October 28, 2024

কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক এর মাস্টার স্ট্রোক এ ধরাশায়ী হয়ে গেল বিজেপি

1 min read

কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক এর মাস্টার স্ট্রোক এ ধরাশায়ী হয়ে গেল বিজেপি

 

তনময় চক্রবর্তী  বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর আজ উত্তর দিনাজপুর জেলার বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বাউন্সার দিলেন কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায়। তিনি দু’দিন আগেই বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়ে কালিয়াগঞ্জে ফিরে এসে তৃণমূলের একটি সম্বর্ধনা সবাই মন্তব্য করেছিলেন কালিয়াগঞ্জে তিনি বিজেপির  ২  জনকে বাদ দিয়ে সবাইকে তৃণমূলে যোগদান করাবেন। আর সেই যোগদান সভা হবে ধাপে ধাপে তিনটি। এই তিনটি সভার মধ্য দিয়ে তৃণমূলের কাছে বিধায়ক  অঙ্গীকার করেছিলেন  কালিয়াগঞ্জ থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন বিজেপিকে। আর সেই কথামতো আজ  বিজেপিকে বাউন্সার দিলেন বিধায়ক প্রথম ধাপে এক ঝাঁক বিজেপি কর্মী ও নেতাদের তৃণমূলে যোগদান করিয়ে। 

এই যোগদান সভা চলাকালীন  ই এক ফাঁকে এই প্রতিবেদক এর কাছে  বিধায়ক মন্তব্য করেন আরো দুইটা ধাপ  বাকি রয়েছে। আপনারা দেখতে পাবেন ধীরে ধীরে  কালিয়াগঞ্জে বিজেপি কিভাবে  সাফ হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি কালিয়াগঞ্জে বিজেপি কার্যালয়ে বসে বিজেপি নেতা কমল চন্দ্র সরকার বলেছিলেন বিধায়ক ছাড়া আর কেউ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবে না। তাদের কাছে ফুল টিম রয়েছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মাঠে খেলার জন্য। কোন অবস্থাতেই তৃণমূল কংগ্রেস তাদের আর কোন উইকেট ফেলতে  পারবে না। কিন্তু আজ দেখা গেল  তৃণমূলের বিধায়ক  সৌমেন রায় কে  প্রথম ওভারেই  পর পর  বিজেপির   কয়েকটি  উইকেট ফেলে দিতে। ফলে কালিয়াগঞ্জ এ বিজেপি র নেতৃত্বের মধ্যে হতাশ ভাব দেখা যাচ্ছে।তাদের মধ্যে একটাই চিন্তা ক্রিজ  এ টিকে থাকতে পারব তো । নাকি অলআউট হয়ে যাবো তাড়াতাড়ি।

এই চিন্তাই আজ সারা দিন বিজেপির নেতৃত্বের কাছে তারা করে বেড়াচ্ছিল। বিজেপি নেতাদের বলতে শোনা যাচ্ছিল কালিয়াগঞ্জ  এ আবার বিজেপি আছে নাকি । এখানে তো  এখন চলে দুজন নেতার অঙ্গুলিহেলনে। তাই এখানে বিজেপি করে কোন লাভ নেই। তাতে তিনি পরখ করে দেখে নিয়েছেন যে ভারতীয় জনতা পার্টিতে গ্রাম মন্ডল, শহর মন্ডল,জেলা এবং রাজ্য । এই প্রত্যেকটি স্তরেই খুব নিম্নমানের নেতৃত্ব সেই চেয়ারগুলো দখল করে রেখেছে। যাদের কাজ টাকা তোলা, যাদের কাজ যুব সম্প্রদায়কে মিথ্যা কথা বলে তাদের পিছনে নিয়ে ঘোরা। সৌমেন বাবু বলেন এই অভিজ্ঞতা যেমন তার কালিয়াগঞ্জে হয়েছে তেমনি জেলায় হয়েছে এর পাশাপাশি রাজ্যে ও হয়েছে। তিনি বলেন তখন দেখলাম এদের সাথে বেশিদিন থাকা সম্ভব নয়। কারণ দুই হাত ভরে কালিয়াগঞ্জ এর মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছে কালিয়াগঞ্জ এর উন্নয়ন করবার জন্য। কিন্তু সেটা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া কখনোই সম্ভব নয়। তাই তিনি মনে করেন সময় নষ্ট না করে কালিয়াগঞ্জ এর মানুষেরা যারা দুই হাত তুলে আশীর্বাদ দিয়েছেন তাদের উন্নয়নের জন্য তিনি বর্তমান শাসকদল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন।তিনি এদিন বলেন বাইরে কিছু বিজেপির  কার্য কর্তারা গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন কর্মীর বাড়িতে ভয় দেখাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার গল্প করা হচ্ছে, কাউকে চাকরি টোপ দেওয়া হচ্ছে।

এইভাবে কালিয়াগঞ্জে বিভ্রান্ত করছে সাধারণ বিজেপির কর্মীদের বিজেপির কার্য কর্তারা। তিনি এদিন বলেন আজ  শুধুমাত্র প্রথম ধাপের যোগদান সভা হল। এরপর পরপর দুটি ধাপ বাকি রয়েছে। তিনি মনে করেন তিনটি ধাপে ই কালিয়াগঞ্জ এ বিজেপি পরিষ্কার হয়ে যাবে। বিধায়ক সৌমেন রায় বলেন তিনি যখন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দিলেন তখন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছে কোন শর্ত রাখেননি। শুধুমাত্র কালিয়াগঞ্জ এর জন্য কয়েকটি কথা বলেছিলাম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে এই পাঁচ বছরের মধ্যে তার এই সমস্ত কথাগুলো তিনি দেখে নিবেন। তিনি বলেন কালিয়াগঞ্জ শহরের ক্ষেত্রে যে সমস্ত কথাগুলো তিনি বলেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে তার মধ্যে অন্যতম হলো কালিয়াগঞ্জ শহরে বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ  পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ অনুমোদন করতে হবে, কালিয়াগঞ্জ শহরের জল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ  অনুমোদন করতে হবে। ২০১৬  সালে সরকার কর্তৃক অনুমোদন দেওয়া রবীন্দ্র ভবন নির্মাণ করতে হবে

।উত্তবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী মা বয়রা কালী মন্দিরের উন্নতি কল্পে অনুদান দিতে হবে।কালিয়াগঞ্জ এর আইটিআই কলেজ কে পলিটেকনিক কলেজে রূপান্তরিত করতে হবে।এর পাশাপাশি সেখানে যদি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো যায় তাহলে খুব ভালো হবে।কালিয়াগঞ্জ শহরে সুইমিং পুল ও জিমনেশিয়াম গড়তে হবে।এছাড়া কালিয়াগঞ্জ  শহরে যানজট এড়াতে এন বি এস টি সি একটা বাস স্ট্যান্ড নির্মাণের কথা বলেছি। নাট্য প্রেমী মানুষদের জন্য যে নজমূ নাট্য নিকেতন আছে সেটার আধুনিকীক রনের ব্যাবস্থা করতে হবে।খেলা ধুলার মান উন্নয়নের জন্য একটা ভালো স্টেডিয়ামের কথা বলেছি।কালিয়াগঞ্জ শহরে প্রচুর কাঁচা রাস্তা পাকা ও সংস্কারের কথা বলেছি।কালিয়াগঞ্জ শহরের দ্বিতীয় বিন্দাবন ধাম আছে তার উন্নতি কল্পে ব্যাবস্থা করার কথা বলেছি।শ্রীমতি  শ্মশানঘাটের আধুনিকীকরণের কথা বলেছি। সৌমেন বাবু আরো বলেন তৃণমূল সর্বভারতীয় নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আরো যেসব দাবিগুলো নিয়ে কথা হয়েছে সেগুলো হলো কালিয়াগঞ্জ শহরে একটি আধুনিক মানের সুপার মার্কেট কমপ্লেক্স করার কথা বলেছি।

শতাব্দী প্রাচীন শ্রী মতি নদীর সংস্কার এর কথা সহ কালিয়াগঞ্জ শহরের রেল লাইনের ধারে মুসুর পাড়ায় অবস্থিত সাধারন মানুষদের বাসস্থানের কথা বলেছি। কালিয়াগঞ্জ শহরে স্টেট জেনারেল হাসপাতালে র জন্য যে আড়াইশো বেডের অনুমোদন হয়েছে সেই কাজ যাতে দ্রুত শুরু হয় সেটাও আমার বলার রয়েছে। তিনি কালিয়াগঞ্জ হাসপাতাল প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান তাঁর বহুদিনের পুরনো দাদা নির্মল মাঝি কেও এবাপারে অবগত করেছি। কি করে কালিয়াগঞ্জ হাসপাতালটিকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল করা যায়। এছাড়া কালিয়াগঞ্জ হাসপাতলে একটি ব্লাড ব্যাংকের ব্যবস্থা হয় সে ব্যাপারেও কথা হয়েছে। কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায় বলেন শহরের পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ গ্রামের উন্নয়নের কথা তিনি বলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে। সৌমেন বাবু বলেন কালিয়াগঞ্জ এর গ্রামে দুটি ব্রিজ খুবই দরকার। তার মধ্যে একটি হলো বির্ঘই এ নদীর উপর ব্রিজ তেমন ই রাধিকাপুর এ চক দিলালপুর একটি ব্রিজ । এর পাশাপাশি তিনি বলেন এই চক দিলাল পুরে প্রতিবছরই বন্যা হয়। তাই বহু মানুষ প্রতিবছরই খুব অসহায় এর মধ্যে থাকে। তাই সেখানে যদি একটি বাঁধ নির্মান করা যায় সে ব্যাপারে কথা হয়েছে। তিনি বলেন এ রকম আরো অনেক ব্যাপারে কথা হয়েছে তৃণমূল যুবকদের আইকন তথা সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়  এর সঙ্গে।সৌমেন বাবু বলেন তার প্রত্যেকটি দাবি তিনি মেনে নিয়েছেন আরো বলেছেন তার কার্যকাল 5 বছরের মধ্যেই এগুলো ধাপে ধাপে হয়ে যাবে।এদিন বিধায়ক বলেন তৃণমূলের  সকলের সঙ্গে কাধে কাধ রেখে তিনি কাজ করে যাবেন আগামী দিনে।তিনি বলেন এখন জেলায় আটজন তৃণমূলের বিধায়ক আছেন তাকে নিয়ে ।তাই সকল বিধায়কদের কাছে তিনি আবেদন রাখেন যাতে এই উন্নয়ন মূলক কাজ করার ক্ষেত্রে সকলে যাতে পুর্ন সহযোগিতা করেন ।তার আশা তিনি মানুষের কাছে যে স্বপ্ন গুলো দেখিয়েছেন সেগুলো তিনি পুর্ন করবেন এটাই তার আশা।তিনি পরিশেষে বলেন বিধায়ক হিসাবে তিনি একশ শতাংশ তিনি আশাবাদী তার কাজ গুলো সম্পূর্ন করবেন ই।এদিন তিনি যখন সকলের মাঝে কথাগুলো বলছিলেন তখন একটা জিনিস লক্ষ্য করা গিয়েছিল সকলেই বিধায়কের কথাকে গুরুত্ব দিয়ে শোনেন এবং মাঝেমধ্যে হাততালি দিতে দেখা যায় সকলকে। তাই এটা বলা যেতেই পারে যে বিধায়ক সৌমেন রায় এর মাস্টার স্ট্রোকে অনেকটাই ধরাশায়ী হয়ে পড়ল কালিয়াগঞ্জ এ বিজেপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *