October 28, 2024

ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা কেড়ে নিল সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের অন্যতম নায়ককে। শোক প্রকাশ করল কালিয়াগঞ্জ শহর ও   ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব।

1 min read

ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা কেড়ে নিল সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের অন্যতম নায়ককে। শোক প্রকাশ করল কালিয়াগঞ্জ শহর ও   ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব।

তনময় চক্রবর্তীও শুভ আচার্য  ভয়াবহ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা কেড়ে নিল সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের অন্যতম নায়ককে। প্রয়াত দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত। ৮ ডিসেম্বর, ২০২১, তামিলনাড়ু-কর্ণাটক সীমানায় নীলগিরি পাহাড়ের কাছে ভেঙে পড়ে রাওয়াতের চপার। তাঁর সঙ্গেই অভিশপ্ত ওই এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে ছিলেন তাঁর স্ত্রী মধুলিকা। দুর্ঘটনায় চলে গেলেন তিনিও। চপারে থাকা ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জনেরই মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়।

১৬ মার্চ ১৯৫৮, উত্তরাখণ্ডের পাউরিতে যোদ্ধা পরিবারে জন্ম হয় বিপিন রাওয়াতের। দেরাদুন ও শিমলায় স্কুলশিক্ষা শেষে যোগ দিয়েছিলেন ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে। ১৯৭৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর গোর্খা রেজিমেন্ট থেকে সেনায় শুরু হয় তাঁর কেরিয়ার। তারপর সময়ের সঙ্গে কাশ্মীর-সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ফৌজি ইউনিটের দায়িত্ব সামলেছেন।

শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রসংঘের হয়ে কঙ্গোতে শান্তিরক্ষা অভিযানেও অংশ নেন তিনি।সাহসিকতা ও কর্তব্যে অবিচল থাকার জন্য তাঁর ইউনিফর্মে যুক্ত হয়েছে পরম বিশিষ্ট সেবা মেডেল, বিশিষ্ট সেবা মেডেল, সেনা মেডেল, অতি বিশিষ্ট সেবা মেডেল, যুদ্ধ সেবা মেডেল এবং উত্তম যুদ্ধ সেবা মেডেল। ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ সালে ভারতীয় সেনাপ্রধান পদে বসেন কাউন্টার ইনসার্জেন্সি বিশেষজ্ঞ রাওয়াত।

২০১৯ সালে অবসরের পর দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক পদে নিয়োগ করা হয় তাঁকে।তবে তাঁর মুকুটের সেরা পালক হচ্ছে ২০১৫ সালে মায়ানমারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। তাঁর নেতৃত্বেই মায়ানমারে ঢুকে নাগা জঙ্গিগোষ্ঠী এনএসসিএন (খাপলাং)-এর শিবিরে হামলা চালায় ভারতের বিশেষ কমান্ডো বাহিনী।নিজের কর্মদক্ষতা ও উত্তর-পূর্ব ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ সম্পর্কে রাওয়াতের জ্ঞানের পরিধি ছিল অসীম।

নাগাল্যান্ডের ছোট্ট পাহাড়ঘেরা শহর ডিমাপুরে সেনার থার্ড কোরের দায়িত্ব ছিল রাওয়াতেরই কাঁধে। সেনার বিশেষ কমান্ডো বাহিনী ২১ প্যারা স্পেশ্যাল ফোর্স-এর রাশ ছিল তাঁর হাতে। সেই কারণে মণিপুরে জঙ্গি হামলার পর নাগা জঙ্গিদের পালটা মার দিতে রাওয়াতের উপরই ভরসা রাখেন তৎকালীন সেনাপ্রধান দলবীর সিং সুহাগ।দিল্লির সবুজ সংকেত মিলতেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের (Surgical Strike) প্রস্তুতি শুরু হয় রাওয়াতের। ৯ জুন, ২০১৫ সালে মণিপুরের উখরুল হয়ে সীমান্ত পেরিয়ে মায়ানমারের শত্রু এলাকায় প্রবেশ করে ৭০ জনের ভারতীয় কমান্ডো বাহিনী।

সেদিন ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে এনএসসিএন-এর শিবিরে হামলা শুরু করে কমান্ডো বাহিনী। শহিদ জওয়ানদের বদলা নিয়ে ওই হানায় খতম করা হয় কমপক্ষে ৩৮ জন জঙ্গিকে।খাপলাং গোষ্ঠী বুঝতে পারে এবার সীমান্ত পেরিয়ে হামলা চালাতে পিছপা হবে না ভারতীয় বাহিনী। সেই হামলার পরই শিরোনামে উঠে আসে সাহসিকতার জন্য একের পর এক পদকজয়ী বিপিন রাওয়াতের নাম। এহেন সাহসী যোদ্ধা ও সেনানায়কের অকাল প্রস্থানে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। আজ এই বীর যোদ্ধার অকাল প্রয়াণে সারাদেশ শোকোস্তব্ধ।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বীর যোদ্ধার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সারাদেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও গভীর শ্রদ্ধা এবং শোক প্রকাশ করা হয় দলীয় কার্যালয়ের সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজিত সরকার, কালিয়াগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক শচীন সিংহ রায়, প্রাক্তন বিধায়ক তপন দেব সিংহ, প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য বসন্ত রায়,  রাজিব সাহা ঈশ্বর রজক সহ তৃণমূলের নেতৃত্বরা। শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজিত সরকার জানান, বীর যোদ্ধা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াত এর মৃত্যু এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো দেশের। যা কখনোই পূরণ করা যাবে না।পাশাপাশি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এদিন শোক জ্ঞাপন করা হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *