October 28, 2024

আজ কালিয়াগঞ্জে আসছেন বিধায়ক সৌমেন রায়। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে তৎপরতা বরণ করে নেওয়ার জন্য

1 min read

আজ কালিয়াগঞ্জে আসছেন বিধায়ক সৌমেন রায়। তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে তৎপরতা বরণ করে নেওয়ার জন্য

তন্ময় চক্রবর্তী। জীবনের একটা লড়াই মানুষকে যে কত দূরে নিয়ে যেতে পারে তার প্রকৃত উদাহরণ কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায়। ছেলেবেলা থেকেই তারা অদম্য জেদ এবং নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর মানসিকতা তাকে আজ একটা জায়গায় নিয়ে এসেছে। একসময় পানের দোকান চালিয়েছেন তিনি। সংসারের হাল ধরেছেন। আর এখন তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার একজন সদস্য। উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এর বিধায়ক সৌমেন রায় ।সৌমেন বাবু বলেন অনেক লড়াই সংগ্রাম করে এই জায়গায় পৌঁছাতে হয়েছে।  তার জন্মস্থান কোচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ এর ধলপল এলাকায়। তার বাবা ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। মা গৃহবধূ। দুজনই এখন রয়েছেন। পরিবারের রয়েছে এক দিদি ও বোন। ভাইদের মধ্যে সৌমেন বাবু একাই। স্থানীয় স্কুলের পড়াশোনা শেষ হলে সৌমেন বাবু আলিপুরদুয়ারে চলে আসেন। সেখানেই কলেজে ভর্তি হন। আলিপুরদুয়ার কলেজ থেকেই তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু। তখন ছিল বামফ্রন্টের আমল। আর সৌমেন বাবুর পরিবার কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাই রাজনীতিতে হাতে খড়ি টা হয়েছে বিরোধী শিবিরের রাজনীতি করে। কলেজ জীবন শেষ হলে জল্পাইগুড়ী  ল কলেজে ভর্তি হন সৌমেন বাবু। আইনজীবী হওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু সেই সময় তার জীবনে এক বড় ধাক্কা নেমে আসে। তার বাবার নামে মামলা দেয়া হয়।

সৌমেন বাবু আজও মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন তৎকালীন বাম আমলে তার বাবার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বশত মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছিল। আদালত তার বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করে। তাই আইন নিয়ে পড়া ছেড়ে সৌমেন কে তখন সংসারের হাল ধরতে হয়। বাড়ীতে ফিরে আসতে হয়। একটা সময় ঘরে যাতে দুটো পয়সা আসে তার জন্য  তাকে পানের দোকান করতে হয়েছিল। তবে শত সমস্যার মধ্যেও আর যাই হোক সৌমেন বাবু রাজনীতিটা শক্ত হাতে ধরে রেখেছিলেন।

 

২০০০ সালের আগে বা কিছুটা পরের ঘটনা। তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর মত বিরোধী নেতা নেত্রীরা রাজনৈতিক কর্মসূচিতে কোচবিহার এসেছিলেন। তাদের কানে সৌমেনের বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগের কথা পৌঁছায়। তারা সৌমেনের কষ্টকর জীবন সম্পর্কে জানতে পারেন। তারপর ২০০৩  সালে কলকাতা ডেকে পাঠানো হয় সৌমেন বাবুকে। সেখানে তৃণমূল ভবনে থেকে রাজনীতিতে আরো শক্ত পোক্ত হয়ে ওঠেন ধলপল এর এই ডানপিটে যুবক। এইভাবে রাজনীতিতে একটা বড় প্ল্যাটফর্ম পেয়ে যান তিনি। সৌমেন বাবুর কথায় ২০০৩  থেকে ২০১০  সাল পর্যন্ত তৃণমূল ভবনে ছিলাম। ওখান থেকেই দলের একাধিক কর্মসূচিতে সামিল হয়েছি। সিঙ্গুর আন্দোলনের গিয়েছি।

 

এইভাবে কলকাতার নেতাদের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু ২০১০  সালে মায়ের সেরিব্রাল অ্যাটাক হলে তাকে ফের বাড়িতে চলে আসতে হয়। সেই বাড়ী ফেরার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি তাকে বলেছিলেন,  সবার আগে মা। এরপর দল রাজ্যে ক্ষমতায় আসে ২০১১  সালে। কোচবিহার জেলা কমিটির সঙ্গে যুক্ত হন সৌমেন বাবু। তারপর রাজনীতির অংকে কিছুটা পিছিয়ে পড়েন। ব্যবসার সূত্রে ফালাকাটা যাওয়া আসা শুরু হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে তৈরি করেন। আর এবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি পদ্মফুল শিবিরের নাম লেখান।

যোগ দেয়ার পরপরই কালিয়াগঞ্জ কেন্দ্র থেকে তাকে টিকিট দেয়  বিজেপি। জিতে বিধায়ক হন তিনি। তারপর আবার গত ৪  সেপ্টেম্বর আবার ঘাসফুল শিবিরে ফিরে আসেন। সৌমেন বাবু বলেন অনেক লড়াই সংগ্রাম করে এই জায়গায় পৌঁছাতে হয়েছে। গ্রামের মানুষ বাবা-মা সকলেই খুশি আমার

এই সাফল্যে।আজ তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর প্রথম কালিয়াগঞ্জে আসছেন বিধায়ক সৌমেন রায়। তাই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে তৎপরতা এখন তুঙ্গে তাদের এই বিধায়ক কে বরণ করে নেওয়ার জন্য। আগামী দিনে সকলের প্রত্যাশা সৌমেন বাবুর হাত ধরে কালিয়াগঞ্জ একটা নতুন জায়গায় পৌঁছাবে মা-মাটি-মানুষের নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ নিয়ে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *