October 27, 2024

উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এ ব্যাপক পদ্ম ফুলের চাষ শুরু হয়েছে। খুশি চাষিরা।

1 min read

উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জ এ ব্যাপক পদ্ম ফুলের চাষ শুরু হয়েছে। খুশি চাষিরা।

তনময় চক্রবর্তী। কখনো রোদ, কখনো বৃষ্টি আবার কখনো বা মেঘলা আকাশ। মেঘ-রৌদ্রের লুকোচুরির মাঝে প্রকৃতিতে যেনো এক নৈসর্গিক মুগ্ধতা ছড়িয়ে আছে। আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর মাঠে মাঠে কাশ ফুলের দোলা ,বাতাসের সাথে বয়ে আসা শিউলি ফুলের গন্ধ সকলেই জানিয়ে দিয়ে যায় মা আসতে বাকি আর কয়টা দিন। তাই মা দুর্গাকে বরণের জন্য সকলেই ব্যস্ত।, তা সে পুজো মন্ডপ তৈরির কারিগর হোক বা প্রতিমা তৈরির শিল্পীরা সকলেই মায়ের প্রতিমা তৈরি কিংবা পূজোর আলোকসজ্জা সব কিছুতেই নিজেদের অভিনবত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করে চলছেন। এই পর্বে অবশ্য বাদ নেই চাষি ভাইরাও। মায়ের পূজার্চনার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ১০৮ টি পদ্মফুল । জানা যায় পদ্মের অভাবে নাকি রামচন্দ্রের অকালবোধনের পুজোও একসময় অসমাপ্ত হতে বসেছিল, বাধ্য হয়েই নিজের নীল কমলাক্ষী দিতে চেয়েছিলেন তিনি।সেই থেকে মহাষ্টমীর সন্ধিপুজোয় আর কিছু থাক বা না থাক ১০৮টি পদ্ম চাই-ই চাই। আর মহাপুজোর মহালগ্নে সারা রাজ্যে আনুমানিক ১৬ লক্ষ পদ্ম লাগে আর তার এক শতাংশ য়াংশ পদ্মই জোগান দেয় উত্তর দিনাজপুর।

। তাই কিছুটা লোকচক্ষুর আড়ালে থেকেও চূড়ান্ত ব্যস্ততা দেখা গেল চাষী ভাইদের মধ্যে। ভাদ্র মাসের প্যাচপ্যাচে গরম তার ওপর বৃষ্টির লুকোচুড়ি খেলার মাঝেও পদ্ম চাষীরা নাওয়া খাওয়া ভুলে অবিরাম, অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন ।আশ্বিনের পুজোর জন্য চৈত্র-বৈশাখ মাস থেকেই পদ্মের বীজ পোঁতা শুরু হয়ে যায় । আর শ্রাবণ-ভাদ্র মাস থেকেই তাতে ফুল ফুটতে শুরু করে। হাটু বা একবুক সমান জলে নেমে আগাছা বাছাই কত অক্লান্ত পরিশ্রম ই না করতে হয় পদ্ম চাষীদের।

সেই জন্য হয়তো কবি লিখেছেন-“কাটা হেরি কান্ত কেন কমল তুলিতে,দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহিতে?” দুর্গা পুজার সময় পশ্চিমবঙ্গের সাথে সাথে উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও পদ্মের আকাল দেখা দেয় । তাই জেলা সহ কলকাতা ও বিহারের পুজা মণ্ডপ গুলিতে পদ্মের জোগান দিতে পদ্ম ফুলের চাষ শুরু করেছেন উত্তর দিনাজপুর জেলার ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন কালিয়াগঞ্জ ব্লকের উত্তর কাছনা গ্রামে।এখানে দীপঙ্কর রায়, রাধা মোহন রায় এরা এখন পদ্ম চাষ করছেন |

সামনে দুর্গাপূজা আর তাই সেই দুর্গাপুজো কে সামনে রেখে তারা এখন ভীষণ ব্যস্ত তাদের পুকুরে এই পদ্ম চাষ করতে। সেখানে গিয়ে দেখা গেলো তারা ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে পুকুরে নেমে পদ্মফুলের গাছগুলিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে। প্রায় সাড়ে তিন বিঘার উপর এই পুকুরে প্রচুর পরিমাণে এখন সাদা পদ্ম ফুলের চাষ করছেন তারা। । এই সময় পদ্মের দাম পদ্ম পিছু ৩০ টাকা রয়েছে। ইতিমধ্যে তারা প্রতিদিনই কালিয়াগঞ্জ আশেপাশের বাজারগুলিতে পদ্ম ফুল নিয়ে গিয়ে বিক্রিয় করতে শুরু করে দিয়েছেন।

 

দাম ভালো পাচ্ছেন তারা। তারা আশা করছেন এবার পুজোয় তারা ভালোই দাম পাবেন পদ্মফুলের। এদিকে এলাকার স্থানীয় মানুষ অবেন রায় অরুণ চন্দ্র রায় এরা সবাই তাদের গ্রামে রাধা মোহন রায়ের পুকুরে পদ্ম চাষ দেখে খুবই উৎসাহিত হয়ে বলেন, এখানে যত পদ্ম ফুল ফুটছে তাতে আগামী দিনে এখান থেকেই বহু জায়গায় পাড়ি দিবে পদ্ম ফুল।হাসি মুখে বহু বাঁধা পেরিয়ে প্রতি বছর চাষ করে চলেছেন মায়ের পুজোর প্রধান ফুল। আর কয়েকদিন পরেই ফুলগুলিকে পুকুর থেকে তুলে, পৌছে দেওয়া হবে মহাজনদের।কারণ ক্ষুদ্র চাষিদের কাছে পদ্ম সংরক্ষণ করার কোনও ব্যবস্থা নেই বলে অনেক চাষি মহাজনকে পদ্মগুলি বিক্রি করে দেন ।চাষিদের উৎপন্ন পদ্ম দিয়েই পূজিত হন দেবী মৃন্ময়ী । আর আপাময় বাঙ্গালী মেতে উঠবেন বছরের সেরা উত্সবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *