহলে তার তো সমগ্র ওয়ার্ড কে সাংগঠনিক ভাবে পরিচালনা করবার ” ফেস ভ্যালু ” আছে কি। কর্মীদের আরো আলোচনা এই কারণে তিনি নাকি সংগঠনের বাহিরে সর্বদাই ওয়ার্ড কাউন্সিলর দের নিয়েই ভীষণ ব্যাস্ত এমনকি পৌর অফিস টাইমের পরে তাকে প্রায়ই দেখা যায় পৌরসভা অফিস প্রাঙ্গনে। বর্তমানের কথা এই বিষয়ের সত্যতা যাচাই করতে যায় নি তবে বিভিন্ন জায়গায় এমনকি তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে কর্মীদের মধ্যে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা গিয়েছে অন্দরমহলের কথা। পৌরসভার জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরদের সাথে প্রতিটি ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠনের একটি বিস্তর দুরত্ব ইতিমধ্যেই তৈরী হয়ে গিয়েছে বলে প্রতিটি ওয়ার্ডের সাংগঠনিক দলীয় সৈনিকদের আলোচনা ও ক্ষোভ। তাদের ক্ষোভের ভাষায় এও জানা যাচ্ছে এই দুরত্ব তৈরী করে ফায়দা লুটছে নাকি মুষ্টিমেয় কিছু নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য দলের সর্বোচ্চ সাংগঠনিক নেতৃত্ব দের কাছে সুযোগ হলেই এই বিষয়ে তুলে ধরা হবে। তবে এই মুহূর্তে ২১শে জুলাই অমর শহীদ দিবস উপলক্ষে যেখানে সর্বত্র কর্মীদের জমায়েত করা নিয়ে সাংগঠনিক কর্মব্যাস্ততা চরম পর্যায়ে সেখানে কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেস এর সাংগঠনিক চিন্তাধারা, চিন্তাশক্তি একেবারেই দলীয় সাংগঠনের বিরুদ্ধে। ” ফেস ভ্যালু ” র ইতিকথা সত্যি কি সংগঠন কে প্রভাবিত করছে ?