সমুদ্র বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পাচ্ছে রায়গঞ্জের কোয়েনা মুখার্জি
1 min readসমুদ্র বিজ্ঞানে অসামান্য অবদানের জন্য বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পাচ্ছে রায়গঞ্জের কোয়েনা মুখার্জি
তপন চক্রবর্তী ও শুভ জিৎ দাস রায়গঞ্জ, ১৪ সেপ্টেম্বর ঃ সমুদ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণার জন্য ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে এবছর পুরস্কৃত হচ্ছেন রায়গঞ্জের কোয়েনা মুখোপাধ্যায়(৩৪)। সমুদ্র বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করে সবাইকে তাক লাগিয়েদিয়েছেন তিনি। বিশ্ব মঞ্চে তাঁর গবেষণা স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রতি দুবছর পর পর ফ্রান্সের ব্রেস্ট শহরে সমুদ্র বিজ্ঞান ও তার সম্পর্কিত বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কনফারেন্সের আয়োজন করে ক্যাম্পাস মন্ডিয়াল দে লা মের। আগামী ২৬ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে সমুদ্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জড়িত যে দশ জন মহিলা বিজ্ঞানীকে সম্মানিত করবে তাদের মধ্যে একজন রায়গঞ্জের বাসিন্দা কোয়েনা। রায়গঞ্জের বাসিন্দা ডঃ কোয়েনা মুখোপাধ্যায়।কোয়েনা বর্তমানে শিলচরের এন আই টি র সহকারী অধ্যাপিকা।বাবা ডঃ শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় মালদা কলেজের অঙ্কের অধ্যাপক ছিলেন এবং মা ডঃ স্বপ্না মুখোপাধ্যায় ইটাহার মেঘনাথ সাহা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষা।
তবে ১৯৯৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ইটাহারের সিপিআইয়ের বিধায়ক ছিলেন,পাশাপাশি তিনি রাজ্যের অসামরিক ও প্রতিরক্ষা দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।রায়গঞ্জ শহরের কলেজপাড়ার বাসিন্দা মুখোপাধ্যায় দম্পতির ছোটো মেয়ে কোয়েনা ২০০৩ সালে রায়গঞ্জ গার্লস হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করার পর ২০০৫ সালে রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুলে বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ।এরপর ২০০৯ সালে হলদিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইন্সটুমেন্টেশন ও কন্ট্রোল বিষয়ে বিটেক করে কোয়েনা।
২০১১ সালে এন আই টি হামিদপুরে এম টেক করার পর থেমে থাকেনি সে। ২০১৬ সালে আই আই টি দিল্লি থেকে পি এইচ ডি কমপ্লিট করে কোয়েনা। সমুদ্র বিজ্ঞান নিয়ে কোয়েনার অসামান্য অবদানই তাঁকে এই স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।বাবা ডঃ শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় জানান,ওর অরিজিনাল কাজ হচ্ছে রোবোটিকসের উপর,রোবোটিকস আন্ডার ওয়াটার।ও নিজেই যেতেই পারবে।ওর রোবোট ফ্লেক্সসেবল,সরলরেখা হয়ে যেতে পারে।বক্ররেখা হয়ে যেতে পারে।
রোবোটটি একদম মাছের আকৃতির। ডুবো জাহাজ নয়, রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে সমুদ্রের নীচ দিয়ে যাতায়াত করার উপায় নিয়ে গবেষণা করছে সে। তিনি বলেন, মাছ যেভাবে সমুদ্রের নীচ দিয়ে জলের গতির বিরুদ্ধে যাতায়াত করে সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই কোয়েনা এই গবেষণা চালাচ্ছে। ‘ মেয়ের সাফল্যে খুশি শ্রীকুমারবাবুও। তিনি জানান, ‘আমার মেয়ে বলে নয়, ওঁর সাফল্য রাজ্যের তথা দেশের সাফল্য।কোয়েনা জানান, ‘মাতৃভাষায় শিক্ষা যে প্রকৃত শিক্ষা হয়, তার সুফল আমি জীবনে উপলব্ধি করেছি। আমার ভীতটা মজবুত করে দিয়েছে মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চা।জানা গিয়েছে, শ্রীকুমারবাবুর বড় মেয়ে কোয়েল মুখোপাধ্যায় বছর খানেক আগে ডারবান বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্ট ডক্টরেট করার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের স্কলারশিপ পেয়ে কয়েক দিন কাজ করেও ছেড়ে দিয়ে দেশে ফিরেছে । কোভিড নিয়ে কোয়েল, বার্কের বৈজ্ঞানিক সীতাংশু শেখর বিশ্বাস এবং আরও তিনজন মিলে একটা খুব ভালো কাজ করেছে । সেই গবেষণা বই আকারেও প্রকাশিত হয়েছে ।এমনটাই জানিয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়ের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক আইনজীবি উৎপল দাস।