October 24, 2024

সত্যি সেলুকাস বিচিত্র কী এই দেশ, লকডাউনে মদের দোকান খোলা ।

1 min read

সত্যি সেলুকাস বিচিত্র কী এই দেশ, লকডাউনে মদের দোকান খোলা ।

জয়ন্ত বোস, কালিয়াগঞ্জ।সেলুকাস ছিলেন একজন গ্রীক বীর যোদ্ধা। আলেকজান্ডারের প্রধান সেনাপতি। আনুমানিক খ্রীষ্টপূর্বে ৩২৭ সালে আলেকজান্ডার যখন ভারত দখলের অভিযান করেন তখন তার সেনাপতি ছিলেন সেলুকাস যিনি আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পরে সফল শাসক হয়েছিলেন। ভারতবর্ষের মানুষের চালচলন, কৃষ্টি, সভ্যতা ইতযাদির বিভিন্নতা ও বৈচিত্র্য দেখে আলেকজান্ডার সেলুকাস কে গ্রীক ভাষায় কি বলেছিলেন তা জানা না গেলেও দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তার একটি লেখায় আলেকজান্ডারের এই মুহূর্তটির অনুভূতি সম্পর্কে লিখেছিলেন ” সত্যি সেলুকাস, বিচিত্র কী এই দেশ”।

সেদিনের আলেকজান্ডার ও সেলুকাস নেই। কিন্তু রয়ে গেছে ঐ উক্তি। আর আজ লকডাউন পরিস্থিতিতে এই ভারতেই, এই রাজ্যে, এই জেলায় যেখানে দুঃস্থ গরীব মানুষেরা কর্মহীন হয়ে পরেছে, রোজগার পুরোপুরি বন্ধ সেখানে পয়সা ওয়ালা ব্যবসায়ী বন্ধুদের এবং পয়সা ওয়ালা সমাজের একশ্রেণীর খদ্দেরদের জন্য মদের দোকান খোলার সরকারি নির্দেশক্রমে মদের দোকানের সামনে লম্বা লাইন দেখে এরাজ্যের , এ জেলার , এ শহরেরে মতো অন্য শহরের লাখ লাখ আলেকজান্ডার বলছে ” বিচিত্র কী এই দেশ, লকডাউনে মদের দোকান খোলা “। ঐদিন ভারতবর্ষের এক বিচিত্র মিশ্রনে কালচার সম্পর্কে সেলুকাস কে উদ্দেশ্য করেই আলেকজান্ডার সেলুকাস কে বলেছিল, আর আজ লাখ লাখ ভুখায়ালা , কর্মহীন, রোজগার হীন পরা আলেকজান্ডার বলতে শুরু করেছে কিন্তু সেলুকাস টি কে।

লজ্জা, লজ্জা দেশের , রাজ্যের, জেলার লজ্জা। কোথায় আজকের সেলুকাস। যে শহরে, যে গ্রামে সপরিবারে দুঃস্থ অসহায় গরীব পরিবারগুলো কর্মহীন, রোজগার বিহীন হয়ে পরে ত্রানের লাইনে, রেশনের দোকানে ভীড় জমাচ্ছেন সেখানে মদের দোকান খোলার সরকারি নির্দেশ জারী করে মদের দোকান খুলে সুরা পানকারী দের চড়াদামে সুরা ত্রানের সুযোগ করে দেওয়া, সেলুকাস কোথায়, সেলুকাস কে। বিদেশী সুরায় নাকি সুগার ফ্রী স্টিকার লাগিয়ে সুগার ফ্রী বিভিন্ন ব্রান্ডের সুরা পাওয়া যায় কিন্তু এই দেশে, এই রাজ্যে, এই জেলায় , এই শহরে যে করোনা ফ্রী বিভিন্ন ব্রান্ডের সুরা মিলতে পারে এই লকডাউন পরিস্থিতিতে সত্যি বিষ্ময়, তবুও সেলুকাস তুমি কোথায়। নির্লজ্জ, বেহায়া পদক্ষেপ। এইতো এই কালিয়াগঞ্জ শহরেই বিভিন্ন ধরনের বিভিন্ন অর্থনৈতিক স্তরের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের জায়গা। দীর্ঘদিন ধরে এই নোবেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে লকডাউন পরিস্থিতিতে সকলের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ঝাঁপ বন্ধ। তার মধ্যেই দৈনন্দিন এসেনশিয়াল জিনিসের ব্যবসার প্রতিষ্ঠান খোলা। কিন্তু ছোট থেকে বড় বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ কেউ দোকান খোলা রেখে ব্যবসা করছেন কিন্তু সমগোত্রীয় সেই ব্যবসার দোকানগুলো বেশিরভাগ মানুষেরা খুলতেই পারছেন না। খুলতে গেলেই পৌর প্রশাসনের বড় বড় চোখের চাউনিতে পুলিশ প্রশাসন নামিয়ে দিতে বলছে ব্যবসার ঝাঁপ। সেলুকাস তুমি কোথায়, সেলুকাস দেখ একই অঙ্গে কত রুপ। আর এই নিয়েই ভিতরে ভিতরে তৈরী হচ্ছে একরাশ বিরক্তি, দুঃখ, কষ্ট এবং আর্থিক কষ্টের যন্ত্রনা। কালিয়াগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতি সকল স্তরের ব্যবসায়ী বন্ধুদের সাংগঠনিক স্থল। ছোট বড় সর্ব আর্থিক সীমাবদ্ধতায় গড়ে উঠা ব্যবসায়ী বন্ধুদের এই সমিতি। সেই সমিতির কর্ণধাররা কোথায় যেখানে পক্ষপাতিত্বে কেউ ব্যবসা করছেন আর বেশিরভাগ করতে পারছেন না। প্রশাসনের সাথে বসে সঠিক বার্তা পৌঁছান আপনার বা আপনাদের মুখ চেয়ে থাকা ব্যবসায়ীদের কাছে। লকডাউন চলছে, চলবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণে কিন্তু গ্রীন জোন এলাকায় সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী কি কি খোলা থাকবে আর কিকি খোলা থাকবে না প্রচার করতে অসুবিধে কোথায় এই প্রশ্ন কালিয়াগঞ্জ শুধু নয় সকল স্থানের। পরিষ্কার ভাবে লোকাল সকল স্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের যৌথ উদ্যোগের সাথে ব্যবসায়িক সমিতির একত্রীকরণে প্রচার হোক। সেলুকাস তুমি কোথায়, দেখেছো কি আনন্দেই না লম্বা লাইন বিদেশি ব্র্যান্ডের করোনা ফ্রী সুরার দোকানের সামনে। বিচিত্র কী এই দেশ, রাজ্য, জেলা, শহর। তবুও লাখো লাখো গরীব, দুঃস্থ, অসহায় কর্মহীন রোজগার বিহীন আলেকজান্ডারদের এই কথা শোনার সেলুকাস নেই।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *